Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চিকিৎসায় বাধা পেয়ে রণক্ষেত্র বর্ধমান মেডিক্যাল, ১৫ ঘণ্টা ‘যুদ্ধ’ চলল জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে

এনআরএস-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে বর্ধমানে শুরু হয় জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি।

মারমুখী: বর্ধমান মেডিক্যালে বাঁশ হাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা। ফাইল চিত্র।

মারমুখী: বর্ধমান মেডিক্যালে বাঁশ হাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা। ফাইল চিত্র।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০২:০১
Share: Save:

বদলে গেল রণক্ষেত্র। কলকাতার এনআরএস থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল। ‘যুদ্ধ’ও চলল প্রায় ১৫ ঘণ্টা। এক দিকে, জুনিয়র ডাক্তারেরা। অন্য দিকে, কখনও রোগীদের পরিজন, পুলিশ, কখনও ‘বহিরাগত’। খোদ সুপার উৎপল দাঁ নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। তাঁকে ফোনে বলতে শোনা যায়, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’’

এনআরএস-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে বর্ধমানে শুরু হয় জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। সন্ধ্যায় জরুরি বিভাগের গেট আটকে বিক্ষোভ হয়। রাতে এক রোগী জুনিয়র ডাক্তারদের বাধায় ঢুকতে পারেননি এই অভিযোগে শুরু অশান্তি। ঢিলের আঘাতে তিন জুনিয়র ডাক্তার জখম হন। পাশেই পুলিশ ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও কেন আক্রান্ত হতে হল, তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে ডাক্তারদের। পুলিশের অভিযোগ, সেই সময় এক কনস্টেবল আহত হন। সুপারের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি তখনকার মতো শান্ত হয়। তবে ডাক্তারদের অভিযোগ, কনস্টেবল আক্রান্ত হওয়ার ‘ক্ষোভে’ ক্যাম্প থেকে পুলিশ সরিয়ে নেওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) প্রিয়ব্রত রায় অবশ্য বলেন, ‘‘অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক নয়। ডিএসপি, আইসি-রা হাসপাতালেই ছিলেন।’’

বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ জুনিয়র ডাক্তারেরা ফের জরুরি বিভাগের পাশে অবস্থান শুরু করেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় হাসপাতালের সব দরজা। তার মধ্যেই মঙ্গলকোটের এক রোগিণী হাসপাতালে ঢুকতে গেলে তাঁকে বাধা দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ফের সংঘর্ষ বাধে। জখম হন তিন জুনিয়র ডাক্তার। ডেন্টাল কলেজের ছাত্র শুভজিৎ মিদ্দাকেও হাসপাতালের গেটের বাইরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তার পরেই জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশকে বাঁশ, লাঠি, ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে ছুটতে দেখা যায়। অভিযোগ, তাঁরা হাসপাতাল লাগোয়া অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের ইউনিয়ন অফিসে ভাঙচুর চালান। জুনিয়র ডাক্তারদের পাল্টা অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের মদতে বহিরাগতেরা বাইরে থেকে ঢিল, আধলা ইট ছুড়েছেন।

বর্ধমান মেডিক্যালের সুপার উৎপল দাঁ। —নিজস্ব চিত্র।

এর পরে দফায় দফায় সুপারকে নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে চেম্বারে আটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভও দেখানো হয়। দুপুর ২টো নাগাদ বৈঠক শুরু হয়। পরে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বলেন, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।’’ জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে ছাত্রনেতা সৌরভ দেব বলেন, ‘‘আমাদের সাত জন আহত। কর্মবিরতি চলবে। এনআরএস থেকে কর্মবিরতি উঠলে, পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, কোনও ঘটনারই নির্দিষ্ট অভিযোগ হয়নি। তিন-চার জনকে আটক করা হয়েছে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Medical College Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE