Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Lying

কী করে বন্ধ করবেন বাচ্চার চুরি করা বা মিথ্যে বলার প্রবণতা?

এ সব শুনে সন্তানদের কঠোর শাসন কিন্তু নৈব নৈব চ। কারণ, বড়দের আর বাচ্চাদের জগতের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আমাদের কাছে মিথ্যা কথা বলা আর চুরি করা হতেই পারে গর্হিত অপরাধ। কিন্তু শিশুদের কাছে সাদাকালোর বিভাজনটা অন্য রকম।

শিশুদের কাছে সাদাকালোর বিভাজনটা অন্য রকম। ছবি: শাটারস্টক।

শিশুদের কাছে সাদাকালোর বিভাজনটা অন্য রকম। ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ১৭:২৭
Share: Save:

বাচ্চার স্কুল থেকে অভিযোগ আসছে মাঝে মাঝেই? শিক্ষক বা শিক্ষিকা কী বলছেন, আপনার বাচ্চা প্রায়ই মিথ্যে কথা বলে? বা, বন্ধুদের জিনিস নিয়ে বাড়ি চলে যায়, সে রকম অভিযোগ শুনতে হচ্ছে তাদের বাবা মায়ের কাছ থেকে?

এ সব শুনে সন্তানদের কঠোর শাসন কিন্তু নৈব নৈব চ। কারণ, বড়দের আর বাচ্চাদের জগতের মধ্যে বিস্তর ফারাক। আমাদের কাছে মিথ্যা কথা বলা আর চুরি করা হতেই পারে গর্হিত অপরাধ। কিন্তু শিশুদের কাছে সাদাকালোর বিভাজনটা অন্য রকম।

প্রি স্কুলে যাওয়া একটি শিশুরও অধিকারবোধ প্রবল। বিশেষ করে এখনকার বাচ্চারা খুবই আদরে বড় হয়। তাদের কাছে মনে হতেই পারে, যা ভাল লাগছে, সবই তার।

সন্তানদের কঠোর শাসন কিন্তু নৈব নৈব চ। ছবি: শাটারস্টক।

অনেক সময়েই হয়, বাচ্চা তার লোভ সংবরণ করতে পারে না। হয়তো ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে নিয়ে গেলেন, আপনার অজান্তে পছন্দসই কিছু পকেটে ঢুকিয়ে নিল সে। ধরা পড়ে গিয়ে লজ্জায় লাল হয়ে গেলেন আপনি।

আরও পড়ুন : রুক্ষ ও ফাটা চুল? সমস্যা মেটাতে হাতিয়ার লিভ-ইন কন্ডিশনার

এ রকম লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পড়ার আগেই সতর্ক হোন। স্কুলের পাশাপাশি বাচ্চার কাছে বাড়ির সহজপাঠও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাচ্চাকে গল্পচ্ছলে শেখান। বুঝিয়ে বলুন, কোনটা তার। কোনটা তার নয়। ছোট থেকেই শেখান, নিজের জিনিসের যত্ন নিতে। বন্ধুর কোনও জিনিস তার ভাল লাগতেই পারে। কিন্তু বন্ধুর অগোচরে সেটা নেওয়া যে ঠিক নয়, সেটা বুঝিয়ে বলুন। তাতেই ধীরে ধীরে লোভ সংবরণ করতে শিখবে আপনার সন্তান।

বন্ধুর অগোচরে তার জিনিস নেওয়া যে ঠিক নয়, সেটা বুঝিয়ে বলুন। ছবি: শাটারস্টক।

একটা জিনিস সব সময় মাথায় রাখুন। বকেঝকে, শাসন করে এ সব শেখাতে যাবেন না। তা হলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে। আর একটা বিষয়ও মনে রাখবেন, কোনও জিনিস অনেক বার চেয়েও না পেলে বাচ্চা অন্যখানে সেটা পেলে চুরি করতে চায়।

আরও পড়ুন : নির্মেদ, পেশিবহুল শরীর তাও আবার জিম বা সাপ্লিমেন্ট ছাড়া! সম্ভব, এ সব উপায়ে

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, বাচ্চাদের মধ্যে চুরি করা বা মিথ্যে বলার প্রবণতা ‘বিহেভিয়ারাল প্রবলেম’। এর সঙ্গে বাচ্চার নীতিশিক্ষার থেকেও বেশি জড়িয়ে বাচ্চা কতটা ম্যাচিয়োর্ড, সেই প্রশ্ন। বাচ্চাদের মধ্যে মিথ্যে বলার প্রবণতা অনেক সময় আসে কল্পনার জগৎ থেকে এবং অভিভাবকের শাসন থেকে নিজের দোষ লুকিয়ে রাখতে। তাই কড়া শাসন না করে সন্তানকে বরং বলুন, ‘তুমি মিথ্যেকথা বললে আমি কষ্ট পাই’। বাবা-মায়ের মুখে এই কথা বাচ্চার মনে ম্যাজিকের মতো কাজ করবে।

ভুল শুধরে দেওয়ার পাশাপাশি সত্যিকথা বলার জন্য পুরস্কৃতও করুন। ছবি: শাটারস্টক।

আরও একটা জিনিস মনে রাখবেন। বাচ্চা কিন্তু মিথ্যে বলতে শেখে বড়দের দেখেও। আপনি হয়তো ওর সামনে কাউকে মিথ্যে বলে বসলেন! তা হলে বাচ্চাকে কী করে সত্যবাদিতা শেখাবেন? কারণ আপনি ভাবছেন, আপনি ‘হোয়াইট লাই’ বলছেন। আপনার সন্তান কিন্তু সাদা মিথ্যে আর কালো মিথ্যে বলে কিছু বোঝে না।

তাই সন্তানের সামনে নিজের আচরণ নিয়ে সতর্ক হোন। পাশাপাশি, সন্তানকে ‘সরি’ বলতেও শেখান। চুরি করে ধরা পড়লে আগে যেন সে বন্ধুকে ‘সরি’ বলে। গোড়া থেকেই এই পাঠ দিতে থাকুন সন্তানকে।

আরও পড়ুন: বাহুমূলের মেদ স্লিভলেস পরতে দিচ্ছে না? এ সব উপায়ে ঝরিয়ে ফেলুন সহজে

যদি অপরাধ করে এসে বাচ্চা আপনার কাছে দোষ স্বীকার করে, তা হলে তার ভুল শুধরে দেওয়ার পাশাপাশি সত্যিকথা বলার জন্য পুরস্কৃতও করুন। তা সে যতই সামান্য উপহার হোক না কেন, বাচ্চা কিন্তু সেটা মনে রাখবে। সামান্য উপহারের সুপ্রভাব পাবেন আপনিও।

তবে মনে রাখবেন, এ ভাবে সমস্যার সমাধান সম্ভব একটা নির্দিষ্ট বয়স অবধি। টিন এজে এক বার পা রাখলে কিন্তু সমস্যা আরও জটিল ও স্পর্শকাতর হয়ে পড়বে। তাই সতর্ক হোন শুরুতেই। যাতে সন্তান কৈশোরে পা রাখার আগেই নির্মূল হয়ে যায় এ রকম সমস্যা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lying Honesty LifeStyle Parenting Tips
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE