Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মার্কিন ড্রোন নামাল ইরান

ইরানের সেনার দাবি ঠিক কি না, তা নিয়ে প্রাথমিক সংশয় থাকলেও পেন্টাগন কিছু ক্ষণের মধ্যে জানিয়ে দেয় মার্কিন ড্রোন নামিয়েছে ইরান।

ছবি রয়টার্স।

ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
তেহরান শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৯ ০১:৫৫
Share: Save:

দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ এমনিতেই ঊর্ধ্বমুখী। তার মধ্যে আজ ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে আমেরিকার ‘গুপ্তচর’ ড্রোন নামিয়েছে তারা। যে খবর প্রকাশ্যে আসতেই কূটনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা— তেহরান ও ওয়াশিংটন এ বার হয়তো আরও বড় সামরিক সংঘাতের পথে এগোতে চলেছে। ইরানের এই পদক্ষেপকে ‘বড় ভুল’ বলে টুইট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘‘আপনাদের বলতে পারি এই দেশ এটা কিছুতেই মেনে নেবে না।’’ পাশাপাশি ট্রাম্পের উপলব্ধি, ‘‘হয়তো ভুল করে কেউ কাজটা করে ফেলেছেন, এটা করা উচিত হয়নি।’’

ইরানের সেনার দাবি ঠিক কি না, তা নিয়ে প্রাথমিক সংশয় থাকলেও পেন্টাগন কিছু ক্ষণের মধ্যে জানিয়ে দেয় মার্কিন ড্রোন নামিয়েছে ইরান। গত সোমবারই ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তিনি পশ্চিম এশিয়ায় আরও এক হাজার সেনা পাঠাবেন। তার আগে গত সপ্তাহে ওমান উপসাগরে দু’টি তেলের ট্যাঙ্কে হামলার জন্যও ইরানকে দুষেছেন মার্কিন অফিসারেরা।

বৃহস্পতিবার নামহীন ওই ড্রোনটি নামাতে ইরান ভূমি থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। ইরানের আকাশসীমায় সেটি ঢুকে পড়েছিল বলে দাবি করেছে তারা। যদিও মার্কিন অফিসারেরা জানিয়েছেন, এমকিউ-৪সি ট্রিটন ড্রোনটি হরমুজ় প্রণালীতে আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় উড়ছিল। এ ক্ষেত্রে কোন দেশের দাবি যথাযথ, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যায়নি।

আইআরজিসি-র ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘‘আমেরিকায় তৈরি ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক’ নজরদারি ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে দেশের দক্ষিণে উপকূলীয় প্রদেশ হরমুজ়গানে। পশ্চিম হরমুজ় প্রণালী সংলগ্ন ওই এলাকায় ফেরার সময় নজরদারি ও তথ্যসংগ্রহ করার জন্যই ইরানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে ড্রোনটি। তাই সেটিকে নামানো হয়েছে। ড্রোনটিকে যাতে আমেরিকার বলে চেনা না যায়, সে ব্যবস্থাও করা ছিল। কিন্তু এটা একেবারেই উড়ান-নীতি বিরুদ্ধ কাজ।’’ যদিও মার্কিন অফিসারেরা বলছেন, ওই ড্রোনটি ‘গ্লোবাল হক’ নয়।

ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আব্বাস মুসাভি বলেছেন, ‘‘এ ধরনের প্ররোচনামূলক আক্রমণের কড়া নিন্দা করছি। ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ফল ভুগতে হবে।’’ আমেরিকার সেন্ট্রাল কমান্ড মুখপাত্র নেভি ক্যাপ্টেন বিল আরবান বলেছেন, ‘‘ইরানের আকাশসীমায় কোনও ড্রোন ঢোকেনি।’’

ইরান-আমেরিকা দ্বৈরথে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তেল বাণিজ্যেও। পারস্য উপসাগরে তেলের ট্যাঙ্কে পর পর হামলা এবং ইরান-আমেরিকা দ্বন্দ্ব মিলিয়ে এশিয়ার শক্তিসংক্রান্ত মূল বাণিজ্যপথগুলির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হরমুজ় প্রণালী দিয়ে পৃথিবীর এক পঞ্চমাংশ তেল আমদানি-রফতানি চলে। ওই অংশে দু’হাজার সংস্থার জাহাজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

তেহরান-ওয়াশিংটনের উত্তাপ কমাতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ এ সপ্তাহেই তাঁর শীর্ষ কূটনৈতিক উপদেষ্টা ইমানুয়েল বনকে ইরানে পাঠাচ্ছেন। ইউরোপীয় দেশগুলিও চাইছে আমেরিকা-ইরানের দ্বন্দ্ব দ্রুত নিরসন হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

RQ-4 Global Hawk USA Iran Donald Trump
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE