একই হাসপাতালের ঘরে মৃত্যু হয় আমেরিকার ওহায়য়োর বাসিন্দা হিউবার্ট ও জুন ম্যালিকোটের। ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার ওহায়য়োর বাসিন্দা জুন ম্যালিকোট আর হিউবার্ট ম্যালিকোটের প্রথম দেখা সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। তখনই প্রেম, বিয়ে। তার পর ৭৯ বছর একসঙ্গে কাটিয়েছেন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে একে অপরের পাশে ছিলেন। মৃত্যুও ভাঙতে পারল না সেই যুগলবন্দি। মৃত্যুতেও একে অপরের সঙ্গ ছাড়লেন না শতায়ু দম্পতি। ৩০ নভেম্বর হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় মারা যান হিউবার্ট। আর তার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন জুন।
৬ ডিসেম্বর দম্পতির স্মৃতিতে স্মরণসভার আয়োজন করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। সেখানেই ছেলে স্যাম জানান, তাঁরা কষ্ট পাচ্ছেন বটে, কিন্তু হয়তো কষ্ট পাওয়া উচিত নয়। কারণ তাঁদের বাবা-মা একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারতেন না। জুন ও হিউবার্টের পরিবার জানিয়েছে, তাঁদের প্রথম দেখা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। ফ্যাসিবাদের পতন থেকে ভিয়েতনামের যুদ্ধ পার করে বর্তমান রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বৈরথ, সবই স্বচক্ষে দেখেছেন দু’জন। দেখতে দেখতে জুটিতে ৭৯ পূর্ণ করেছিলেন এই বছরেই।
জুনের জন্ম ১৯২২ সালের ১৩ জুলাই আর হিউবার্টের জন্ম ওই মাসেরই ২৩ তারিখ। দু’জনের প্রথম দেখা ১৯৪১ সালে। ইয়েটন রোড চার্চে। দু’জনেই নিজের নিজের বন্ধুর সঙ্গে গিয়েছিলেন। সেখানেই আইসক্রিম খেতে গিয়ে আলাপ। ব্যস, তার পর আর ভাঙেনি সেই জুটি। চার্চে যাওয়ার নামে চলতে থাকে সাক্ষাৎ। ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াই করার জন্য নৌসেনায় যোগ দেন হিউবার্ট। প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষ করে যুদ্ধে যাওয়ার আগেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন দু’জন। ১৯৪৩ সালে এক হয় চারহাত।
জুন ও হিউবার্টের তিন সন্তান। তিন ছেলে-মেয়ের ঘরে মোট সাত নাতি-নাতনি রয়েছেন। নাতি-নাতনিদের মোট ১১ সন্তান। চলতি বছরে দু’জনের শততম জন্মদিন ধুমধাম করে পালন করা হয়। সেখানেই দম্পতি জানিয়েছিলেন, দু’জনে মিলে ভালই আছেন। কিন্তু কিছু দিন আগেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন জুন। ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে। ২৫ নভেম্বর অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন হিউবার্ট। হাসপাতালের ভিতরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দু’জনকে একই ঘরে রাখা হয়। ৩০ নভেম্বর হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন হিউবার্ট। আর তার ২০ ঘণ্টার মাথায় চলে যান জুনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy