Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ছক বদলালেন বিবেক, বাহিনী ৯২% বুথেই

বিবেক মনে করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতেই ভোটারদের মনে ভরসা বাড়ে। ফলে একটি বুথে চার জন জওয়ান থাকা আর আট জওয়ান থাকা একই ব্যাপার।

বিবেক দুবে। —ফাইল চিত্র।

বিবেক দুবে। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৫৯
Share: Save:

তলব পেয়ে দিল্লি গিয়ে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চকে তিনি বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে পরবর্তী পর্বগুলির ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা পরিবর্তন করা দরকার। কমিশন তা মঞ্জুর করার পরেই রাজ্যে ফিরে তৃতীয় দফা থেকে বুথে আধাসেনা দেওয়ার ছক বদলে দিয়েছেন রাজ্যের জন্য নিযুক্ত বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। নতুন ব্যবস্থায় ৯২.০৩% বুথে বাহিনী থাকবে বলে কমিশন সূত্রের খবর।

ভোটকর্মী, সাধারণ ভোটার, বিশিষ্ট নাগরিক এবং বিরোধী দল— এ রাজ্যে অবাধ ভোটের জন্য সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি সকলের। কিন্তু সারা দেশে ভোট চলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক চাইলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যায় আধাসেনা পাঠাতে পারছে না। অথচ তৃতীয় দফার ভোটে বাংলার পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্রের সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী না-হলে শান্তিতে ভোট সম্ভব নয় বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পান বিবেক। হাতে বাহিনী কম থাকলেও যথাসম্ভব বেশি বুথে যাতে তাদের পাঠানো যায়, সেই জন্য ব্যতিক্রম হিসেবে তিনিই ভেঙে দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের তৈরি করা ‘বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা’। প্রথমে রাজি না-হলেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তারা তা মেনে নিয়েছেন।

রাজ্য পুলিশের পরিকল্পনা অনুযায়ী যে-সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে একটি বা দু’টি বুথ আছে, সেখানে চার জন করে আধাসেনা রাখা হচ্ছিল। তিনটি বুথ সংবলিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে আট, পাঁচ ও ছ’টি বুথের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ১২,, আটটি বুথের কেন্দ্রে ১৬ এবং ন’টি বুথের কেন্দ্রে ২০ জন আধাসেনা রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কমিশন সূত্রের দাবি, এ ভাবেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা হয়ে এসেছে বরাবর। প্রতি নির্বাচনে যে-ভাবে বাহিনী রাখা হয়, এ বার সেই ভাবেই তা রাখা হয়েছিল।

বিবেক মনে করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতেই ভোটারদের মনে ভরসা বাড়ে। ফলে একটি বুথে চার জন জওয়ান থাকা আর আট জওয়ান থাকা একই ব্যাপার। ছোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে বিশাল সংখ্যক আধাসেনাকে আটকে না-রেখে বিভিন্ন বুথে ছড়িয়ে দিতে নির্বাচন সদনকে প্রস্তাব দেন তিনি। দ্বিতীয় দফার ভোটের পরে দিল্লি ডেকে পাঠানোয় বিবেক সেখানে গিয়ে কমিশনের ফুল বেঞ্চের মুখোমুখি হয়ে জানান, পশ্চিমবঙ্গের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা বদল করতে চান তিনি।

সম্মতি পেয়ে রাজ্যে ফিরে এসে পুলিশের পরিকল্পনা পরিবর্তন করেন বিবেক। ‘‘বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর চার জন জওয়ানই গোলমাল ঠেকাতে যথেষ্ট। তাই অধিকাংশ বুথে জওয়ান দিতে পুরনো পরিকল্পনা বদলেছি। তার ফলেই ৩২৪ কোম্পানি বাহিনী দিয়ে ৯২.০৩% বুথে আধাসেনা মোতায়েন করা সম্ভব হয়েছে। এর পরেও কুইক রেসপন্স টিমে বহু সংখ্যক জওয়ান থাকবে,’’ বলেন বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বাহিনী মোতায়েনের নতুন পরিকল্পনা কেমন হয়েছে?

কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে তিনটি বুথের ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে আট জন জওয়ান রাখা হচ্ছিল। তৃতীয় দফায় একটি, দুই বা তিনটি বুথের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে চার জন করেই জওয়ান থাকবেন। একই বুথে বেশি জওয়ান না-রেখে তাঁদের ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। চারটি বুথের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে আট জন জওয়ান থাকতেন, এ বার থাকবেন ছ’জন। পাঁচ বা ছ’টি বুথের ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ১২ জন আধাসেনা রাখার পরিকল্পনা ছিল। সেই সংখ্যাও আনুপাতিক হারে কমানো হচ্ছে। আট বা নয় বুথের কেন্দ্রে থাকবেন ১৬ জন জওয়ান।

বিবেক বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান দেখলেই ভোটারেরা ভরসা পাচ্ছেন। তাই প্রচলিত নিয়ম ভেঙে অধিক সংখ্যক বুথে তাঁদের মোতায়েন করা হচ্ছে। তৃতীয় দফার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরের পর্যায়ে আরও নিখুঁত ভাবে জওয়ান রাখা হবে। সব বুথে বাহিনী দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Vivek Dubey CRPF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE