Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal News

রাহুল গাঁধীর হস্তক্ষেপে কংগ্রেসে লক্ষ্মণ শেঠ, প্রার্থী হচ্ছেন সেই তমলুকেই

লক্ষ্মণ শেঠ যে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন, সে জল্পনা ২০১৮ সাল থেকেই চলছিল।

কংগ্রেসে যোগ দিলেন লক্ষ্মণ শেঠ। —নিজস্ব চিত্র

কংগ্রেসে যোগ দিলেন লক্ষ্মণ শেঠ। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯ ১৭:৫৭
Share: Save:

দীর্ঘ টানাপড়েনে ইতি। কংগ্রেসে যোগ দিলেন লক্ষ্মণ শেঠ। এককালের দাপুটে সিপিএম নেতা তথা তমলুকের প্রাক্তন সাংসদকে টিকিট দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। তমলুকেই লক্ষ্মণকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে এবং সে সিদ্ধান্ত খোদ রাহুল গাঁধী নিয়েছেন, বিধান ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে বৃহস্পতিবার এ কথা জানালেন সোমেন।

লক্ষ্মণ শেঠকে কংগ্রেসে স্বাগত জানানোর জন্যই এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তমলুক তথা পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকা থেকে লক্ষ্মণ অনুগামীরা ভিড় জমিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতরে। লক্ষ্মণকে পাশে নিয়ে সোমেন মিত্র দাবি করেন, ‘‘প্রাক্তন সাংসদের সঙ্গে তাঁর দু-আড়াই হাজার অনুগামী আজ কংগ্রেসে যোগ দিলেন।’’

লক্ষ্মণ শেঠ যে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন, সে জল্পনা ২০১৮ সাল থেকেই চলছিল। পুজোর পর থেকেই শোনা যাচ্ছিল, তমলুকের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ যোগ দিতে পারেন কংগ্রেসে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও যে লক্ষ্মণকে দলে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ছিলেন, তা-ও স্পষ্ট ছিল। তমলুকে বা পূর্ব মেদিনীপুরে কংগ্রেসের সাংগঠনিক অবস্থা এখন যে রকম, তাতে লক্ষ্মণ দলে যোগ দিলে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই, মত ছিল সোমেনের। সোমেনের ছেলে তথা যুব কংগ্রেস নেতা রোহন মিত্রকেও ঘনিষ্ঠ মহলে লক্ষ্মণের যোগদানের পক্ষে সওয়াল করতে শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু নন্দীগ্রাম পর্বে পূর্ব মেদিনীপুরে তো বটেই, গোটা বাংলাতেই প্রবল নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল যে নেতার, তাঁর জন্য কংগ্রেসের দরজা খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরী খুব একটা উৎসাহী ছিলেন না। আর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান খোলাখুলি লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন। প্রাক্তন সিপিএম সাংসদকে কংগ্রেসে স্বাগত জানানোর তীব্র বিরোধিতা করতে শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও আপত্তিই শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকল না। কারণ কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গাঁধী নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লক্ষ্মণের ব্যাপারে।

আরও পড়ুন: ২৯ দিন পর অনশন প্রত্যাহার এসএসসি-র চাকরিপ্রার্থীদের

আরও পড়ুন: কমিশনের চিঠি তৃণমূলকে, অনুব্রত বললেন, ‘ভুল ব্যাখা, প্রসাদের নকুলদানা বলব এ বার’

সোমেন মিত্র এ দিন জানান, ২৫ মার্চ দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী নিজেই জানিয়ে দেন যে, লক্ষ্মণ শেঠকে দলে নেওয়া হবে এবং তিনিই তমলুক থেকে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সোমেনের কথায়, ‘‘সর্বভারতীয় সভাপতি যখন সিদ্ধান্ত নেন, তখন তার বাইরে যাওয়ার আর কোনও জায়গাই থাকে না।’’ তিনি জানান, ২৫ মার্চই লক্ষ্মণের কংগ্রেসে যোগদান এক রকম হয়ে গিয়েছিল, এ দিন বিধান ভবনে তাকে এনে যোগদানের ঘোষণাটা করা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরে নিজের পৃথক দল গড়েছিলেন লক্ষ্মণ শেঠ। সে দল নির্বাচনে খুব একটা দাগ কাটতে পারেনি। পরে তিনি বিজেপি-তে যোগ দেন। কিন্তু সেখানে বেশি দিন টিকতে পারেননি। বিজেপি ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করার পর থেকে বেশ কিছু দিন দলহীনই ছিলেন লক্ষ্মণ। লোকসভা নির্বাচনের মুখে রাহুল গাঁধীর হস্তক্ষেপে কংগ্রেসে সামিল হয়ে গেলেন তিনি, নিশ্চিত করে ফেললেন হাত চিহ্নের টিকিটও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Laxman Seth Congress Somen Mitra CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE