Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কুলভূষণের সাক্ষাৎ নিয়েও দ্বন্দ্বে দুই দেশ

ভারত গত এক মাস ধরে বার বার বলে এসেছে এই সাক্ষাৎকার যেন কোনও চাপের পরিবেশে না হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৩৩
Share: Save:

কুলভূষণ যাদবকে ফেরানো অথৈ জলে। তারই মধ্যে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের নির্দেশ মেনে তাঁর সঙ্গে ভারতীয় কূটনীতিকদের দেখা করতে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও রীতিমতো দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হল দিল্লি ও ইসলামাবাদ। আজ কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করে দু’ঘণ্টা কথা বলেছেন পাকিস্তানে ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার গৌরব অহলুওয়ালিয়া। কিন্তু এই সাক্ষাৎকারে যে ভারত আদৌ সন্তুষ্ট নয়, তা বিকেলে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতেই স্পষ্ট। জানানো হয়েছে, ‘‘কুলভূষণ যাদব যে প্রবল চাপে রয়েছেন, এ ব্যাপারে আমাদের কোনও সন্দেহ নেই। পাকিস্তানের মনগড়া দাবিগুলিকে তুলে ধরার জন্য তাঁকে শেখানো বুলি আওড়াতে হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে ভারতীয় অফিসারের কী কথা হয়েছে, তার বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়া গেলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করব। আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের নির্দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের আচরণ কোথায় সঙ্গতিহীন, তা-ও নির্ণয় করা হবে।’’

ভারত গত এক মাস ধরে বার বার বলে এসেছে এই সাক্ষাৎকার যেন কোনও চাপের পরিবেশে না হয়। কোনও পাক অফিসার যাতে সে সময় না থাকেন, সেই দাবিও করেছিল ভারত। কিন্তু সাক্ষাতের সময় সেখানে আগাগোড়া হাজির ছিলেন এক পাকিস্তানি অফিসার। শুধু তাই না, ভারতের এই ‘চাপ’ এবং ‘শিখিয়ে দেওয়া বুলি আওড়ানোর’ তত্ত্ব নাকচ করে দিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তান বিদেশ মন্ত্রক। বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের নির্দেশ এবং মানদণ্ড মেনে এই সাক্ষাৎকারটি হয়েছে। পাকিস্তান আজ অবাধে কথা বলতে দিয়েছে ভারতীয় অফিসারকে।’

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে কুলভূষণের বিষয়টিকে এতটা উচ্চগ্রামে নিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কতটা সুবিধা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। মোদী সরকারের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ লোকসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, কুলভূষণ ভারতের যোগ্য সন্তান এবং তাঁকে যে ভাবেই হোক মুক্ত করা হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দু’দেশই একে অন্যের তথ্য জানার জন্য গুপ্তচর নিয়োগ করে থাকে। কিন্তু তাদের প্রকাশ্যে এনে কূটনৈতিক লড়াইয়ে শামিল করে না। এ ক্ষেত্রে শুধু শামিল করাই নয়, দু’দেশের লড়াইয়ের প্রধান অস্ত্র করে তোলা হয়েছে কুলভূষণকে। জাতীয় আবেগের সঙ্গেও জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিষয়টিকে।

পাশাপাশি বিদেশ মন্ত্রক নিজেরাও মনে করে, জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও কুলভূষণকে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে এখনও বহু কাঠখড় পোড়াতে হবে। কারণ বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, ভারতের আর্জির সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি আন্তর্জাতিক আদালত খারিজ করে দিয়েছে। তাঁর প্রাণদণ্ডের রায়ও খারিজ করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kulbhushan Jadhav India Pakistan Consular access
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE