নভেল করোনাভাইরাস বদলে দিয়েছে আমাদের দিনযাপন। গৃহবন্দি থাকায় শরীর ও মন ক্রমশ স্থবির হয়ে পড়ছিল। এরই মধ্যে আশার খবর আনলক ৩-এ খুলে দেওয়া হচ্ছে জিমের দরজা। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন। বাড়িতে নিঃসঙ্গ ভাবে আসন করার থেকে ট্রেনারের তত্ত্বাবধানে জিম করতে অনেকেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জিম খুলে দেওয়াকে সমর্থন করছেন না। তাঁদের মতে, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে জিম করতে না পারলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে মারাত্মক ভাবে। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ দেবকিশোর গুপ্ত জানালেন, এখন জিমে যাওয়া আত্মহত্যার সামিল।
নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখন হু হু করে বাড়ছে। ‘‘দেশ জুড়ে প্রত্যেক দিন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন। জিম খোলা হলে আরও সংক্রমণ বেড়ে যাবে। এই সময় রোগের প্রকোপ কমাতে মানুষে মানুষে দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। জিমে এই ব্যাপারটা মেনে চলা একেবারেই অসম্ভব,’’— বললেন দেবকিশোর। জিমে এক্সারসাইজ অভ্যাস করেন এক সঙ্গে অনেকে। এক একটি ইন্সট্রুমেন্ট একাধিক জন ব্যবহার করেন। সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। কোভিড ১৯ সংক্রমণের সব কটি রিস্ক ফ্যাক্টর জিমে আছে। এখনকার বেশির ভাগ জিম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। অর্থাৎ বদ্ধ ঘরে একাধিক মানুষ একসঙ্গে এক ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় কাটাবেন। অর্থাৎ কোনও এক জন মানুষ যদি উপসর্গহীন কোভিড পজিটিভ হন, তাঁর থেকে প্রত্যেকেই সংক্রমিত হয়ে পড়বেন। এই পরিস্থিতিতে জিম খুলে দেওয়া আগুন নিয়ে খেলার সামিল বলে দেবকিশোর মনে করেন।
সুস্থ থাকতে নিয়মিত শরীর চর্চা করেন অভিনেতা টোটা রায়চৌধুরী। তাঁর মতে, বাজার-দোকান-বাস-সহ সবই যখন খোলা, তখন জিম খুলতে বাধা কিসের। বাসে বা বাজারে ঠাসাঠাসি ভিড়ে যদি অসুবিধে না হয় তো জিমকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কোনও মানে হয় না। সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হলে আখেরে ভালই হয়। টোটা নিজে অবশ্য নিয়মিত জিমের বদলে যোগাসন ও অন্যান্য এক্সারসাইজ করেন। একই সঙ্গে তাঁর নিজস্ব কিছু ইক্যুইপমেন্টের সাহায্যে শরীর চর্চা করেন। তাঁর মতে যথাযথ নিয়ম মেনে জিমে গিয়ে শরীর চর্চা করলে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। একসঙ্গে ভিড় করে জিমে না গিয়ে ধাপে ধাপে অল্প কয়েকজন করে জিমে গেলে অসুবিধে হওর কথা নয়। এছাড়া জিম কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় স্যানিটাইজেশনের ব্যাপারে গুরুত্ব দেবেন।