Advertisement
১১ মে ২০২৪
immunity

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পাতে নিয়মিত রাখুন এ সব

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নজর দিন খাবার পাতে। ছবি: শাটারস্টক।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নজর দিন খাবার পাতে। ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২০ ১৮:২২
Share: Save:

হয় গুমোট গরম নয়তো ঝড়-বৃষ্টি। গ্রীষ্ম জুড়ে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা তো আছেই, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে কোভিড-১৯-এর ভয়। সাধারণ ফ্লু থেকে করোনা, সব রকম অসুখ থেকে বাঁচতে এই সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসক ও গবেষকরা।

করোনাভাইরাসের ঘন ঘন চরিত্রবদলের দায়ে প্রতিষেধক ও ওষুধ দুই-ই এই সময় অধরা। বিশেষ করে বাড়ির শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে সে তার মরণকামড় বসাচ্ছে।শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ানো ও মাস্ক-সাবান-স্যানিটাইজার ব্যবহার করে অসুখের সঙ্গে লড়াই করা ছাড়া এই মুহূর্তে কোনও বিকল্প পথও খোলা নেই।

দীর্ঘ দিনের কোনও অসুস্থতা, অনিদ্রা, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপান সব কিছুই রোগ প্রতিরোধ কমিয়ে দেওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। শরীর শক্তপোক্ত না হলে, পুষ্টি না পেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর তা প্রভাব ফেলে। সুতরাং শরীরচর্চার পাশাপাশি খাবার পাতেও রাখতে হবে এমন কিছু খাবার, যা শরীরকে মজবুত করার পাশাপাশি রোগবালাই প্রতিরোধও করবে। পুষ্টিবিদ অন্তরা দেব দহিশ দিলেন এমন কিছু খাবারের।

আরও পড়ুন: হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে কোভিডের হানা কতটা ঝুঁকির?

উচ্ছের অ্যান্টিভাইরাল উপাদান রোগ ঠেকায়।

তেতো খাবার: ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রতি দিন খাবারের পাতে রাখুন তেতো। হয় নিম পাতা, নয়তো উচ্ছে। এ সবের অ্যান্টিভাইরাল উপাদান শরীরকে মজবুত রাখে ও এই সময় বাতাসে উড়ে বেড়ানো রোগজীবাণুর সঙ্গে্ লড়তে সাহায্য করে।

পর্যাপ্ত প্রোটিন: শরীর গড়তে গেলে প্রোটিনও চাই ভরপুর। খাবার পাতে উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজ, যে কোনও রকমের প্রোটিন রাখুন রোজ। মাছ, মাংস, সয়াবিন, মুসুর ডাল, ডিম এ সব থেকে পাওয়া পুষ্টিগুণ শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করবে।

লবঙ্গ-দারচিনি-কাঁচা হলুদ: ভারতীয় আয়ুষ মন্ত্রকের মতে, ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার মতো প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করতে গেলে ভারতীয় রান্নায় ব্যবহার করতে হবে আয়ুর্বেদ নির্দেশিত কিছু খাবার যা মশলাপাতি হিসেবে আমাদের দেশে চল আছে। তার মধ্যে লবঙ্গ-দারচিনি-কাঁচা হলুদও রয়েছে। রান্নায় যোগ করুন লবঙ্গ ও দারচিনি। এদের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট মহামারির বিরুদ্ধে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।

কাঁচা হলুদেরও অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল উপাদান শরীরকে অনেক রোগের হাত থেকে বাঁচায়। হয় টুকরো করে কেটে চিবিয়ে খান, নয়তো কাঁচা হলুদ বেটে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খান প্রতি দিন। বিশেষ করে শ্লেষ্মাজনিত অসুখের বিরুদ্ধে বড় ঢাল হয়ে উঠতে পারে এই কাঁচা হলুদ।

আরও পড়ুন: মাইকোব্যাকটেরিয়াম কী? কোভিডের চিকিৎসায় কতটা কাজে আসবে এই ওষুধ?

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ঠাসা রসুন রক্তকে পরিশুদ্ধ রাখে।

রসুন: সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন। স্বাস্থ্যবিদদের দাওয়াই, এতেই নাকি ভ্যানিশ অর্ধেক রোগবালাইয়ের শঙ্কা। প্রাকৃতিক ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ঠাসা এই সব্জির অনেক কার্যকরী দিক রয়েছে। খালি পেটে, অর্থাৎ অনেকটা সময় পেট খালি থাকার পর এটি খেলে এর রস সহজে শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে পারে বেশি পরিমাণে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ঠাসা এই সব্জি রক্তকে পরিশুদ্ধ রাখে। কিছু ভাইরাস ও সংক্রমণজনিত অসুখ— যেমন ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, ইত্যাদি প্রতিরোধে এই সব্জির ভূমিকা অনেক। শ্লেষ্মাজনিত অসুখ রুখতে কাজে আসা রসুন শরীরের রোগ প্রতিরোধের দেওয়ালকেও মজবুত করে। তাই এই সময় রান্নাতেও ব্যবহার করুন এই সব্জি।

সবুজ শাকসব্জি ও ফল: ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচত, শরীরকে স্বাভাবিক শক্তির জোগান দিতে ও ভিটামিন সি-খনিজের উপাদান যাতে ঘাটতি না পড়ে সে সবের দিকেও এই সময় নজর দিতে হবে। প্রতি দিন অন্তত ১০০ গ্রাম ওজনের যে কোনও ফল খান। সঙ্গে রাখুন পর্যাপ্ত সবুজ শাকসব্জি।

টক দই: টক দইয়ের ফারমেন্টেড এনজাইম খাবার হজমের জন্য ভীষণ উপযোগী। টক দইয়ের প্রো বায়োটিক উপাদান লিভারকে যেমন সুস্থ রাখে তেমনই এর জেরে কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেকেই দুধ খেতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন দইয়ের উপর। দুধের তুলনায় দই অনেক বেশি সহজপাচ্য। শরীরকে ডি-টক্সিফাই করতে দইয়ের জবাব নেই। শরীরের টক্সিন যত সরবে, সুস্থতার পথে ততই এগিয়ে থাকা সম্ভব হবে।

জল: শরীরে জলের ভাগ কমলে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে তেমনই ডিহাইড্রেশন থেকে হওয়া নানা সমস্যায় জেরবার শরীর সহজেই ভাইরাসের শিকার হয়। তাই জলের বিষয়ে সচেতন হন। পারলে ফোটানো জল খান। জল শরীরের টক্সিন বার করে শরীরকে সুস্থ রাখবে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE