ধূমকেতু- ‘৪৬/পি- ভিরটানেন’। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
এক চূড়ান্ত মদ্যপ ঢুকে পড়েছে সৌরমণ্ডলে! আপাদমস্তক মদে ডুবে থেকে সে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সূর্যকে। আর সেই প্রদক্ষিণের পথে সেই মদ্যপের ‘মুখ’ আর ‘নিঃশ্বাস’ থেকে মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ছে রাশি রাশি অ্যালকোহল।
সেই মদ্যপ আদতে একটি ধূমকেতু। তার নাম ‘৪৬/পি- ভিরটানেন’।
মদ্যপ ধূমকেতুটি ধরা পড়েছে হাউইয়ের ডব্লিউ এম কেক অবজারভেটরির খুব শক্তিশালী টেলিস্কোপে। নাসা জানিয়েছে, এর আগে এতটা মদ্যপ কোনও ধূমকেতু বা কোনও মহাজাগতিক বস্তুর আর হদিশ মেলেনি। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘দ্য প্ল্যানেটারি সায়েন্স জার্নাল’-এ।
সহযোগী গবেষক, জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স ল্যাবরেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিল ডেলো বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত যে ধূমকেতুগুলির কথা আমরা জানতে পেরেছি, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে অ্যালকোহল রয়েছে এই ধূমকেতুতে। যা বলছে, সৌরমণ্ডলের জন্মের সময় এই ধূমকেতুর উপত্তি হয়েছিল যেখানে, সেই মুলুকে অ্যালকোহল রয়েছে প্রচুর পরিমাণে।”
আরও পড়ুন
কার্যকারিতা থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মর্ডানা টিকা নিয়ে আপনার যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর
আরও পড়ুন
এখনও দ্বিতীয় টিকা পাননি রাজ্যে ৮.৫ লক্ষ, তাঁদের জন্য ৫০% বরাদ্দের নির্দেশ
কুইপার বেল্ট আর ওরট ক্লাউড- সৌরমণ্ডলের বাইরের দিকে থাকা কঠিন বরফের এই দুই মহাসাম্রাজ্য থেকে বেরিয়ে কোনও ধূমকেতু সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করলেই তার শরীরের আকারের (‘নিউক্লিয়াস’) পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। সূর্যের বিকিরণে তার বরফের শরীর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গলতে শুরু করে। পরে তা বাষ্পীভূত হতেও শুরু করে। প্রদক্ষিণের পথে ধূমকেতু যতই সূর্যের দিকে এগোতে থাকে ততই সৌর বিকিরণে তার বরফ গলে তার মূল শরীরের (নিউক্লিয়াস) চার দিকে জলীয় বাষ্প আর ধূলিকণার একটি বলয় তৈরি করে। তার নাম ‘কোমা’। তার পর সূর্যের দিকে আরও এগিয়ে এলে সেই কোমা-ও আর অবিকৃত থাকে না। তার থেকে জন্ম হয়ে ধূমকেতুর দীর্ঘ পুচ্ছের। যা আদতে সূর্যের টানে মহাকাশে ছড়িয়ে পড়া রাশি রাশি বরফের কণা।
নাসা জানিয়েছে, ৪৬/পি- ভিরটানেন ধূমকেতুর পুচ্ছ থেকে বেরিয়ে এসে মহাকাশে ছড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে অ্যালকোহল। তার মধ্যে ইথাইল ও মিথাইল অ্যালকোহল তো রয়েছেই খুব বেশি পরিমাণে, সঙ্গে রয়েছে অ্যাসিটিলিন, অ্যামোনিয়া, ইথেন, ফরম্যালডিহাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ও জলের রাশি রাশি কণাও।
ধূমকেতুর বরফকে তাতিয়ে তোলে সাধারণত সৌর বিকিরণই। কিন্তু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ধূমকেতুর ক্ষেত্রে তার বরফ উত্তরোত্তর তেতে উঠে গলে যাচ্ছে আরও একটি রহস্যজনক অভ্যন্তরীণ কারণে। সেটি কী, তা এখনও স্পষ্ট ভাবে বুঝে উঠতে পারেননি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy