মুজফ্ফরাবাদের সভায় ইমরান। ছবি: এএফপি।
ভারত-পাক যুদ্ধ হলে ভুগতে হবে গোটা দুনিয়াকে, জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাতেও কাজ হয়নি। মোদী সরকারকে বিঁধতে তাই এ বার ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হাতিয়ার করলেন তিনি। ইমরানের দাবি, ‘‘উপত্যকায় ভারতের কর্মসূচি সে দেশের ২০ কোটি মুসলিমকে মৌলবাদের দিকে ঠেলে দেবে।’’
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করা এবং উপত্যকাকে ভেঙে দু’ টুকরো করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় শুক্রবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদে বিশেষ ‘সংহতি’ সভায় যোগ দিয়েছিলেন ইমরান। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীরিদের উপর নিপীড়ন চালিয়ে ভারতের ২০ কোটি মুসলিমকে মোদী বুঝিয়ে দিচ্ছেন, সে দেশে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়েই থাকতে হবে তাঁদের। মানবাধিকার বলে কিছু থাকবে না ওঁদের। পশুর মতো আচরণ করা হবে ওঁদের সঙ্গে। মাংস খাওয়ার জন্য প্রকাশ্যে দিনের আলোয় পিটিয়ে মেরে ফেলা হবে।’’
ইমরানের অভিযোগ, ‘‘সেনা নামিয়ে কাশ্মীরের মানুষের উপর জোরজবরদস্তি করছেন মোদী। ছররা বন্দুকের আঘাতে শিশুদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি ঢুকে মহিলাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। মোদী সরকারের এই অপকর্মের কথা মুসলিম দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য তাদের অনেকেই এ নিয়ে মুখ খুলতে পারছে না বটে, কিন্তু কাশ্মীরের উপর নজর রয়েছে সকলেরই। ধর্মীয় মেরুকরণ মানুষকে মৌলবাদের দিকে ঠেলে দেয়। মানুষকে প্রতিহিংসার পথে ঠেলে দিচ্ছেন মোদী। আমাদের ধর্ম শান্তির পক্ষে, তবে অবিচার দেখেও গোটা দুনিয়া যখন চুপ করে থাকে, তখনই প্রতিহিংসার পথে এগোয় এক জন মুসলিম।’’
Prime Minister of Pakistan @ImranKhanPTI Speech at Kashmir Solidarity Jalsa, Muzaffarabad Azad Kashmir (13.09.19) 15/15#KashmirSolidarityJalsa pic.twitter.com/xnfbs4IwPd
— PTI Central Punjab (@PTICPOfficial) September 13, 2019
আরও পড়ুন: ‘আমাদের কথা কেউ শুনছে না, ভারতের উপরই আস্থা সকলের’, কাশ্মীর নিয়ে আক্ষেপ পাক মন্ত্রীর
গত ফেব্রুয়ারি মাসের পুলওয়ামা হামলা এবং তার পরবর্তী বালাকোট অধ্যায়ও টেনে আনেন ইমরান। তাঁর কথায়: ‘‘পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ের কাছে অল্পবয়সী একটি ছেলে নিজেকে উড়িয়ে দিতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানের ঘাড়ে তার দায় চাপিয়ে দিলেও, সেনাবাহিনী ওই ছেলেটির সঙ্গে কী আচরণ করেছিল তা কিন্তু কাউকে জানতে দেয়নি ভারত। দুর্দশার জীবনের চেয়ে মৃত্যুকেই শ্রেয় মনে করেছিল ওই ছেলেটি। এর পর ভারত যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল। তার পর কী হয়েছিল, সকলেই জানেন। গুলি করে ওদের বিমান নামানোর জন্য পাক বাহিনীর কাছে কৃতজ্ঞ থাকব আমরা। তবে আমরা কিন্তু শান্তির প্রস্তাবই দিয়েছিলাম। ফিরিয়ে দিয়েছিলাম ওদের পাইলটকে। কোথায় শান্তিপূর্ণ আলোচনায় অংশ নেবে, তা নয় বলে বেড়ালো, আমরা নাকি ভয় পেয়ে ওই পাইলটকে ছেড়ে দিয়েছি!’’
আরও পড়ুন: কাশ্মীর তো ‘ট্রেলার’ মাত্র, সিনেমা এখনও বাকি, ৩৭০ রদ নিয়ে বললেন মোদী
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে ধরবেন ইমরান। ওই একই দিনে সেখানে বক্তৃতা করবেন নরেন্দ্র মোদীও। আন্তর্জাতিক মহল কী করবে জানা নেই, তবে তিনি শেষ দেখে ছাড়বেন বলে জানান ইমরান। নিজেকে কাশ্মীরের দূত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy