Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Aminia

দীপাবলিতে ‘আমিনিয়া’-র ভোজবাজি এ বার বাড়িতেই, রইল লোভনীয় দুই রেসিপি

৯০ বছর ধরে বাঙালির বিরিয়ানি প্রীতি আরও গাঢ় করে তুলতে ‘আমিনিয়া-র’ অবদান কম নয়।

আমিনিয়ার নানা পদের মধ্যে পাবেন খাঁটি নবাবি খাবারের সেই স্বাদ ও গন্ধ।

আমিনিয়ার নানা পদের মধ্যে পাবেন খাঁটি নবাবি খাবারের সেই স্বাদ ও গন্ধ।

সুদীপা দাশগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:১৫
Share: Save:

বাঙালির বিরিয়ানি প্রীতি চিরকালীন। সেই নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের আমলে শুরু হয়েছিল কলকাতায় বিরিয়ানির যাত্রা। বাঙালি পৃথিবীর যে কোনায় থাকুক না কেন, বিরিয়ানি দেখলেই জিভের জলটা আটকানো বড়ই মুশকিল। তবে বিরিয়ানির ক্ষেত্রে বাঙালির নাকটা বেশ উঁচু। বিরিয়ানি মানেই, সে মনে করে আলু আর ডিমটা মাস্ট। হায়দ্রাবাদ, লখনউ এর বিরিয়ানি তার আবার ঠিক জমে না। কারণ ওই আলুর অভাব।

কলকাতায় এখন মুঘল খাবারের হাজারটা ঠিকানা। নামিদামী রেস্তরাঁ বাঙালির রসনাতৃপ্তি করে চলেছে এই মুঘল খাবার নানা পদ পরিবেশন করে। ‘আমিনিয়া-র’ কথা তো কারও অজানা নয়। ৯০ বছর ধরে বাঙালির বিরিয়ানি প্রীতি আরও গাঢ় করে তুলতে এই রেস্তরাঁর অবদান কম নয়। শুধু কি বিরিয়ানি? এই উৎসবের মরসুমে আমিনিয়া মেনুতে থাকছে চিকেন টিক্কা কাবাব, তন্দুরি ফিশ টিক্কা, মটন রেজালা, চিকেন ভর্তা, ফিশ টিক্কা বাটার মশলা, পনির বাটার মশলা, ফিরনি, মিহিদানা উইথ রাবড়ি আরও কত কী!

নিউমার্কেট চত্বরে আমিনিয়ার আউটলেটটি সবচেয়ে পুরনো। এ ছাড়াও গোলপার্ক, যশোর রোড, শ্যামবাজার, ব্যারাকপুর-সহ এই মুহূর্তে মোট আটটি জায়গায় রয়েছে তাদের আউটলেট। কেবল লখনউ এর ‘আওধি’ খানা কলকাতাবাসীর প্লেটে তুলে ধরাই নয়, আমিনিয়ার নানা পদের মধ্যে পাবেন খাঁটি নবাবি খাবারের সেই স্বাদ ও গন্ধও। প্রতি দিন সকাল ১১.৩০ টা থেকে রাত ১১.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে এই রেস্তরাঁর সব কটি আউটলেট।

ফিরনি

এই ঐতিহ্যবাহী খাবার এর কোনও পরিচয়ের দরকার নেই। রান্নাঘরের সামান্য জিনিস দিয়েই বানানো যায় এই পদ। আমিনিয়ার হেঁশেল থেকে আপনার জন্য রইল ফিরনির রেসিপির সুলুকসন্ধান।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

প্রণালী:

প্রথমেই বাসমতী চাল ২ ঘন্টা জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর জলটা ঝরিয়ে নিয়ে মিক্সিতে দিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এই সময় বাদাম, কাজুবাদাম এবং পেস্তা বাদাম কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে। তারপর একটি কড়াইতে দুধ দিয়ে মাঝারি আঁচে গরম করে দুধ টাকে আসতে আসতে ফুটিয়ে তাতে চাল দিয়ে হালকা আঁচে ততক্ষণ রাখতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত দুধ টা পরিমাণে অর্ধেক হচ্ছে এবং চাল টা সিদ্ধ হচ্ছে । খোয়া টা গুঁড়ো করে কড়াইতে দিয়ে পুরোপুরি মিশে যাওয়ার পর তাতে চিনি দিয়ে ৫-৭ মিনিট নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না ফিরনি টা কড়াইতে লেগে যাচ্ছে। তারপর কড়াইতে কুচোনো কাজু কিসমিস গুলো দিয়ে দিন। যখন মিশ্রণ টি গোলাপি রং নিতে আরম্ভ করবে তখন ত্রলাচ গুঁড়ো দিয়ে আগুন থেকে সরিয়ে নিন।এবার ভালো করে মিশিয়ে মাটির পাত্রে দিয়ে তাতে বাদাম ত্রবং পেস্তা কুচি দিয়ে কিছু ঘন্টা ফ্রিজে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।

আরও পড়ুন: মটন-হাঁস-তিতির-মাছ, কী নেই বিরিয়ানির থালায়! কলকাতার কোথায়? কত দাম জানেন?

শাহি গলৌটি কাবাব:

নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের প্রিয় ছিল এই কাবাব। বৃদ্ধ বয়সে দাঁত পড়ে যাওয়ার কারণে অন্য কোনও কাবাব খেতে গিয়ে নবাব পড়তেন বেজায় মুশকিলে। তাই তার রাঁধুনিরা তৈরি করলেন এমন এক কাবাব, যা মুখে দিলেই গলে যাবে। সেই থেকেই এই কাবাবের নামকরণ গলৌটি কাবাব। উৎসবের মরসুমে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন আমিনিয়ার স্পেশাল শাহি গলৌটি কাবাব রেসিপি।

আরও পড়ুন: ‘হা’ বললে ‘হালিম’ বোঝেন! কেন কলকাতায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই পদ জানেন?​

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

প্রণালী:

পেঁপে পরিষ্কার করে ধুয়ে বীজ গুলো সরিয়ে পেস্ট বানান। পাকা পেঁপে না থাকলে কাঁচা পেঁপে দিয়ে পেস্ট বানান। কুচোনো মাংসের মধ্যে পেঁপে দিয়ে দু’ঘণ্টা রেখে দিন। কড়াই গরম করে তার মধ্যে ব্যাসন দিয়ে নেড়ে নিন, ব্যাসন যেন জ্বলে না যায়। কড়াই গরম করে তাতে জিরের বীজ ,দারচিনি, লবঙ্গ, ছোট এলাচ, বড় এলাচ , জয়ত্রি, জায়ফল, পোস্ত দানা, সর্ষের দানা এবং ধনে পাতা দিয়ে রোস্ট করে নিন। যখন মশলাগুলো থেকে সুন্দর গন্ধ ছাড়বে তখন গ্যাসটা নিভিয়ে দিন। এর পর রুম টেম্পারেচার রাখার পর মশলাগুলো গুঁড়িয়ে নিন। এ বার পেঁয়াজ কেটে সেটাকে ঘি দিয়ে নেড়ে নিন, যত ক্ষণ না যখন গোল্ডেন ব্রাউন হবে। এ বার গ্যাস অফ করে সেটাকে ফাইন পেস্ট বানিয়ে নিন। আদা ও রসুন বেটে নিন। ব্যবহার করার পনেরো থেকে কুড়ি মিনিট আগে জাফরান ২ টেবিল চামচ দুধে ভিজিয়ে রাখুন। এবার ম্যারিনেটেড মাংসে রোস্টের মশলা, পেঁয়াজ, আদা-রসুন বাটা, ব্যাসন, কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো, জাফরান, গোলাপ জল, গুঁড়ো দুধ আর নুন দিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে নিন। এ বার পাত্রটি ঢেকে ফ্রিজে তুলে রাখুন ৪-৫ ঘন্টার জন্য। এর পর মিশ্রণটি ফ্রিজ থেকে বার করে তাতে একটা ছোট পাত্র রেখে কয়লার টুকরো জ্বালিয়ে মাঝখানে রেখে দিয়ে তার মধ্যে ঘি, ছোট এলাচ আর লবঙ্গ দিয়ে বড় পাত্রটি তৎক্ষণাৎ ঢেকে দিন ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য। এর পর সেই মিশ্রণ থেকে ছোট ছোট গোলা বানিয়ে চ্যাপ্টা কাবাবের আকার দিন। কড়াইতে ঘি গরম করে কাবাবগুলি স্যালো ফ্রাই করে নিলেই তৈরি শাহি গলৌটি কাবাব। ধনেপাতা-পুদিনার চাটনি দিয়ে পরিবেশন করুন এই শাহি কাবাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE