Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Suvendu Adhikari

খেজুরিতে তৃণমূল প্রতীকের সামনে শুরু মিছিল, শুভেন্দুর মুখে ‘বন্দেমাতরম’

শুভেন্দুর মিছিলের যাত্রাপথে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাট-আউটও নজরে এসেছে। যা এই আবহে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে।

কামারদার সভাস্থলের পাশে শুভেন্দুর কাট-আউট— নিজস্ব চিত্র।

কামারদার সভাস্থলের পাশে শুভেন্দুর কাট-আউট— নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খেজুরি শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ১৫:৪৫
Share: Save:

মিছিলে তৃণমূলের কোনও প্রতীক দেখা যায়নি ঠিকই। কিন্তু মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলের সূচনা এবং সমাপ্তিস্থলে চোখে পড়েছে দলের পতাকা এবং ব্যানার। এমনকি, তৃণমূলের খেজুরি বিধানসভা কমিটির তরফে ঝোলানো শুভেন্দুর ছবির একাধিক কাট আউটেও ছিল ‘জোড়া ফুল’। মিছিলের যাত্রাপথে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাট-আউটও নজরে এসেছে। যা এই আবহে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, শুভেন্দুর মুখে শোনা গিয়েছে বন্দেমাতরম স্লোগানও। গত ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’ আয়োজিত শহিদ দিবস সভায় ‘ভারতমাতা জিন্দাবাদ’ ধ্বনি দিয়েছিলেন শুভেন্দু। মঙ্গলবার তাঁর মুখে বন্দেমাতরমের প্রত্যাবর্তন ‘ইঙ্গিতবাহী’ বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।

খেজুরিতে ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই মিছিলে শুভেন্দু তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে কোনও বার্তা দেননি। সেটা দেওয়ার কথাও ছিল না। কামারদার সভায় শুভেন্দু বক্তৃতা করেছেন। কিন্তু সেখানেও তাঁর বক্তব্যে কোনও রাজনৈতিক প্রসঙ্গ আসেনি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করি। এই শান্তি, এই গণতন্ত্র, এই বাক স্বাধীনতা চিরস্থায়ী হোক। আমি ২০১০-এ এসেছিলাম। ২০১১ থেকে ২০১৯-এও এসেছিলাম। আমি আপনাদের পাশে সর্বদা এভাবেই থাকতে চাই।’’

সোমবারই শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের একপ্রস্ত আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনা ‘অমীমাংসিত’ রয়েছে বলেই সূত্রের খবর। কিন্তু মঙ্গলবার তাঁর অনুগামীদের আয়োজিত কর্মসূচিতে দলীয় পতাকা এবং প্রতীকের উপস্থিতি নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই জল্পনা শুরু হয়েছে। নন্দীগ্রাম আন্দোলন পর্বে সিপিএমের ‘গড়’ খেজুরি ২০১০ সালের ২৪ নভেম্বর তৃণমূলের ‘নিয়ন্ত্রণে’ এসেছিল। এক দশক আগেকার সেই ‘পরিবর্তন’ স্মরণে আয়োজিত কর্মসূচিতে মঙ্গলবার খেজুরির বাঁশগোড়া থেকে কামারদা পর্যন্ত মিছিলে হেঁটেছেন শুভেন্দু। সেই মিছিলে অবশ্য ছিল শুধু কালো পতাকা এবং কালো কালিতে লেখা ব্যানার। ব্যানারে লেখা ছিল‘বাংলার মুক্তিসূর্য শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে খেজুরি হার্মাদমুক্ত দিবস’। প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রাম জমি রক্ষা আন্দোলন পর্বে কালো পতাকা নিয়েই লড়াইয়ে সামিল হয়েছিল তৃণমূল-সহ বিরোধীরা।

আরও পড়ুন: সৌগত-শুভেন্দুর ৯০ মিনিট বৈঠকে ম্যাচ অমীমাংসিত, রিপোর্ট নেবেন দিদি

মিছিলের যাত্রাপথে রাস্তার দু’ধারে অবশ্য তৃণমূলের পতাকা চোখে পড়েছে বিস্তর। ছিল শুভেন্দু এবং মমতার ছবি আর দলীয় প্রতীক চিহ্ন আঁকা কাট আউটও। মিছিল শেষে কামারদার সভায় মঞ্চের কোথাও কোনও পতাকা, পোস্টার, ব্যানার লাগানো হয়নি। কিন্তু সভাস্থলের পাশে ছিল শুভেন্দুর একটি পূর্ণাবয়ব কাট-আউট। তাতে তৃণমূলের প্রতীক। সেই সঙ্গে লেখা, ‘কেবলই নয় আমাদের অতিথি, তুমি উন্নয়নের কান্ডারী, তুমি আমাদের সুখদুঃখের সাথী’। নীচে লেখা,‘সৌজন্যে খেজুরি বিধানসভা কমিটি’। কাঁথি মহকুমার খেজুরির ‘অরাজনৈতিক’ মিছিলের সূচনা এবং সমাপ্তিস্থলে দলীয় প্রতীকের উপস্থিতি প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ নেতা রণজিৎ মণ্ডল জানান, মিছিল এবং সভা উপলক্ষে খেজুরির সর্বত্র দলীয় পতাকা, পোস্টার, ব্যানার লাগানো হয়েছে। শুভেন্দুর পাশাপাশি তৃণমূলনেত্রী মমতার ছবি দেওয়া পোস্টারও সাঁটা হয়েছে এলাকায়। রণজিৎ বলেন, ‘‘শুভেন্দু তৃণমূলের নেতা। তাঁর নির্দেশ মতোই সভামঞ্চে বা মিছিলে কোথাও দলীয় ব্যানার বা পতাকা লাগানো হয়নি। তবে এ দিনের কর্মসূচি তৃণমূলেরই দলীয় কর্মসূচি। তাই রাস্তায় নেত্রী এবং নেতার ছবি দিয়ে ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। এতে কোনও সমস্যা নেই।’’

আরও পড়ুন: আন্দামানে নিখুঁত লক্ষ্যভেদ ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের নয়া ‘ভূমি’ সংস্করণের

প্রসঙ্গত, গত ১৯ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে শুভেন্দুর ঘোষিত ‘মেগা শো’-র কোথাও তৃণমূলের প্রতীক চোখে পড়েনি। যদিও শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘আমি এখনও দলের প্রাথমিক সদস্য। রাজ্য মন্ত্রিসভারও সদস্য। দলের নিয়ন্ত্রকরা আমাকে তাড়াননি। আমিও দল ছাড়িনি। মুখ্যমন্ত্রীরও আমায় মন্ত্রিসভা ছাড়তে বলেননি। আমিও ছাড়িনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE