Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নারদের টাকা ‘ভোটের চাঁদা’, মন্তব্য মমতার

নারদ-কাণ্ডে টাকা নেওয়ার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পরে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তরা নির্বাচন কমিশনে নথি জমা দিয়েছিলেন বলে মমতার দাবি।

বক্তা: সংহতি দিবসের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মেয়ো রোডে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

বক্তা: সংহতি দিবসের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মেয়ো রোডে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫২
Share: Save:

ভোটে খরচ করার জন্য দু’এক লাখ টাকা নিয়ে নারদ-অভিযুক্তরা কোনও অন্যায় করেননি বলে বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নারদ-কাণ্ডে তৃণমূলের যে নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়িয়েছে, তাঁরা ভোটের জন্যই ওই টাকা ‘চাঁদা’ হিসেবে নিয়েছিলেন বলে বুধবার দাবি করলেন মমতা। গাঁধী মূর্তির পাদদেশে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংহতি দিবসের মঞ্চে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন তো বলেছে, ২৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভোটে খরচ করা যেতে পারে। ভোটের খরচ কেউ কি আর নিজের পকেট থেকে করে? চাঁদা তুলেই করে। এক লাখ টাকা কেউ যদি জোর করে দিতে চায়, কী করবে? ওঁরা(নারদ অভিযুক্ত) তো আর চায়নি!’’

নারদ-কাণ্ডে টাকা নেওয়ার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পরে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তরা নির্বাচন কমিশনে নথি জমা দিয়েছিলেন বলে মমতার দাবি। এ ব্যাপারে কোনও অসঙ্গতি থাকলে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন, এ প্রশ্ন তুলেই মমতা বলেন, ‘‘সব নথি তো ওরা জমা দিয়েছে। বিষয়টা তো দেখার দায়িত্ব কমিশনের।’’

নারদ-কাণ্ডে কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাবে না বলে আগে একাধিকবার দাবি করেছেন মমতা। তবে প্রতিহিংসাবশত তৃণমূলের নেতাদের জেলবন্দি করে রেখেছে বলে এ দিন ফের অভিযোগ করেন তিনি। তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ তাপস পাল এবং প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রর গ্রেফতারির ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘কোনও অভিযোগ ছিল না। তাও সুদীপদাকে চারমাস জেলে আটকে রেখেছিল। তাপস পালকে জেলে আটকে রেখেছে। মদনকে জেলে আটকে রেখেছিল।’’ জামিনে মুক্ত সুদীপ-মদন এ দিন মঞ্চেও উপস্থিত ছিলেন।

তবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব বলে প্রতিনিয়ত তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ‘চোর’ তকমা দেওয়া হচ্ছে বলে মমতার অভিযোগ। তাঁর দাবি, তিনি ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূলের কর্মী-নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মমতার কথায়, ‘‘এই সরকার স্বচ্ছ। আমার দলে অনেক লোক গ্রেফতার হয়েছে।’’ বাম আমলে এমনকী কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তাদের দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ তোলেন মমতা। এবং সেই অভিযোগের নিশানায় সরাসরি নাম করে মমতা বলেন, ‘‘কৈলাস বিজয়বর্গীয় দুর্নীতির প্রতিবাদের মুখে মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। গ্রেফতার হয়েছিলেন কি?’’

এর জবাবে কৈলাসের পাল্টা হুমকি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পরিবারের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনব। রাজ্যের মন্ত্রিসভার অর্ধেক সদস্য জেলে যাবেন। সেই কাজই আমরা করছি।’’ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা-মন্ত্রীদের নাম ধরে ধরে মমতা বলেন, বিজেপি কী ভাবে তাঁদের জেলে ঢোকানোর ভয় দেখাচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘অভিষেক, সুদীপ’দা, সুব্রতদা’ পার্থ’দা, শুভেন্দু, ববি কথা বললে জেলে ঢুকিয়ে দেবে বলছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাণে মেরে দেবে।’’ কিন্তু সেই হুমকিতে তিনি কোনও ভাবে নতিস্বীকার করবেন না বলে দাবি করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘এ গলা থেকে যতদিন আওয়াজ বেরোবে, ততদিন আওয়াজ বেরোবেই। আমার কণ্ঠরোধ কেউ করতে পারবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE