Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
State News

আমপান: রাজ্যকে ১ হাজার কোটি টাকা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি মোদীর

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে একটি কেন্দ্রীয় দলকেও রাজ্যে পাঠানো হবে। জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বসিরহাটের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

বসিরহাটের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ১১:৩৬
Share: Save:

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমপান (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন)-এ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাজ্যকে ১ হাজার কোটি টাকা অর্থসাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য করা হবে। পাশাপাশি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে একটি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলও রাজ্যে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

আমপান-এ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে আজ, শুক্রবার সকালে রাজ্যে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যের বিধ্বস্ত জেলাগুলির পরিস্থিতি আকাশপথে পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। এর পর বসিরহাটে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে করতে সেখানে পৌঁছন মোদী। সেখানে ধনখড় এবং মমতাকে সঙ্গে নিয়ে আমপানের জেরে জেলায় ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করেন তিনি। বৈঠকের পর ওড়িশায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রী।

এ দিন সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ কলকাতায় নামে প্রধানমন্ত্রীর বিমান। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ দলীয় নেতা-নেত্রীরাও।

বসিরহাটে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শন শুরুর আগে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এ দিন আকাশপথে রাজারহাট, গোসাবা, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি এবং হিঙ্গলগঞ্জ পরিদর্শন করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এর পর বিমানবন্দর থেকে বসিরহাটের উদ্দেশে রওনা দেয় প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার।

এক নজরে মোদীর সফর:

• রাজ্য সরকার করোনা এবং ঘূর্ণিঝড়, এই দুইয়ের বিরুদ্ধে লড়ছে।

• ঘূর্ণিঝড়ের বিরুদ্ধে লড়তে হলে নিজের এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।

• করোনায় লড়তে হলে যে যেখানে রয়েছেন, সেখানেই থাকতে হবে।

• করোনাভাইরাসে লড়ার মন্ত্র এবং ঘূর্ণিঝড়ে লড়ার মন্ত্র দুটো পুরোপুরি আলাদা।

• এই সময় রাজনীতি নয়, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলার পাশে দাঁড়াবে কেন্দ্র।

• এই সঙ্কটে গোটা দেশ বাংলার পাশে রয়েছে। বলেন মোদী।

• বাংলার সব প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকার পাশে রয়েছে। বলেন প্রধানমন্ত্রী।

• প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে অর্থসাহায্য করা হবে।

বসিরহাটে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

• আমপানে আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য।

• আমপানে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে অর্থসাহায্য দেওয়া হবে। জানালেন প্রধানমন্ত্রী।

• রাজ্য সরকারকে এই দুর্যোগে ১ হাজার কোটি টাকার সাহায্য। প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর।

আকাশপথে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

• প্রশাসনিক বৈঠক মোদীর সঙ্গে রয়েছেন রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার আধিকারিকেরা।

• বসিরহাট কলেজে শুরু প্রশাসনিক বৈঠক।

• প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা।

আমপানের জেরে অতিবৃষ্টিতে জলমগ্ন বসিরবাট। ছবি: সিজার মণ্ডল।

• বসিরহাট কলেজের মাঠে নামল প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার।

• বসিরহাটে মোদীর কপ্টার।

আকাশপথে রাজ্যের দুর্গত এলাকা পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর।

• রাজারহাট, গোসাবা, মিনাখাঁ, হাসনাবাদ, কুলতুলি, ডায়মন্ড হারবার, সন্দেশখালি এবং হিঙ্গলগঞ্জ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন মোদীর।

• এ দিনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এলাকা পরিদর্শন করবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, ধর্মেন্দ্র প্রধান, প্রতাপচন্দ্র সারেঙ্গি এবং দেবশ্রী চৌধুরী।

• রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কলকাতা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়,লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপির নেতা-নেত্রীরা।

কলকাতা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, ১৭৩৭ সালের পর এমন দুর্যোগ আর হয়নি। আমপানের তাণ্ডবে রাজ্যে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কলকাতায় ১৯ জন এবং বিভিন্ন জেলায় ৬১ জন মারা গিয়েছেন। এ ছাড়া, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা-সহ রাজ্যের অন্তত ১৩টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাত-আটটি জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবং আরও চার-পাঁচটি জেলা বিপর্যস্ত।

আরও পড়ুন: আমপান তাণ্ডবে রাজ্যে মৃত ৮০, পুনর্গঠনে হাজার কোটি

আরও পড়ুন: আলো-জল নেই, দুর্ভোগ রাজ্যবাসীর​

এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনায় প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর দুপুর ১টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর দুপুর দেড়টা নাগাদ দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছন তিনি। সেখান থেকে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের দিকে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

আমপানে বিধ্বস্ত রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে এমনিতেই আর্থিক সঙ্কট চলছে রাজ্যে। এই আবহে আমপানের জেরে ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইবে মমতা সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE