Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
State news

‘এ কী সাজা দিলেন বিচারক!’, ফাঁসি চেয়ে হাইকোর্টে যাচ্ছেন অনুপমের বাবা-মা

পছন্দ করে যাকে ছেলের বৌমা করে ঘরে তুলেছিলেন, প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে সেই বৌমাই ছেলেকে নৃশংস ভাবে খুন করে।

সাজা শোনার পর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনুপম সিংহের বাবা-মা। —নিজস্ব চিত্র।

সাজা শোনার পর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনুপম সিংহের বাবা-মা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৯ ১৪:৪৯
Share: Save:

আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যাচ্ছেন অনুপম সিংহের বাবা-মা। শুক্রবার বারাসত ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মনুয়া ও তার প্রেমিক অজিতের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণার পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তাঁরা।

পছন্দ করে যাকে ছেলের বৌমা করে ঘরে তুলেছিলেন, প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে সেই বৌমাই ছেলেকে নৃশংস ভাবে খুন করে। এই মামলায় ২ বছর ধরে আইনি লড়াই লড়ার পর বৃহস্পতিবার কল্পনা সিংহের ছেলে অনুপমের খুনিরা দোষী সাব্যস্ত হয়। বারাসত চতুর্থ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক তাদের দু’জনকেই যাবজ্জীবন সাজা দেন। কিন্তু সেই বিচারে খুশি হননি অনুপম সিংহের বাবা-মা এবং আত্মীয়-পরিজন। মনুয়া এবং তার প্রেমিক অজিতের ফাঁসি চেয়ে এ বার হাইকোর্টে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

এ দিন সাজা ঘোষণার পরই বারাসত আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অনুপম সিংহের আত্মীয়-পরিজন, বন্ধুরা। কান্নায় ভেঙে পড়েন খুন হওয়া অনুপম সিংহের মা এবং বাবা। আদালতের বাইরে অনুপমের মা কল্পনা সিংহ বলেন, ‘‘আমরা সঠিক বিচার পাইনি। এ কী বিচার করলেন বিচারক! আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব।’’ আর অনুপমের বাবা জানান, এই বিচারে ভারতের আইনব্যবস্থার প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা উঠে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এখানে রাজনৈতিক চাপই সবচেয়ে বড় বিষয়। এই বিচার নিয়ে আমার আর কিছু বলার নেই। আমরা চাইছিলাম খুনিদের ফাঁসি হোক। আমাদের আবার লড়াই করতে হবে আইনের সঙ্গে।’’

আরও পড়ুন: পাশাপাশি বসতে চেয়ে চিৎকার মনুয়া ও অজিতের

অনুপমের দিদিও এই বিচারে অখুশি। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘আমার ভাইকে যে ভাবে নৃশংস ভাবে মারা হয়েছে, তাতে ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। ওরা আমার নিরাপরাধ ভাইকে মেরেছে। আমরা চাই তাদের ফাঁসি হোক।’’ অনুপম খুন হওয়ার পর থেকে তাঁদের নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে এ দিন অভিযোগ করেছেন তিনি। তিনি জানান, তাঁদের বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য একাধিক বার ভয় দেখানো হয়েছে। জেল থেকে বাইরে বেরিয়ে অজিত তাঁদেরও খুন করতে পারে, আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁদের আরও অভিযোগ, মামলা চলাকালীন সরকারি আইনজীবীকে বদলে দেওয়া হয়। নতুন আইনজীবী মামলাটা গুরুত্ব দিয়ে দেখেননি। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছিলেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: মনুয়া ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, অনুপমের মা বললেন, ‘সুবিচার পেলাম না’

এ দিন সাজা ঘোষণার সময় কোর্টরুমে নিয়ে আসা হয় মনুয়া এবং অজিতকে। তাদের শেষ বারের মতো বলার সুযোগ দেন বিচারক বৈষ্ণব সরকার। মনুয়া বলেন, ‘‘আমি নির্দোষ। আমাকে টার্গেট করা হয়েছে। যে আসলে খুন করেছে, সে বাইরে রয়েছে।’’ একই ভাবে অজিতও খুনের কথা স্বীকার করেনি। তৃতীয় এক ব্যক্তির দোষে আড়াই বছর ধরে তাকে জেল খাটতে হচ্ছে, দাবি অজিতের।

২০১৭ সালের ২ মে বেসরকারি সংস্থার কর্মী অনুপমকে তাঁর বাড়িতেই নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। তদন্তে নেমে প্রথমে ধোঁয়াশায় ছিল পুলিশ। পরে নানা তথ্যের উপর ভিত্তি করে মনুয়া ও অজিত ওরফে বুবাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE