Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Narendra Modi

সাংহাই সম্মেলনেও সন্ত্রাস নিয়ে ফের পাকিস্তানকে তোপ মোদীর

মোদী জানান, সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ে তোলাই লক্ষ্য ভারতের। তার জন্য মানবতাবাদী সব শক্তিকে একজোট হতে হবে।

বিশকেকে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্রের টুইটার হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত।

বিশকেকে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্রের টুইটার হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
বিশকেক শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৯ ১৫:৪৪
Share: Save:

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ফের পাকিস্তানকে কড়া বার্তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। শুক্রবার কিরঘিজস্তানের বিশকেকে আয়োজিত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে বক্তৃতা করেন তিনি। সেখানেই নাম না করে পাকিস্তানকে তুলোধনা করেন তিনি। মোদী বলেন, সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক, আশ্রয়দাতা এবংআর্থিক মদত জোগানো কাউকে রেয়াত করা যাবে না। বরং তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার থেকে দু’দিন ব্যাপী এসসিও সম্মেলন শুরু হয়েছে। গতকালই সেখানে পৌঁছে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এ দিন ওই সম্মেলনে হাজির ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও। তবে এক টেবিলে বসলেও, দুই রাষ্ট্রনেতাকে একবারও কুশল বিনিময় করতে দেখা যায়নি বলে জানা গিয়েছে। সেখানেই বক্তৃতা করার সময় সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ইসলামাবাদকে তীব্র আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদী।

মোদী জানান, সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়ে তোলাই লক্ষ্য ভারতের। তার জন্য মানবতাবাদী সব শক্তিকে একজোট হতে হবে। এসসিও-র আঞ্চলিক সন্ত্রাস দমন সংগঠন (র‌্যাটস)-র আওতায় একজোট হয়ে লড়তে হবে সদস্য দেশগুলিকে। সংকীর্ণ স্বার্থবোধ ছেড়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়তে হবে সকলকে। সেই সঙ্গে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এসসিও-র অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিকে আন্তর্জাতিক স্তরের সম্মেলনের আয়োজন করতেও আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন: বিশ্বনেতাদের সভায় অসৌজন্য, ফের সমালোচনার মুখে ইমরান

গত ২১ এপ্রিল ইস্টারের সকালে শ্রীলঙ্কায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। তাতে মহিলা, শিশু-সহ প্রায় ৩০০ জন প্রাণ হারান। সেই ঘটনার পর গত রবিবার শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মোদী বলেন, ‘‘রবিবার শ্রীলঙ্কার সেন্ট অ্যান্টনি গির্জায় গিয়েছিলাম। সেখানে সন্ত্রাসের ভয়াবহতা চোখের সামনে দেখেছি, যা কিনা নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।’’ সন্ত্রাস নির্মূল করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারত আফগানিস্তানের পাশে রয়েছে বলেও এ দিন বার্তা দেন নরেন্দ্র মোদী।

এর আগে, বৃহস্পতিবার সম্মেলন চলাকালীন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ইসলামাবাদ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না করলে, দুই দেশের মধ্যে নতুন করে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্ভব নয়।চিনফিংয়ের সঙ্গে মোদীর কথোপকথন উদ্ধৃত করে পরে বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল বলেন, ‘‘সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে পাকিস্তানকে। এই মুহূর্তে তেমন কিছুই চোখে পড়ছে না। আমরা চাই, ইসলামাবাদ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করুক।’’

সন্ত্রাস এবং আলোচনা একসঙ্গে সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল ভারত। তার জেরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক একাধিক বার বাতিল হয়েছে। তবে গত বছর ইমরান খান পাকিস্তানের মসনদে বসার পর পরিস্থিতি বদলাতে পারে বলে আশা করেছিলেন দুই দেশের কূটনীতিবিদরা। কিন্তু আদতে তা হয়নি। বরং এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয় লক্ষ্য করে জঙ্গি হামলার পর সংঘাতের পরিস্থিতি দেখা দেয় দুই দেশের মধ্যে। তবে তাতে আন্তর্জাতিক মহলে কার্যত একঘরে হয়ে পড়ে পাকিস্তান। তাদের দেশে আশ্রিত যে মাসুদ আজহারকে আড়াল করতে এতদিন সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছিল চিন, তারাও হাত তুলে নেয় শেষ মেশ। যার পর, গত ১ মে জইশ-ই-মহম্মদ চাঁই তথা পাঠানকোট এবং পুলওয়ামা হামলার চক্রী মাসুদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ।

আরও পড়ুন: আক্রান্ত জাহাজ, পশ্চিম এশিয়ায় বাড়ল উত্তেজনা

তার পর থেকেই নতুন করে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিতে শুরু করে পাকিস্তান। গতমাসে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নরেন্দ্র মোদী। শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁকে চিঠি দেন ইমরান খান। তাতে কাশ্মীর-সহ নানা বিষয়ে নতুন করে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রস্তাব দেন। এসসিও সম্মেলনের আগে নতুন করে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের প্রস্তাব দিয়ে ভারতকে চিঠি লেখেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিও। কিন্তু ভারতের তরফে সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। এসসিও সম্মেলন চলাকালীন চিনের শি চিনফিং এবং রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন-সহ অন্যান্য রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে বৈঠক স্থির হলেও, ইমরানের সঙ্গে মোদীর কোনও বৈঠক স্থির হয়নি।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE