বিরিয়ানি থেকে ইতালিয়ান পাস্তা বা চাইনিজ নুডলস! খাদ্যাভ্যাসে বাঙালির জুড়ি মেলা ভার। পয়লা বৈশাখের উৎসবক্ষণেসে যে তার স্বাদকোরককে আর একটু ঝালিয়ে নেবে এ আর নতুন কী! তবে এদিন একটু বাঙালি খাবার ওবাংলার পদ চাখতেই মন চায়।
তবে ফিউশন প্রিয় বঙ্গদেশ বাঙালি রান্নাতেও ফিউশনের ছোঁয়া আনতে কলকাতার যে সব শেফ সিদ্ধহস্ত, প্রদীপ রোজারিও তাঁদের অন্যতম। কে.কে’জ ফিউশন-এর নাম জানেন না এমন ভোজনরসিক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। নারকেলডাঙা মেন রোড, স্বভূমির পাশেই তাঁর এই পেল্লাই হেঁশেল। রেস্তরাঁর সাজসজ্জা থেকে খাবার সবেতেই মিশ্র সংস্কৃতির চমক।
এহেন প্রদীপ যে পয়লা বৈশাখেও নতুন কিছু ভাববেন, সে তো বটেই। তাই আসন্ন মাস পয়লায় বাঙালির চিরচেনা খিচুড়িকেই তিনি বেছে নিয়েছেন আস্তিনে লুকনো তাস হিসাবে। কিন্তু এই গরমে খিচুড়ি!— এ কথা বলে যাঁরা কপালে ভাঁজ খাওয়াচ্ছেন, তাঁদের জন্য কে.কে’জ-এর কর্ণধারের সাফ জবাব, “বাঙালি এত বেশি বিরিয়ানি খায় যে, অন্য খাবার চাখতেই ভুলেছে বাইরে বেরিয়ে। আর বিরিয়ানির মতো মশলাদার ভারী খাবার যদি সারা বছর খাওয়া যায়, তা হলে খিচুড়ির মতো হালকা ও কম মশলার খাবার কেন নয়?”
আরও পড়ুন: নববর্ষের বাঙালিয়ানায় কোন রেস্তরাঁয় কী কী পদ আর দামই বা কত?
কিন্তু বাঙালি যে খিচুড়ির সঙ্গে বর্ষাকেই মেলাতে পছন্দ করে, গ্রীষ্মকে নয়! তার বেলা? প্রদীপবাবুর মতে, ‘‘এটা প্রচলিত যে, বর্ষা মানেই খিচুড়িপ্রেম। তবে তা ঠিক নয়। খিচুড়ির মতো হালকা খাবার কম-বেশি সব ঋতুতেই পাতে রাখা যায়।’’
তবে এত ক্ষণে যদি মনে করেন, খিচুড়ি মানেই কেবল চাল-ডালের চেনা খাবার, তা হলে কিন্তু ভুল ভাবছেন। বরং সেখানেও ফিউশনের কারুকাজ রেখেছেন প্রদীপ রোজারিও। মেনুতে তাই প্রচলিত খিচুড়ি যেমন মিলবে, তেমনই মিলবে মিক্সড খিচুড়ি, যেখানে কিনা যোগ হবেস্কুইড, অক্টেপাস ও কুচো চিংড়িও! এর সঙ্গেই সাইড ডিশ হিসাবে নিতে পারেন নানা বিকল্প। যেমন, নিরামিষে মিলবে আলুর দম, চিলি পোটাটো, ম্যাশড পোটাটো, ক্রিসপি চিলি বেবিকর্ন, ক্রিসপি ফ্রায়েড ভেজিটেব্ল।
আরও পড়ুন: কলকাতার বুকে দুর্দান্ত বাঙালিখানার নতুন সন্ধান ‘চিলেকোঠা’, এদের বিশেষত্ব জানেন?
আবার আমিষ পছন্দ করলে চেনা বা অচেনা দু’রকম খিচুড়ির সঙ্গেই যোগ করতে পারেন ফিশ ফ্রাই, টসড বেকন, চিকেন কষা, চিলি চিকেন, গার্লিক প্রন, মটন কষাও। সব রকম খিচুড়ির সঙ্গেই পাবেন মনের মতো পাঁপড়, আচার ও স্যালাড!
খিচুড়ির সঙ্গে যে কোনও নিরামিষ পদ নিলে খরচ পড়বে কর-সহ ৩৫০ টাকা। সি ফুডের যে কোনও পদ, সঙ্গে খিচুড়ি, এমনটা পেতে চাইলে রেঁস্ত পড়বে ৪৯৫ টাকা। চিকেন ও মটনের লোভনীয় পদের সঙ্গে খিচুড়ি মিলবে ৪০০ টাকায়। তবে কেউ যদি কেবল খিচুড়িটুকুরই স্বাদ নিতে চান তাও চলবে। সে ক্ষেত্রে পকেটে চাপ পড়বে মাত্র ১৫০ টাকার।
আরও পড়ুন: গরমের দুপুরে অতিথিকে খাওয়ান চিংড়ির এই বাহারি ডিশ
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তাই অন্যরকমের খিচুড়ির স্বাদ পেতে চাইলে পয়লা বৈশাখ দুপুর বারোটা থেকেই ভিড় জমাতে পারেন কে.কে’জ ফিউশনে। রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা। জিভের আরাম আর মনের সুখ তা যে এমন করে খিচুড়িও আনতে পারে তা বোঝার ওই দিনই মোক্ষম সময়!
ছবি: শুভেন্দু চাকী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy