রং-তুলিতে শহিদ-স্মরণের প্রস্তুতি। ছবি: সংগৃহীত।
১৯৫২ থেকে ২০১৯। আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস পৌঁছল ৬৭ তম বছরে। আবেগ ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব— দুই-ই এই দিনের প্রাণভোমরা। ভাষা আন্দোলনের শহিদদের অবদান স্মরণে রেখে ২০১০ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে স্বীকৃতি দেয় রাষ্ট্রপুঞ্জ। এ দিনের গুরুত্ব তার পর থেকেই বিশ্বজনীন হয়ে ওঠে।
ভাষাশহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এ বছরও বাংলাদেশ সরকারের রয়েছে বিশেষ কিছু পরিকল্পনা ও কর্মসূচি। প্রস্তুতির শেষ লগ্নে তাই ব্যস্ততাও তুঙ্গে।
বিশেষ এই দিনে বাংলাদেশকে মুড়ে দেওয়া হবে চার স্তরের কঠোর নিরাপত্তাবলয়ে। রাজধানী ঢাকার প্রতি আলাদা করে গুরুত্ব আরোপ করা হবে। শহিদ মিনারে যাওয়ার প্রতিটি প্রবেশ ফটকেই থাকবে আর্চওয়ে। হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরও বাদ পড়বে না এই নিরাপত্তার আয়োজনে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তান শুধু ভারত নয় বাংলাদেশের জন্যও হুমকির কারণ, বলছেন বিশিষ্টজনেরা
মহিলাদের জন্য থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক মহিলা-পুলিশ। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তার জন্য বাড়ানো হয়েছে সিসি ক্যামেরার সংখ্যাও। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে প্রথম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর ভোর থেকেই তা জনসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য খুলে দেওয়া হবে।
আল্পনা একুশের আয়োজনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে জঙ্গি আতঙ্ক থাকলেও এ বারে সেই শঙ্কার পারদ অনেকটাই নিম্নমুখী। সে বিষয়ে সহমত ঢাকার পুলিশ কর্মকর্তারাও। কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে গিয়ে এ বারের একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহিদ মিনার চত্বরে হামলা হওয়ার কোনও রকম আগাম হুমকি নেই বলে জানান ঢাকার পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিঞা। একুশে ফেব্রুয়ারি ওই এলাকা-সহ ঢাকা মহানগরীর অন্যান্য শহিদ মিনারেও সুদৃঢ়, নিরবচ্ছিন্ন ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবত থাকবে বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি।
আরও পড়ুন: জিইয়ে রাখতে তিস্তা প্রসঙ্গ তুলল ঢাকা
এ দিন ঢাকা মহানগরীর নিরাপত্তায় মোট ১৬ হাজার পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারেই নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবেন ছ’হাজার পুলিশ। আকস্মিক কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকবে ডিবি, সোয়াট, বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ক্রাইম সিন ভ্যান। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বহাল থাকবে পুলিশকুকুরও।
নিরাপত্তার মোড়কের মধ্যেই দেশ জুড়ে চলছে ‘অমর একুশ’ উৎসবের আয়োজনও। ঐতিহ্য অনুসারে পুরো শহিদ মিনার এলাকার সব পথ ভরে উঠেছে আল্পনার বর্ণিল রঙে। দেশের তরুণশক্তি প্রতি বছরই রাত-দিন খেটে তাঁদের তুলির আঁচড়ে ভাষা আন্দোলনের দিনকে দেন আলাদা মাত্রা। এ বারও তার ব্যতিক্রম নয়। গত কয়েক দিন ধরেই রং-তুলিতে মগ্ন তরুণ-তরুণীরা রাঙিয়ে চলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও তার আশপাশের এলাকা। গত কয়েক দশকে এই আল্পনা একুশের আয়োজনের সঙ্গে যেন ওতপ্রোত ভাবে মিশে গিয়েছে।
(সারাবিশ্বের সেরা সব খবরবাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy