ছবি পিটিআই।
ছ’মাসের চাল রেশনে বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কুপন ও পুরনো কার্ড নিয়ে এলেও দিতে হচ্ছে বাড়তি চাল। এর জেরে আগামী ছ’মাসের চাল তিন মাসেই বিলি করে দিতে বাধ্য হচ্ছে খাদ্য দফতর। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, গণবণ্টনের ভাঁড়ারে যে-খাদ্যশস্য আছে, তা দিয়ে জুন পর্যন্ত চলবে। তার পরে কী হবে?
জুলাই-অগস্ট-সেপ্টেম্বরের চালের জোগান অব্যাহত রাখতে বিকল্প পথের খোঁজ করছে খাদ্য দফতর। অতিরিক্ত চাল সংগ্রহ, এফসিআই-কে অনুরোধ-উপরোধ করে তাদের কাছ থেকে চাল নেওয়া কিংবা খোলা বাজার থেকে চাল কেনার কথা ভাবছে খাদ্য ভবন। জোগান ঠিক রাখার জন্য প্রায় ৪.৫ লক্ষ মেট্রিক টন চাল কিনতে হবে এবং সেই খাতে খরচ হতে পারে ১৩০০ কোটি টাকা। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, এখন এই বাড়তি টাকা জোগান দেওয়া খুব মুশকিল।
নবান্নের খবর, এর আগে কখনও গণবণ্টন ব্যবস্থা চালাতে বাজার থেকে চাল কেনেনি রাজ্য। মূলত ধান সংগ্রহের পরে চালকলে ভাঙিয়েই রাজ্যের ভাঁড়ারে চাল জমা করা হয়। তা বিলি করা হয় রেশনে। কিন্তু অতীতে কখনও করোনার মতো মহামারির মুখেও পড়েনি রাজ্য। তাই সব বিকল্পই খোলা রাখছে খাদ্য ভবন। তারা জানাচ্ছে, রাজ্যে কমবেশি ১০ কোটি মানুষকে দিতে প্রতি মাসে রেশনে যে-চাল লাগে, এখন তার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের ছ’কোটি লোকের জন্য মাসে এক কোটি ৩৪ লক্ষ মেট্রিক টন, মিড-ডে মিল আর আইসিডিএস সেন্টার চালাতে ৩১ হাজার টন এবং রাজ্যের রেশন চালাতে দু’লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল লাগছে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বৃহস্পতিবার টুইটে জানান, এপ্রিল-মে মিলিয়ে চাল বিলি হয়েছে আট লক্ষ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন। কেন্দ্রীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনের ছ’কোটি উপভোক্তার জন্য দিল্লি এখনও পর্যন্ত পাঁচ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন চাল দিয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চাল সংগ্রহের কাজ চলছে। চালকল থেকে এখনও সাত লক্ষ মেট্রিক টন চাল পাওয়ার কথা। অন্নদাত্রী প্রকল্পেও চাষিরা ধান বেচতে শুরু করেছেন। ফলে আশা করছি, ধান সংগ্রহ করে তা ভাঙিয়ে চালের জোগান মেটানো যাবে। আমরা এখনও বাজার থেকে চাল কেনার পক্ষপাতী নই।’’
আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণ রেখেই বিধি শিথিলের পক্ষে নবান্ন
কিন্তু এত চাল পাওয়া যাবে কি? খাদ্যমন্ত্রী জানান, বর্ধমানের দুই শতাধিক চালকল ভিন্ রাজ্যে বা বাংলাদেশে চাল পাঠায়। রাজ্যের সঙ্কটের সময় তারা নিশ্চয় চাল দেবে।
খাদ্য দফতরের একাংশ জানাচ্ছেন, এফসিআইয়ের কাছ থেকে নিলে এই চাল ১৩০-১৪০ কোটি টাকায় পাওয়া যেত। তিন টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল কিনে পরে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে পুরো টাকা পেলে মেটানো যেত এফসিআইয়ের প্রাপ্য। খাদ্য ভবনের শীর্ষ মহলের বক্তব্য, এফসিআইয়ের চালের গুণমান ভাল নয়। তা ছাড়া রেশন বিলিবণ্টন এখন রাজনৈতিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি দিল্লির চাল নিয়ে রাজ্যের রেশন চালাতে হয়, তা হলে বিরোধীরা হইচই করতে পারেন। তার চেয়ে ভাল চাল সরাসরি বাজার থেকে কিনে গ্রহীতাদের দেওয়া শ্রেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy