পুলিশ মৃতকে শিবপুরের কুখ্যাত দুষ্কৃতী মানোয়ার আলি ওরফে গুড্ডু বলে চিহ্নিত করেন। নিজস্ব চিত্র।
হাওড়ার কুখ্যাত ডন রামমূর্তি দেবার ওরফে রামুয়া খুনের দু’দিনের মধ্যেই খুন হয়ে গেল রামুয়ার এক সময়ের বিশ্বস্ত শাগরেদ মানোয়ার।
এখনও ডন খুনের রহস্য ভেদ করতে পারেনি পুলিশ। তার আগেই তার পুরনো সঙ্গী খুন হওয়ায় গোটা হত্যা রহস্যে নতুন মোড় নিল বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
বুধবার সকালে হাওড়ার মল্লিক ফটক এলাকায় এক ট্রলির উপর গলা কাটা একটি দেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর দেওয়া হয় হাওড়া থানায়। প্রথমে এলাকার কেউ মৃত যুবককে শনাক্ত করতে না পারলেও, পরে পুলিশ মৃতকে শিবপুরের কুখ্যাত দুষ্কৃতী মানোয়ার আলি ওরফে গুড্ডু বলে চিহ্নিত করেন।
আরও পড়ুন: কারা মারল? রামুয়া খুনে জটিল হচ্ছে রহস্য
পুলিশ সূত্রে খবর, গুড্ডু এক সময়ে রামুয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল। পরে রামুয়ার সঙ্গে গন্ডগোল হয় গুড্ডুর। রামুয়ার দলের হাতে খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় হাওড়া ছেড়ে পালায় গুড্ডু। সূত্রের খবর, কিছু দিন সে হুগলি শিল্পাঞ্চলের কুখ্যাত ডন রমেশ মাহাতোর দলেও ভিড়েছিল। কিন্তু রামুয়ার ভয়ে সে হাওড়ায় ফিরছিল না।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, রামুয়া খুন হওয়ার পর দিনই গুড্ডুকে পুরনো এলাকা শিবপুরে দেখা গিয়েছিল। বুধবার সকালেই পাওয়া গেল তার গলা কাটা দেহ! তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, রামুয়ার দলবলের হাত থাকতে পারে গোটা ঘটনায়। ডন খুনের পাল্টা জবাব দিতেই খুন করা হয়েছে গুড্ডুকে। যদিও গোয়েন্দাদের অন্য একটি অংশ গোটা ঘটনায় বড় ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত খুঁজে পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: যে হাত রং-তুলি নিয়ে মজে থাকত, সেই হাতে মানুষ খুন করত রামুয়া
ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের এক তদন্তকারী বলেন, “এটা স্পষ্ট রামুয়া খুনে যুক্ত ছিল ওরই খুব বিশ্বস্ত এবং পরিচিত কেউ। কারণ গোটা ঘটনাক্রম যা রামুয়ার স্ত্রী এবং ছেলে বর্ণনা দিয়েছেন তার মধ্যে অনেক ফাঁক আছে।” কারণ, গোটা ঘটনাক্রমে অনেকগুলো প্রশ্ন উঠে আসছে যার উত্তর দিতে পারছেন না রামুয়ার পরিবারের সদস্যরা।
এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, এই কারণেই দু’টি খুনকে আমরা একই সুতোয় বাঁধতে চাইছি। কারণ, রামুয়া খুনের পিছনে গুড্ডুর যোগ থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে শুধু বদলা নিতে হয়তো গুড্ডুকে খুন করা হয়নি। যারা রামুয়াকে খুনের ছক করেছিল, তারাই হয়তো প্রমাণ লোপাট করতে বা নিজেদের আড়ালে রাখতে সরিয়ে দিয়েছে গুড্ডুকে।
তদন্তকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, কাজল, যিনি রামুয়ার সঙ্গে বর্তমানে থাকতেন তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তাঁর মূল বাড়ি সোদপুর এলাকার নাটাগড়ে। কাজলের বিরুদ্ধেও বেশ কয়েকটি তোলাবাজির মামলা রয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার পর কাজলের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে তদন্তকারীদের মধ্যে। সব মিলিয়ে রহস্য আরও গভীর হচ্ছে ডন হত্যা ঘিরে।
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া - পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy