Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

নেওড়াভ্যালির জঙ্গলে হতে পারে বাঘসুমারি

শুধু শীতেই, নাকি বছরের অন্যান্য সময়েও নেওড়াভ্যালির জঙ্গল রয়্যাল বেঙ্গলের নিশ্চিন্ত ডেরা এবার খতিয়ে দেখবে বন দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:৪৩
Share: Save:

শুধু শীতেই, নাকি বছরের অন্যান্য সময়েও নেওড়াভ্যালির জঙ্গল রয়্যাল বেঙ্গলের নিশ্চিন্ত ডেরা এবার খতিয়ে দেখবে বন দফতর। নেওড়াভ্যালির জঙ্গলে ট্র্যাপ ক্যামেরাগুলি শুধু শীতেই বসানো থাকে। বৃষ্টির ভয়ে মার্চ মাস পড়তে না পড়তেই ক্যামেরাগুলি খুলে নেওয়া হয়। বর্ষা মিটলে শরতের শেষে ফের বসানো হয় ক্যামেরাগুলি। কাজেই এই সময়ে পাহাড়ি এই জঙ্গলে বাঘের আগমন ঘটে কিনা, তা নিয়ে বন দফতরের কাছে কোনও তথ্যই নেই! বনকর্তাদের একাংশ অবশ্য ‘আগমন’ শব্দে আপত্তি করছেন। তাঁদের দাবি, এমনও তো হতে পারে নেওড়ার জঙ্গলেই বাঘের নিত্য বসবাস। নিশ্চিত হতে নেওড়ার জঙ্গলে দ্রুত বাঘ সুমারি করার সিদ্ধান্ত হতে চলেছে বলে বন দফতরের একটি সূত্রের দাবি।

রাজ্যের এক বনকর্তার কথায়, “সুমারি নিয়ে এ নিয়ে এখনও শুধুই মৌখিক আলোচনা হয়েছে। তবে নেওড়ার জঙ্গলকে বাঘ সারাবছরের ঠিকানা বানিয়েছে কিনা তা জানতেই হবে। কিছুদিন পর পর ট্র্যাপ ক্যামেরার ছবি আসে। মনে হচ্ছে, শিগগিরি আরও কিছু ছবি মিলবে। প্রথমে দেখতে হবে দু বছর আগে যে বাঘের ছবি মিলেছিল, ফের সেটিরই ছবি উঠল কিনা।” ২০১৭ সালে প্রথম বাঘের ছবি মিলেছিল নেওড়ার জঙ্গলে। সেই ছবির সঙ্গে এই ছবির মিল দেখতে প্রথমেই বাঘের গায়ের ডোরা মেলাতে হবে। সেই কাজ উত্তরবঙ্গে বা রাজ্যে সম্ভব নয় বলে বন দফতর সূত্রের খবর। ছবি পাঠাতে হবে জাতীয় গবেষণাগারে।

সিকিম এবং ভূটানের পাহাড়ি জঙ্গলে বাঘ রয়েছে বলে বন দফতরের কাছে তথ্য রয়েছে। জঙ্গলপথে এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে ঘোরাফেরা করে পশুর দল। সেই দলে বাঘও রয়েছে। শীতকালে পাহাড়ের উঁচু এলাকায় হাড়কাঁপানো শীতে বাঘও কষ্ট পায় বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি। এক বনকর্তার কথায়, “প্রবাদে কিন্তু মাঘের শীতে বাঘের কাঁপুনির কথা প্রচলিত।” নেওড়ার জঙ্গলে বাঘের খাদ্যের অভাব নেই। সম্বর সহ কয়েক ধরনের হরিণ রয়েছে। বাঘের প্রিয় ‘শিকার’ জঙ্গলি শুয়োর রয়েছে। শীতকালে এসে নেওড়ার জঙ্গলে তাই বাঘের থিতু হয়ে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয় বলে মনে করা হচ্ছে। বনদফতরের বন্যপ্রাণী বিভাগের জলপাইগুড়ির ডিএফও নিশা গোস্বামীর কথায়, “সাধারণত বড় জায়গা নিয়ে বাঘের আবাসস্থল হয়। এখন বলা হচ্ছে ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়েও বাঘ থাকতে পারে। তাই সিকিম বা ভূটানের উঁচু পাহাড়ি জঙ্গলে খানিকটা সরে এলেই আমাদের নেওড়াভ্যালির জঙ্গল। এই জঙ্গল তাই বাঘের বিচরণস্থলে ঢুকে পড়া আশ্চর্য কিছু নয়।”

সমস্যা তৈরি করেছে বর্ষা। গ্রীষ্মের শুরু থেকেই নেওড়াভ্যালির মতো উঁচু জায়গায় বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। সে সময় ট্র্যাপ ক্যামেরা রাখে না বন দফতর। কী ভাবে সেই সময়ে বাঘ দর্শন হয় আপাতত সেই চিন্তায় রয়েছেন বনকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Neoravali Tiger Royal Bengal Tiger
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE