জাঁকিয়ে শীত পড়লে কম্বলের উষ্ণতা যেমন যে কোনও মানুষের জন্য আরামদায়ক, পোষ্যের জন্যও তাই। বিড়ালের গায়ে লোম থাকায়, ঠিক মানুষের মতো ততটা ঠান্ডা লাগে না ঠিকই, তবে শীতের দিনে তারাও ওম খোঁজে।
জাঁকিয়ে শীত পড়েনি এখনও। তবে এই মরসুমে পোষ্যের যত্নের কথাটি ভাবা দরকার আগেই। গরমের দিনে যেমন আদরের চারপেয়েটির শরীর ঠান্ডা রাখা দরকার, শীতের দিনে দরকার উষ্ণতার। সেই কারণে ডায়েটে যেমন বদল দরকার, তেমন প্রয়োজন পোষ্যের শোয়ার স্থানে উষ্ণতার স্পর্শ। কী ভাবে শীতের দিনে যত্নে রাখবেন আদরের বিড়ালকে?
ঘর গরম রাখুন
পোষ্য যাতে ঘরে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারে সে কারণে ঘরটি গরম রাখা দরকার। বিকেল হলেই জানলা বন্ধ করে দিন। ভারী পর্দা লাগালেও বাইরে থেকে চট করে ঠান্ডা ঢুকতে পারবে না। মেঝেতে গালিচা পেতে রাখুন। যাতে বিড়ালের পায়ে বা গায়ে ঠান্ডা না লাগে। পোষ্যের বিছানাটি গরম রাখা দরকার। হালকা পোষ্য-বান্ধব কম্বল কিনুন। গদিওয়ালা বিছানা, কম্বলের উষ্ণতা শীতের দিনে বিড়ালের জন্যও আরামদায়ক।
আবহাওয়া
শীত পড়ার মরসুমে আবহাওয়ার বদলে পোষ্যের সর্দিকাশি, সংক্রমণ হতে পারে। কুকুরকে মোজা বা গরমজামা পরানো সহজ হলেও বিড়াল সে সব পরতে চায় না। তারা নিজের মতো থাকতেই পছন্দ করে। সন্ধ্যার দিকে সে যেন বাইরে ঘোরাঘুরি না করে তা নিশ্চিত করুন।
জল
শীতের দিনে তেষ্টা কম পায় বলে বিড়ালেরও জল খাওয়া কমে যায়। তবে কম জল খাওয়ার অভ্যাস একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। শীতের মরসুমে পোষ্য জল খেতে চায় না। বদলে সব্জি বা মাংস সেদ্ধ করা জল অথবা ব্রথ তাকে খাওয়ানো যায়। তবে অবশ্যই নুন ছাড়া। এই সময় খাবারে প্রোটিন এবং ফ্যাটের মাত্রা একটু বাড়িয়ে দিলে শরীর গরম থাকবে। মাছ, ডিম, রাঙাআলু, কুমড়ো, প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার পোষ্যের পাতে থাকা দরকার।শীতের দিনে শরীর গরম রাখার জন্যই বিড়ালের খাবারের পরিমাণ একটু বেড়ে যায়। তা মাথায় রাখা প্রয়োজন।
খেলাধুলো
বেশি ঠান্ডায় বাইরে ঘোরাঘুরি কমে গেলে শরীরে তার প্রভাব পড়তে পারে। ঘরেই যাতে বিড়ালের সঙ্গে বাড়তি সময় কাটানো যায়, তাকে খেলানো যায় বা সক্রিয় রাখা যায়, সেই চেষ্টা করা প্রয়োজন।
আচরণের দিকে খেয়াল
পোষ্যের আচরণগুলি খেয়াল করা দরকার। হঠাৎ করে ঝিমিয়ে গেলে, খাওয়ায় অনীহা দেখা দিলে, নজর দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষত বয়স্ক বিড়াল অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে বেশি ঠান্ডায়। দরকার মতো পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বাইরে থাকা বিড়ালের যত্ন
অনেক বাড়িতেই বিড়াল থাকে, তবে তারা সব সময় ঘরে থাকে না। বাড়ির চৌহদ্দিতে তাদের অবাধ বিচরণ। শুধু খাওয়ার সময় তারা বাড়িতে এসে খেয়ে যায়। এমন বিড়ালদের জন্যও শীতের মরসুমে বাড়তি যত্ন দরকার। বিড়াল বাইরে থাকলে তার জন্য বাক্স দিয়ে ঘর বানিয়ে দিন। একটা পিচবোর্ডের বাক্সে, বিড়াল ঢোকা-বেরোনা করতে পারবে এমন মাপে কেটে দরজা বানান। ভিতরে গরম কাপড় দিয়ে দিন, যাতে ভিতরে থাকলেও সে আরাম বোধ করে। বিড়ালের শরীর যাতে গরম থাকে তাই মাংস, মাছের ব্রথ জাতীয় খাবার বেশি দিতে হবে।