রাজ্যাভিষেকের পর ব্যাঙ্ককের গ্র্যান্ড প্যালেস চত্বরে তাইল্যান্ডের নতুন রাজা মহা ভাজিরালঙ্গকর্ণ। শনিবার। ছবি: এএফপি
বাবার মৃত্যুর পর থেকেই গত দু’বছর ধরে রাজার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে মহা ভাজিরালঙ্গকর্ণের রাজ্যাভিষেক হল শনিবার। সেই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জমকালো অনুষ্ঠানে মাতলেন তাইল্যান্ডবাসী।
সকাল ১০টা ৯ মিনিটের শুভ সময়ে শুরু হয় তিন দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানের। চকরি রাজবংশের দশম রাজা হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করলেন রাজা ভাজিরালঙ্গকর্ণ। ১৭৮২ সাল থেকে এই তাইল্যান্ডে ক্ষমতাসীন চকরি রাজবংশ।
হিন্দু ও বৌদ্ধ রীতি মেনে এই অনুষ্ঠান হয়। শনিবারের উৎসবে ঐতিহ্যবাহী সাদা গাউন পরেছিলেন ভাজিরালঙ্গকর্ণ। গ্র্যান্ড প্যালেস কমপ্লেক্সের এই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা পবিত্র জল দিয়ে মুখ মুছে দেওয়া হয় নতুন রাজার। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা মন্ত্র পাঠ করেন। বিশেষ মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রথা অনুসারে বাঁশিও বাজানো হয়। এ দিনের অনুষ্ঠানে হিন্দু ব্রাহ্মণরাও উপস্থিত ছিলেন।
অভিষেক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ দিন রাজা ভাজিরালঙ্গকর্ণ তাইল্যান্ডের মানুষের বিশ্বাস অনুযায়ী সাধারণ মানুষ থেকে ঐশ্বরিক পর্যায়ে উত্তীর্ণ হলেন। তাঁকে দশম রাম হিসেবেও অভিহিত করা হল। সম্প্রতি রাজা ভাজিরালঙ্গকর্ণ বিয়ে করেছেন তাঁর দেহরক্ষী সুথিদাকে। সেই সুবাদে এখন থেকে রানির মর্যাদায় সম্মানিত হলেন তিনিও।
তিন দিনের উৎসবে এর পরে ছাতার নীচে উপবিষ্ট হবেন নতুন রাজা। সেখানেই বিজয়মুকুট পরানো হবে তাঁকে। ৭.৩ কেজি সোনার তৈরি মুকুটটির উপরের অংশটি ভারত থেকে আনা হীরাখচিত।
অনেক দিন পর তাইল্যান্ডের সিংহভাগ মানুষ রাজ্যাভিষেক দেখতে চলেছেন। শেষ বার ১৯৫০ সালে ভাজিরালঙ্গকর্ণের বাবা ভূমিবল আদুলাদেজের অভিষেক হয়েছিল। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ভূমিবলকে দেশের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হত। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেও
দেশবাসীর কাছে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। সেই তুলনায় তাঁর পুত্র তথা বর্তমান রাজা ভাজিরালঙ্গকর্ণ তত পরিচিত নন দেশবাসীর কাছে। অধিকাংশ সময়েই দেশের বাইরেই কাটিয়েছেন। তবু এত দিন পরে অভিষেক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে উদ্বেল আট থেকে আশি। বছর ষোলোর এক পড়ুয়া জানিয়েছে, এ ধরনের উৎসবে যুক্ত থাকতে পেরে রীতিমতো উত্তেজিত। সাধারণ মানুষের আবেগ ফ্রেমবন্দি করতে তৎপর সে।
রাজ্যাভিষেকের আগে শুক্রবারই ভাজিরালঙ্গকর্ণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা। রাজপরিবারের সেই বিরল মুহূর্তও টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভাজিরালঙ্গকর্ণের তৃতীয় পক্ষের সন্তান যুবরাজ দীপংকর্ণ ও বোন উবোলরত্নাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy