জুটি: বিশ্রাম শেষ। দ্রুত মহড়ায় ফিরছেন কোহালিরা। ফাইল চিত্র
লন্ডনে বিশ্রাম শেষ করে সাউদাম্পটনের দিকে চলল কোহালির ভারত। আজ, সোমবার, তাঁরা পৌঁছবেন। প্র্যাক্টিসের কোনও বালাই নেই। ব্যাট-বলের সঙ্গে দেখা হবে আবার মঙ্গলবার থেকে। টেস্টের আগে দু’দিন পুরোদমে মহড়া সেরে খেলতে নেমে পড়ো।
মোটামুটি এ রকমই রুটিন এখন দেখা যায় কোহালিদের দলে। সেই ধারণা অনুযায়ী বুলেটিন লিখে ফেলা হল এবং দ্রুত তা কেটে দিতে হচ্ছে। কারণ, সাউদাম্পটনে পৌঁছে আর হোটেলের ঘরে আরাম করতে চায় না ভারতীয় দল। ব্যাগপত্র রেখেই তারা ছুটবে অনুশীলনে। ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে জেতার পর থেকে ধরলে এটাই হবে মাঠে গিয়ে প্রথম অনুশীলন।
লন্ডনে এখন ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বা ফুটবল মহলে উত্তরের চেয়ে প্রশ্ন বেশি। ফুটবলে সব চেয়ে বড় প্রশ্ন জোসে মোরিনহোর ভবিষ্যৎ কী? এমনিতেই তাঁকে নিয়ে জোরাল তর্ক শুরু হয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অভ্যন্তরে। তার উপর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে ফের শুরু হয়েছে তাঁর খেলার স্টাইল নিয়ে সমালোচনা। তাঁর অতি রক্ষণাত্মক ফুটবল কতটা বিশ্বের জনপ্রিয়তম ক্লাবের জন্য মানানসই, সেই প্রশ্ন উঠছে। বরাবরই ম্যান ইউ ভক্তদের কাছে অগ্রাধিকার পেয়েছে খেলার ভঙ্গি। সুন্দর ফুটবল এখনও ম্যাঞ্চেস্টারে দেখা যায়, তবে সেটা খেলে অন্য ম্যাঞ্চেস্টার। মোরিনহোর ম্যাঞ্চেস্টার নয়, পেপ গুয়ার্দিওলার ম্যাঞ্চেস্টার। ইউনাইটেড নয় সিটি।
ক্রিকেট মানচিত্রে খুব বেশি হেরফের দেখা যাচ্ছে না। মোরিনহোর মতোই চাপ বাড়তে পারে জো রুটদের কোচ ট্রেভর বেলিসের উপর। যদি ভারত সাউদাম্পটনেও জিতে যায়, তা হলে গদি বাঁচানোর প্রশ্নও এসে যেতে পারে। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে সোমবারেই কোহালিদের প্র্যাক্টিসে নেমে পড়াটা ইঙ্গিতপূর্ণ। এত কালের নিয়ম ছিল, ট্র্যাভেল ডে-তে দল প্র্যাক্টিসে যায় না। একটি সূত্রের খবর, ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে জয় থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে চায় দল। শোনা গেল কেউ কেউ বলেছেন, ‘‘বিশ্রাম তো আমরা নিলাম। সবাই যে যার মতো ঘুরেছি। চলো, এ বার মাঠে ফেরা যাক। কাজে ফেরা যাক।’’
সাউদাম্পটনে ভারতীয় দলের প্রস্তুতিতে দু’টো জিনিস দেখার ব্যাপারে ইতিমধ্যেই প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এক) সচিন তেন্ডুলকরের পরে মুম্বইয়ের নতুন বিস্ময় বালক পৃথ্বী শ কী রকম ব্যাট করেন এবং দুই) অশ্বিনের চোট কতটা সারল।
দু’টো ব্যাপারই দেখে নেওয়ার সুযোগ থাকছে সোমবার যদি বৃষ্টি এসে প্র্যাক্টিসের পরিকল্পনা বাতিল না করে দেয়। আগ্রহে বহরে অশ্বিনকে টেক্কা দিতে পারেন পৃথ্বী। এমনকি, ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমেও প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছে তাঁকে নিয়ে। পৃথ্বীর কাছে ইংল্যান্ড অবশ্য বিদেশ বিভুঁই নয়। কিশোর বয়স থেকে তিনি এখানে স্কুল ক্রিকেট খেলছেন। এখানে বাড়ি ভা়ড়া নিয়ে থেকে তিনি স্কুল ক্রিকেট খেলেছেন নিজেকে ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিমার্জিত করার জন্য। কে বলতে পারে, চলতি সিরিজেই তাঁর জন্য সুযোগের দরজা খুলে যাবে না?
ইংল্যান্ডের জন্য অবশ্য শুধুই অশান্তির দরজা খোলা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তাদের নতুন উদ্বেগ, জো রুটের চোট। ট্রেন্ট ব্রিজ থেকেই বাঁ হাঁটুতে ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেছিলেন তিনি। তার পর কাউন্টিতে খেলার অনুমতি পেলেও খুব ভাল অবস্থায় নেই ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার। মইন আলিকে ‘স্ট্যান্ডবাই’ হিসেবে বেছে রেখেছে ইংল্যান্ড। সেটা নিয়ে আর এক বিতর্ক কারণ অনেকেই মনে করছেন, মইন কাউন্টিতে এত ভাল ফর্মে রয়েছেন। তাঁকে এমনিতেই দলে ফেরানো উচিত ছিল। এই গ্রীষ্মে একটিও টেস্ট খেলেননি মইন। যদি স্টোকস শেষ পর্যন্ত খেলতে না পারেন সাউদাম্পটনে, বড় ধাক্কা হবে ইংল্যান্ডের। ইতিমধ্যেই জনি বেয়ারস্টোর আঙুলের চোট নিয়ে বিব্রত তারা। বেয়ারস্টোকে সাউদাম্পটনে খেলাতে মরিয়া ইংল্যান্ড। কিন্তু তিনি উইকেটকিপিং করতে পারবেন কি না, এখনও ঠিক নেই। আর একটা তাৎপর্যপূর্ণ খবর, ইংল্যান্ড সাউদাম্পটনে জড়ো হচ্ছে মঙ্গলবার। মানে কোহালিদের আগমনের এক দিন পরে। জো রুটের দলের অনেক ক্রিকেটার কাউন্টির হয়ে খেলে বেড়াচ্ছেন। এটাই বা কেমন? এত বড় সিরিজের মাঝে বিশ্রাম না নিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা? স্টোকসের চোট আছে জেনেও কি করে কাউন্টিতে খেলতে দেওয়া হল?
ইংল্যান্ড গুলিয়ে ফেলছে না তো? নাকি চাপের মুখে মোরিনহো থেকে বেলিস— সকলেই এ রকম খেই হারিয়ে ফেলে? সময় বলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy