ছবি: পিটিআই।
রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আর বাড়েনি বলে জানাল নবান্ন।
শনিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছ’জন উত্তরবঙ্গের একই পরিবারের বাসিন্দা। বাকি পাঁচ জন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় থাকেন। পশ্চিমবঙ্গে ৪৯টি সক্রিয় করোনা কেস রয়েছে। মৃতের সংখ্যা তিনই রয়েছে। অন্য অসুখে চার জন মারা গিয়েছেন।’’
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার জনের দ্বিতীয় দফার নমুনা নেগেটিভ আসায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে শনিবার। এই চার জন হলেন, রাজ্যের দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত, তাঁর সংস্পর্শে আসা পরিচারক, আলিপুরের বাসিন্দা এক মহিলা এবং এগরা যোগে আক্রান্ত বৃদ্ধা। এ ছাড়া, তেহট্টের একই পরিবারের পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনের দ্বিতীয় দফার নমুনা নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু ওই পরিবারের ন’মাসের শিশু এবং ১১ বছরের এক বালক এখনও আক্রান্ত, তাই তাদের ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ দিন পাঁচ জন আক্রান্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠিয়েছেন বেলেঘাটা আইডি কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যে রক্ষাকবচ
পিপিই কিট
• অতিরিক্ত ১৩৫০০ প্রাপ্তি
• মোট ১ লক্ষ ৮০ হাজার ১০০টি
এন ৯৫ মাস্ক
• এ পর্যন্ত ৬৫৭৫০
দ্বিস্তরীয়-ত্রিস্তরীয় মাস্ক
• আরও ৫০০০০ মিলেছে
হাতশুদ্ধি
• আরও ৮ হাজার লিটার
• মোট ৩৩৬০০ লিটার
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য-চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী জানান, সুস্থ হয়ে ওঠার নিরিখে রাজ্যের অবস্থা ভাল। তাঁর কথায়, ‘‘আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে মাত্র দু’জনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমাদের চিকিৎসকদের অসুবিধা হয়েছিল। তবে তাঁদেরও অন্য অসুখ ছিল। বাকিরা সুস্থ হয়ে ওঠার পথে। এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন কেউ আশঙ্কাজনক অবস্থায় নেই।’’ একই সঙ্গে চিকিৎসাধীনদের ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘যদিও খুব কম দিনের অভিজ্ঞতা। তবে সামগ্রিক ভাবে ছবিটা আশাব্যঞ্জক।’’
আরও পড়ুন: ‘দীপ জ্বালো’ কর্মসূচি নিয়ে সংশয় বিজেপির?
প্রসঙ্গত, কোনও কোনও সময়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের পরিসংখ্যানের মধ্যে ফারাক দেখা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কোনটি গ্রহণ করা হবে? এই প্রশ্নের জবাবে মুখ্যসচিবের বক্তব্য, ‘‘এমন সময়ে কেউ পরিসংখ্যান বাড়াবে বা কমাবে না। খুবই সিরিয়াস বিষয়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের যাঁরা পরিসংখ্যান দিল্লিতে পাঠাচ্ছেন, তাঁদের দেখতে বলব রাজ্য এবং কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে কেন তফাত রয়েছে।’’
এক নজরে*
• বাড়িতে নজরবন্দি ৫২,০৮০
• নজরদারি সম্পূর্ণ হয়েছে ৩০৩৬
• মোট হাসপাতাল আইসোলেশনে ১১২৫
• হাসপাতাল আইসোলেশন থেকে ছুটি পেয়েছেন ৭৮৬
• হাসপাতাল আইসোলেশনে এখনও রয়েছেন ৩৩৯
• কোভিড-১৯ পরীক্ষা ১০৪২
• কোভিড-১৯ আক্রান্ত ৪৯
* ৪ এপ্রিল, ২০২০ পর্যন্ত হিসেব। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী।
মুখ্যসচিব এ দিন জানান, রাজ্যে এ পর্যন্ত মোট ১০৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। নিজামুদ্দিন ফেরত তাঁদের এক কর্মীর কোভিড ধরা পড়েছে বলে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে কোনও তথ্য রয়েছে কি না তা মুখ্যসচিবের কাছে
জানতে চাওয়া হয়। মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘এগুলো স্বাস্থ্য দফতর দেখে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক জনের দেহে করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। তাঁকে সেখানকার বড়মা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। আরও একজন যিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁকে আইডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’ ওই ব্যক্তির পরিজন ছাড়াও বন্দরের আধিকারিক-সহ ১০ জনকে হলদিয়ার কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা আক্রান্তের গতিবিধি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের তথ্য স্বাস্থ্য দফতরের কার সঙ্গে যোগাযোগ করলে পাওয়া যাবে? মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনায় খুঁটিনাটি তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। প্রতিটি কেসের উপরে নজরদারি হচ্ছে কি না সেটা দেখা উচিত। আক্রান্ত কোন রাজ্য, কোন প্রান্ত থেকে এসেছেন, তার থেকে ট্র্যাকিং আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’ একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি এ-ও বলেন, ‘‘কিছু তথ্য জানাচ্ছি না মানে এই নয় তথ্য গোপন করা হচ্ছে। যা পাবলিক ডোমেনে থাকা উচিত তা জানানো হচ্ছে। যে তথ্য সকলের জন্য নয়, তা পাবলিক ডোমেনে দেওয়া হচ্ছে না। ওয়েবসাইটে তথ্য না দেওয়ার পিছনে কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে বা প্রকৃত ছবি জানানো হচ্ছে না, দয়া করে এ রকম ভাববেন না।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy