উত্তরবঙ্গের দু’টি জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়ির কাছে উত্তরকন্যায়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
বংশানুক্রমে তফসিলি জাতি, জনজাতির শংসাপত্র পেয়ে আসছেন? তা হলে আর কাগজ দেখাতে হবে না— মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এই মর্মে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পাশাপাশি যাবতীয় অভিযোগের সুরাহা দ্রুত করার ব্যাপারেও নির্দেশ দিলেন প্রশাসনকে। বললেন, ‘‘অভিযোগের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে।’’
গত বছর লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গ খালি হাতে ফিরিয়েছিল তৃণমূলকে। সেই কথা মাথায় রেখেই এ দিনের বৈঠকে মমতা এমন কিছু বার্তা দিলেন, যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির রাজনীতির পাল্টা, মনে করছেন সংশ্লিষ্ট রাজনীতির লোকজনেরা। তফসিলি জাতি, জনজাতি, পিছড়ে বর্গ বা উদ্বাস্তু— সব ক্ষেত্রে বাবা-ঠাকুরদার শংসাপত্র থাকলে যে পরের প্রজন্মকে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করতে হবে না, সেটা আগেই জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টিকে আর একবার সামনে নিয়ে এসে বলেন, ‘‘কোনও কাগজ দেখাতে হবে না। নিজেই নিজের অ্যাটেশটেশন করতে পারবেন।’’ একই ভাবে তিনি যাবতীয় অভিযোগের সুরাহার ক্ষেত্রেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন প্রশাসনকে। এ দিনের বৈঠক ছিল মূলত আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলাকে নিয়ে। এই দুই জেলায় কোন ক্ষেত্রে কত অভিযোগের এখনও সুরাহা হয়নি, তার তালিকা তুলে ধরে তিনি কিছু ক্ষেত্রে ধমকও দেন। বৈঠকের পরে প্রশাসনের কয়েক জন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী লাল ফিতের ফাঁস খুলে কাজে গতি আনতে চাইছেন, যাতে লোকের কাছে সহজে সরকারি সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যায়।’’
এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কাজের তালিকাও তুলে ধরেন। একই সঙ্গে এ-ও জানান, কাজ না করে গোলমাল, হাঙ্গামা বাধালে সেটাই বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। উত্তর দিনাজপুর ও মালদহের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সব নিয়ে মিথ্যে প্রচার করছে। কিছু ঘটল না, অথচ প্রচার হয়ে গেল।’’ এর মোকাবিলায় ব্লকে ব্লকে পুলিশি ব্যবস্থাকে নজরদারির কাজে আরও বেশি করে লাগানো এবং সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করার উপরে জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পরে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিজেপির দুই অস্ত্রের মোকাবিলায় দু’রকম কৌশল নিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। এক দিকে প্রশাসনের মাধ্যমে মানুষের সব ক্ষোভ দূর করা, অন্য দিকে ভুয়ো প্রচার হলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা।’’
আরও পড়ুন: সিদ্ধান্তহীনতা বর্জনের পরামর্শ রাজীব সিংহের
বিজেপি অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের উদ্যোগকে কটাক্ষ করেছে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘একে বলে মরণকালে রাম নাম! বিধানসভায় বহু বার তৃণমূল-সহ সব দলের বিধায়কই অভিযোগ করেছেন, তফসিলি জাতি, জনজাতির শংসাপত্র পেতে মানুষের কী হয়রানি হয়। তখন মুখ্যমন্ত্রী কোনও ব্যবস্থা নেননি। এখন ভোটের আগে লোককে দরদ দেখাচ্ছেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy