Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

মিলল দায়সারা মার্কিন আশ্বাস, প্রশ্ন দ্বিচারিতার

যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের এই অঙ্গীকারকে শূন্যগর্ভ বলেই মনে করছেন কূটনীতির জগতের লোকজন।

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিল আমেরিকা।

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিল আমেরিকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৭
Share: Save:

পুলওয়ামা কাণ্ডের পর বিবৃতি গিয়ে গত কালই পাকিস্তানের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছে ওয়াশিংটন। এর পর আজ আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ফোন করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে। পাকিস্তানের মাটি থেকে (জইশ-ই-মহম্মদের মতো গোষ্ঠীর) সন্ত্রাসবাদী ডেরা নির্মূল করতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন কর্তা। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের এই অঙ্গীকারকে শূন্যগর্ভ বলেই মনে করছেন কূটনীতির জগতের লোকজন।

তাঁদের বক্তব্য, এই অস্থির সময় আফগানিস্তানের তালিবানের সঙ্গে ধরি মাছ না ছুঁই পানি গোছের আধ-খেঁচড়া একটি শান্তি চুক্তি করে কোনও মতে হাত ঝেড়ে চলে যাওয়াটাই এখন আমেরিকার অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। যাওয়ার আগে দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার সন্ত্রাস প্রসঙ্গে ট্রাম্প সরকারের সরব হওয়াটা নিজেদের দায়িত্বের বিষয়টি তুলে ধরার এক কৌশল মাত্র। এর কোনও সারবত্তা নেই। কারণ, আফগানিস্তান থেকে সেনা তুলে নিয়ে কার্যত দেশটিকে ফের তালিবানের মুক্তাঞ্চল করে দেওয়ার রাস্তা খুলে দিচ্ছে হোয়াইট হাউস। এই তালিবানের সঙ্গেই জইশ-ই-মহম্মদ এবং পাক সেনা তথা আইএসআইয়ের সম্পর্ক কতটা ঘনিষ্ঠ—পশ্চিমি দুনিয়ার কাছে সেটা অজানা কিছু নয়। ফলে এক দিকে ভারতের সঙ্গে সন্ত্রাস প্রশ্নে আশার বাণী শোনানো এবং একই সঙ্গে রঙ্গমঞ্চ থেকে প্রস্থান করা — বিষয়টিকে দ্বিচারিতা বলেই মনে করছেন কূটনীতিবিদেরা।

কূটনৈতিক সূত্রের খবর আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্তে উৎসাহিত তালিবানের একটি অংশ। সেই উৎসাহ আফ-পাক সীমান্ত হয়ে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলির ভিতরেও ছড়িয়ে পড়ছে, এমন ইঙ্গিত মিলেছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের মাটিতে লালিত ভারত-বিরোধী জঙ্গি সংগঠনগুলি মনে করছে, তালিবান যদি আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধে ‘জয়লাভ’ করতে পারে, তা হলে আমরা কেন পারব না?

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের জঙ্গি তালিকায় জইশ-ই-মহম্মদের নাম উঠেছে ২০০১ সালের অক্টোবরে। সেই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবেই তালিবান-জইশ যোগসাজশের কথা উঠে এসেছিল। বলা হয়েছিল, ‘আল কায়দা, ওসামা বিন লাদেন এবং তালিবান অর্থ, প্রযুক্তি, সামরিক সরঞ্জাম নামে বা বেনামে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জুগিয়ে চলেছে এই জইশকে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নথি অনুসারে আল কায়দা, তালিবান, এবং অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলি মৌলনা মাসুদ আজহারকে জইশ-ই-মহম্মদ নামের সংগঠনটি বানানোর জন্য পুঁজির জোগান দিয়েছে। মার্কিন সেনার বিরুদ্ধে তালিবানের অভিযানেও মাসুদ আজহার এবং জইশ অংশ নিয়েছিল। ফলে মার্কিন সহযোগিতার দায়সারা আশ্বাসকে ফাঁপা বুলির বেশি কিছু মনে করতে পারছেন না সাউথ ব্লকের কর্তাদের অনেকেই। তবে প্রকাশ্যে বিরূপ কোনও প্রতিক্রিয়াও জানানো হচ্ছে না এই মুহূর্তে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE