Advertisement
E-Paper

চাঁদের ৩ তারা

রোশন স্কুলের পাঠ শেষ করে মালদহ পলিটেকনিক কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। ইসরোতে কাজের সুযোগ পেয়ে সেখানে চলে গিয়েছেন।

জয়ন্ত সেন

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০১:১৩
স্বপ্নের শরিক। সুহাস মুখোপাধ্যায়, গৌতম মানি ও রোশন আলি (বাঁ দিক থেকে)।

স্বপ্নের শরিক। সুহাস মুখোপাধ্যায়, গৌতম মানি ও রোশন আলি (বাঁ দিক থেকে)।

চাঁদ বরাবরই একটা রূপকথার জায়গা। আর সেই রূপকথায় যেন যোগ করা হল আরও এক রূপকথা। সোমবার দুপুরে ভারতের মহাকাশযান রওনা হল চাঁদে।

এই রূপকথা কাহিনির তিনটি চরিত্র মালদহের মানিকচকের রোশন আলি, ইংরেজবাজারের সুহাস মুখোপাধ্যায়, গৌতম মানি। তিন জনেই এখন তিরুঅনন্তপুরমে থাকেন।

রোশন স্কুলের পাঠ শেষ করে মালদহ পলিটেকনিক কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। ইসরোতে কাজের সুযোগ পেয়ে সেখানে চলে গিয়েছেন।

সুহাসদের বাড়ি মালদহের ইংরেজবাজার শহরের এক নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনি সংলগ্ন ড্রিমল্যান্ড কলোনিতে। মা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। কয়েক বছর আগে সুহাসের বাবা সুমিত মুখোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন। তাদেরই কৃতী ছেলে বছর ৩১-র সুহাস। পারিবারিক সূত্রে খবর, পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন ইংরেজবাজার শহরের ললিতমোহন শ্যামমোহিনী বিদ্যামন্দিরে। এরপরে বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন মালদহ জেলা স্কুল থেকে। তারপর হলদিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি থেকে বিটেক করে দুর্গাপুরের একটি স্টিল প্ল্যান্টে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র পাঁচ মাসে সেই চাকরি ছেড়ে তিনি মুম্বইতে একটি অর্গানিক কেমিক্যাল সংস্থায় চাকরিতে যোগ দেন। এক বছর পর বার্ক রিসার্চ সেন্টারে কাজের সুযোগ পেলেও তিনি যোগ দেননি। ২০১০ সালে ইসরোতে যোগ দেন। ৯ বছর ধরে তিনি সেখানেই। তাঁর দিদি মৈত্রেয়ী বলেন, ‘‘মা ও আমি কিছু দিন হল ভাইয়ের বাড়িতে এসেছি। ভাই এই চন্দ্রযান-২ এর অন্যতম সহযোদ্ধা। সেই চন্দ্রযান সফল ভাবে উৎক্ষেপণ হয়েছে। ভাইয়ের অবদানে দিদি হিসেবে আমি গর্বিত। কাল যখন ওই চন্দ্রযান ওঠে তখন আমি ও মা আর ঠিক থাকতে পারিনি। আনন্দে লাফিয়ে উঠেছিলাম।’’ ইন্দ্রাণীদেবীও বলেন, ‘‘এই মহাকাশযানের সফল উৎক্ষেপণে আমার ছেলের যে অবদান রয়েছে, সে জন্য আমি গর্বিত।’’

গৌতমের বাড়ি ইংরেজবাজার শহরেরই চুড়িপট্টি এলাকায়। তাঁর বাবা গোপেশচন্দ্র মানি এই মার্চ মাসেই মারা যান। তার কিছুদিন আগেই গৌতম বিয়ে করেছিলেন উপাসনা সাহাকে। বাবার মৃত্যুর পর মা ও স্ত্রীকে তিরুঅনন্তপুরমে নিয়ে গিয়েছেন গৌতম। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতম দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন মালদহ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরে। গৌতম ৯৪৪ নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে জেলারই অক্রুরমণি করোনেশন ইনস্টিটিউশন থেকে। এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। ইসরোতে তিনি প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। অক্রুরমণি করোনেশন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক চঞ্চল ঝা বলেন, ‘‘গৌতম খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। দারিদ্রর সঙ্গে লড়াই করে সে লেখাপড়া করেছে। গৌতম চন্দ্রযান-২ এর এক জন যোদ্ধা, তাই আমরা গর্বিত।’’ ইংরেজবাজার শহরের দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মার্কেটে গৌতমের কাকা গোপালচন্দ্র মানির ছোট্ট একটি কাপড়ের দোকান। গোপালচন্দ্র বলেন, ‘‘দাদার আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। গৌতম অনেক লড়াই করে উঠেছে। ওর জন্য আমরা গর্বিত।’’

(সহপ্রতিবেদন: অনিতা দত্ত)

Chandrayaan 2 ISRO
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy