নির্বাচন উপলক্ষ্যে বেলজিয়ামে আইনজীবীদের প্রতিবাদ। ছবি: রয়টার্স।
‘তোমার হল শুরু, আমার হল সারা...।’ কয়েক দিন পরে বেলজিয়ামের উদ্দেশে এটাই হতে পারে ভারতের ‘নির্বাচনী স্লোগান’। কারণ ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ২৩শে মে এবং বেলজিয়ামে ফেডারেল বা কেন্দ্রীয় নির্বাচন হবে ২৬শে মে। এ ছাড়া, বেলজিয়ামের ইউরোপীয় সংসদের নির্বাচনও ওই একই দিনে। গত ডিসেম্বরে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে বেলজিয়ামের মানুষ এখন এক জন প্রধানমন্ত্রীর আশায় এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
ভারতে নির্বাচনে অনেক কেন্দ্রেই ভোটদাতার সংখ্যা বেশ কম থাকে। বেলজিয়ামে কিন্তু আঠারো বছরের বেশি বয়সি নাগরিকের ভোট দেওয়া আবশ্যিক। কোনও নাগরিক দেশের বাইরে থাকলে অনলাইনে ভোট দিতে পারেন, অথবা অন্য কাউকে লিখিত ভাবে দায়িত্ব দিয়ে যেতে পারেন নিজের ভোটটা দিতে। না হলেই ভোটারের পরিচয়পত্র ‘ট্র্যাক’ করে বাড়িতে জরিমানার চিঠি পাঠানো হয়।
ভোটপর্বে নিরাপত্তাবাহিনী ও পুলিশের ব্যবস্থা বেলজিয়ামেও আছে, তবে ভোটের দিন কোনও গন্ডগোল হয় না। অনেক সময়ে সরকারি কর্মীদের সাহায্য করতে প্রার্থীরা নিজেরাই ভোটের কাজকর্মে হাত লাগান । গোপন ব্যালটে ভোট দেওয়া এখানেও হয়। আপনি ভোট দিতে গেলে অবশ্য আঙুলে কালির বদলে একটি ম্যাগনেটিক কার্ড দেওয়া হবে, যেটা অ্যাক্টিভেট করে ভোটদান করলে প্রিসাইডিং অফিসার নিশ্চিত হবেন যে ভোটদান হয়েছে।
বেলজিয়ামের সংসদ বা কেন্দ্রীয় সরকারের মাথার উপরে রয়েছেন রাজা। বর্তমান রাজার নাম ফিলিপ। প্রধানমন্ত্রী পদে কে জয়ী হলেন, ঘোষণা করবেন তিনিই। প্রধানমন্ত্রীকে শপথবাক্যও তিনি পাঠ করাবেন। এ ছাড়া, জনা পনেরো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকেন। নির্বাচন কেন্দ্র ব্রাসেলস-সহ মোট এগারোটি। একটি কেন্দ্রে একই দলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন পেতে পারেন। ভোটাররা চাইলে এক জন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, অথবা একাধিক প্রার্থী মিলিয়ে একটি দলকে ভোট দিতে পারেন, অথবা ‘নোটা’-ও প্রয়োগ করতে পারেন।
এ ছাড়া আঞ্চলিক সংসদের নির্বাচনও রয়েছে। এখানে আসার আগে আমি জানতামই না যে এ দেশে মোট ছ’টি সংসদ আছে— ফেডারেল বা কেন্দ্রীয় সংসদ, ফ্লেমিশ সংসদ (ডাচ-ভাষী এলাকার জন্য), ফ্রেঞ্চ সংসদ (ফরাসি-ভাষী এলাকার জন্য), জার্মান সংসদ (জার্মান-ভাষী এলাকার জন্য), ওয়ালোন সংসদ (ওয়ালোনিয়া এলাকার জন্য) এবং ব্রাসেলস ক্যাপিটাল রিজিয়ন (রাজধানী)-র জন্য আলাদা সংসদ। তা ছাড়া, পৌর নির্বাচন এবং জেলা নির্বাচনের আলাদা কিছু স্তর আছে।
আপাতত অপেক্ষা ২৩ আর ২৬ মে-র জন্য। দুই দেশের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাবে ওই দু’দিনেই।
লেখক ব্লগার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy