Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সব বুথই স্পর্শকাতর, দাবি বিরোধীদের, মমতা বললেন, এটা রাজ্যের অপমান

রাজ্যে সাত দফায় নির্বাচন করছে নির্বাচন কমিশন। আশির দশকে পঞ্জাবকে ‘অতি সংবেদনশীল’ ঘোষণা করা হয়েছিল। কমিশনের উপরে চাপ বাড়াতেই আজ সেই নজির টেনে বিজেপি নেতারা পশ্চিমবঙ্গকে ‘অতি সংবেদনশীল’ রাজ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান।

লোকসভা নির্বাচনের সময়ে গোটা রাজ্যকে ‘অতি সংবেদনশীল’ ঘোষণা করার জন্য আজ নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাল বিজেপি।—ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের সময়ে গোটা রাজ্যকে ‘অতি সংবেদনশীল’ ঘোষণা করার জন্য আজ নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাল বিজেপি।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০৩:১১
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গের সব ক’টি বুথই স্পর্শকাতর— ওই যুক্তি দেখিয়ে লোকসভা নির্বাচনের সময়ে গোটা রাজ্যকে ‘অতি সংবেদনশীল’ ঘোষণা করার জন্য আজ নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাল বিজেপি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হানাহানির নজির তুলে ধরে ওই দাবি জানান বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ, নির্মলা সীতারামন, জে পি নড্ডারা। প্রতিটি বুথেও আধাসেনা মোতায়েনের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। একই দাবিতে আজ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বও। বিরোধীদের এই দাবির তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এটা রাজ্যের অপমান।

রাজ্যে সাত দফায় নির্বাচন করছে নির্বাচন কমিশন। আশির দশকে পঞ্জাবকে ‘অতি সংবেদনশীল’ ঘোষণা করা হয়েছিল। কমিশনের উপরে চাপ বাড়াতেই আজ সেই নজির টেনে বিজেপি নেতারা পশ্চিমবঙ্গকে ‘অতি সংবেদনশীল’ রাজ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান। বুধবার রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ় আফতাবের সঙ্গে দেখা করে একই দাবির পাশাপাশি সব বুথে আধাসেনা মোতায়েনের দাবি জানান কংগ্রেসের সোমেন মিত্র, প্রদীপ ভট্টাচার্যরাও। বিরোধীদের ওই দাবির তীব্র প্রতিবাদ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি মানসিক রোগী হয়ে গিয়েছে। এর পরে কোনও দিন নির্বাচন কমিশনকে বলবে, প্রতি বুথে গিয়ে ভোট দিয়ে এসো! এ সব কথা বলে রাজ্যকে অসম্মান করা হচ্ছে।’’

আজ দলের ৪২ জন প্রার্থীর সঙ্গে বৈঠকের পরে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে মমতা বলেন, ‘‘ওঁরা কি ভেবেছে, আমাকে কন্ট্রোল করবে? পারবে না।’’ মমতার কথায়, ‘‘উপনির্বাচনে কোনও গোলমাল হয়নি। তাতেও ওরা নির্লজ্জের মতো আমাদের অসম্মান করছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করালেও ৪২টি আসনেই দল জিতবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সম্প্রতি কলকাতার পুলিশ কমিশনার বনাম সিবিআই বির্তকে মমতার কেন্দ্র-বিরোধী ধর্নায় রাজ্য পুলিশের বহু কর্তাকে হাজির থাকতে দেখা গিয়েছিল। আজ কমিশনের কাছে সেই ছবি দেখিয়ে ওই পুলিশ অফিসারদের বদলির দাবি জানায় বিজেপি। রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন তৃণমূলের দাসে পরিণত হয়েছে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বও অভিযোগ করেন, যে পুলিশকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাড়িতে ছুটে যান, সেই পুলিশ কী ভাবে নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে? এমনকি, আইনশৃঙ্খলার রিপোর্টগুলিও রাজ্যের কথায় জেলাশাসকেরা তৈরি করছেন বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। সাধারণত, এই রিপোর্টের ভিত্তিতে ভোটের পাঁচ দিন আগে স্পর্শকাতর বুথের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন পর্যবেক্ষক। অভিযোগের উত্তরে অতিরিক্ত সিইও সঞ্জয় বসুর বক্তব্য, ‘‘আমাদের কিছু বলার নেই।’’

আরও পড়ুন: স্বচ্ছ থাকুন, প্রার্থীদের নির্দেশ দিলেন মমতা

পাশাপাশি রাজ্যে পুলিশ পর্যবেক্ষক, সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য মিডিয়া পর্যবেক্ষক এবং গোটা রাজ্যের উপর নজর রাখার জন্য এক জন পর্যবেক্ষক নিয়োগের দাবি তুলেছে বিজেপি। তাঁদের যুক্তি, অতীতে বিহারে কে জে রাও এবং বঙ্গে আফজল আমানউল্লার মতো ভিন রাজ্যের আমলাকে পর্যবেক্ষক করে পাঠানোর নজির রয়েছে।

আরও পড়ুন: বিরবাহার বিরুদ্ধে প্রার্থী বিরবাহাই!

সংবাদমাধ্যমের উপর নজরদারি আসলে কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণের ‘চক্রান্ত’ বলে অভিযোগ করে মমতার বক্তব্য, ‘‘নির্বাচন কমিশন একা বিজেপির নয়। তারা কী ভাবে সংবাদমাধ্যমের জন্য পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে? এটা সমগ্র সংবাদমাধ্যমের অপমান।’’ কমিশনের যুক্তি, সংবাদমাধ্যমের জন্য পর্যবেক্ষক নিয়োগ নতুন নয়। অতীতেও হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Mamata Banerjee Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE