গত বৃহস্পতিবার এজবাস্টনে ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট দেখতে এসেছিল বৈভব সূর্যবংশী। চোখের সামনে দেখেছিল শুভমন গিলের দ্বিশতরান এবং ধ্রুপদী টেস্ট ইনিংস। পরে ভারতীয় বোর্ডের এক ভিডিয়োয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ হৃষীকেশ কানিতকরও বলেছিলেন, কী ভাবে সব বলে না চালিয়েও খেলা যায় তা ছেলেদের শেখাবেন। সে কথা তিনি বৈভবদের বলেছেন কি না জানা নেই। তবে শনিবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় এক দিনের ম্যাচে দাপুটে শতরান করতে দেখা গেল বৈভবকে। ধরে খেলার কোনও চেষ্টাই করেনি সে। জোড়া নজির গড়ে ফেলেছে বৈভব। ৭৮ বলে ১৪৩ রান করে আউট হয়েছে সে।
১৪ বছরের বৈভব শতরান করেছে ৫২ বলে। অর্থাৎ প্রায় দুশোর কাছাকাছি স্ট্রাইক রেট ছিল তার। উরস্টারে এই ইনিংসে জোড়া নজির ভেঙে দিয়েছে বৈভব। যুব এক দিনের ক্রিকেটে দ্রুততম ব্যাটার হিসাবে শতরান করেছে। ভেঙে দিয়েছে পাকিস্তানের কাসিম আক্রমের নজির। ২০২২-এ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৬৩ বলে শতরান করেছিলেন কাসিম। বৈভব তাঁর থেকে ১১ বল কম খেলেছে।
পাশাপাশি, যুব এক দিনের ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে শতরান করল বৈভব। ১৪ বছর ১০০ দিন বয়সে শতরান করেছে সে। আগের নজির ছিল বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্তর। তিনি ২০১৩-য় ১৪ বছর ২৪১ দিন বয়সে শতরান করেছিলেন। ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সে শতরানের নজির ছিল সরফরাজ খানের। ২০১৩-য় তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৫ বছর ৩৩৮ দিন বয়সে শতরান করেছিলেন।
ভারতের ইনিংসের ১৯তম ওভারে রালফি অ্যালবার্টের বলে এক রান নিয়ে শতরান পূরণ করে বৈভব। শতরানের আগে কিছুটা ধীরে খেলেছে সে। না হলে আরও আগে শতরান করে ফেলতে পারত। শতরানের পথে ১০টি চার এবং সাতটি ছয় মেরেছে বৈভব। একশো পেরোনোর পরেই লাফ মারে বৈভব। হেলমেট খুলে দর্শকদের উদ্দেশে চুমু ছুড়ে দেয়। দর্শকেরাও হাততালি দিয়ে অভিবাদনে ভরিয়ে দেন তাকে। রোজ রোজ এ রকম ইনিংস চোখের সামনে দেখা যায় না।
আরও পড়ুন:
বৈভবের ইনিংসের শুরুটা হয়েছিল বেশ ধীর গতিতেই। উরস্টারের পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় নেয়। তার পরেই শুরু করে আক্রমণ। বৈভবের শট মাঠের চার ধারে উড়ে যেতে থাকে। স্পিনার হোন বা পেসার, ইংল্যান্ডের কেউই বৈভবের আক্রমণ থেকে বাঁচেননি। তাকে কী ভাবে আটকানো যাবে তার উত্তরই খুঁজে পাননি কেউ। শুরুতে ওপেনার আয়ুষ মাত্রে ফিরে গেলেও বিহান মলহোত্রের সঙ্গে জুটি বেধে শতরান সম্পূর্ণ করে বৈভব।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিটি যুব এক দিনের ম্যাচেই রান পেয়েছে বৈভব। প্রথম দু’টি ম্যাচে অল্পের জন্য অর্ধশতরান পায়নি। যথাক্রমে ৪৮ এবং ৪৫ রান করে। তৃতীয় ম্যাচে শতরানের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েও তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারেনি। ৮৬ রানে আউট হয়ে যায়। অবশেষে চতুর্থ ম্যাচে স্বপ্নপূরণ হল বৈভবের।