বিশ্বনাথ পরিয়াল। নিজস্ব চিত্র
আসানসোলে তৃণমূলের সমাবেশ মঞ্চ থেকে বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারির পর বুধবারই দল থেকে ইস্তফা দিতে তৈরি বলে জানিয়ে দিলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পরিয়াল। আসানসোলের গ্রাফাইট কারখানার মেন গেটের সামনে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভা ছিল। সেখানেই আসানসোল পুরসভার প্রশাসক তথা বিধায়ক জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘এটাই হয়তো জেলা সভাপতি হিসেবে আমার শেষ বক্তব্য। বিকেলের মধ্যেই যদি জেলা সভাপতির পদ ছাড়তে হয়, তবে আমার দু’মিনিট সময় লাগবে না। আমি ছেড়ে দেব।’’ সেই মঞ্চেই বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘দল বললে সন্ধের মধ্যেই আমি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিতে তৈরি!’’
তাঁকে ঠিকমতো কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে কিছু দিন ধরেই প্রকাশ্যে সরব বিশ্বনাথ। বুধবার জিতেন্দ্রর বক্তৃতা শেষ হতেই বলতে শুরু করেন তিনি। জিতেন্দ্রকে শুক্রবার পর্যন্ত দলের সভা করতে নিষেধ করার বিরোধিতা দিয়েই শুরু করেন তাঁর বক্তব্য। বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘সত্যিটা যদি সামনে চলে আসে, তা হলে তো মুশকিল! সুতরাং, সভা করতে দেওয়া যাবে না। ওকে আটকে রাখো! পিছন থেকে ধরে রাখো! আরে মশাই, কতদিন ধরে বেঁধে রাখবেন?’
তৃণমূল ‘মূর্খ কালিদাসের মতো’ কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন বিশ্বনাথ। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের উপরে তিনি যে ক্ষুব্ধ, তা বুঝিয়ে দিয়ে এই বিধায়ক বলেন, ‘‘বেঁধে রাখতে গিয়ে আপনাদের অবস্থা কেমন হয়েছে জানেন? মূর্খ কালিদাসের মতো। যে ডালে বসে আছেন, প্রকারান্তরে সেই ডালই কাটার চেষ্টা করছেন। এতে বিশ্বনাথ পরিয়ালের ক্ষতি হচ্ছে কি না জানি না। কিন্তু আপনাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। দল আছে। আপনারা আছেন। চেয়ারে আছেন। দল কালকে থাকবে না। আপনারাও থাকবেন না। আপনাদের মন্ত্রিত্বও থাকবে না। বিধায়ক পদও থাকবে না।’’
আরও পড়ুন: ভয় দেখিয়ে আর আমাকে আটকে রাখা যাবে না, বিস্ফোরক জিতেন্দ্র তিওয়ারি
প্রসঙ্গত, বিশ্বনাথ ২০১৬ সালে দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন কংগ্রেসের টিকিটে। বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের পুরভোটের আগে তিনি দল বদলে তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু বিধানসভার নথিতে তিনি এখনও কংগ্রেসেরই বিধায়ক।
আরও পড়ুন: পোস্টারে, ফেসবুকে শীল-সুনীল কি শুভেন্দু-পথের পথিক, দ্রুত বাড়ছে জল্পনা1
দলের প্রতি ক্ষোভ থাকলেও তিনি এখনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অনুগত’ বলেই দাবি করেছেন বিশ্বনাথ। বলেছেন, ‘‘মমতার চারপাশে যাঁরা ঘোরাঘুরি করছেন, তাঁরা দলের ক্ষতি করছেন।’’ তিনি দলনেত্রী মমতাকে অনেক আগেই বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি করে বিশ্বনাথ মমতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনি দলের রাশ টেনে ধরুন। তা না হলে দলকে বাঁচানো যাবে না। আপনার দলের নেতৃত্ব দলটাকে শেষ করতে চাইছেন। আপনার সঙ্গে থেকে আপনাকে পিছন থেকে মিরজাফরের মতো ছুরি মারতে চাইছে।’’ একই সঙ্গে বিশ্বনাথ প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘আপনি বললে আজ (বুধবার) সন্ধের মধ্যে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেব। আমাদের কিছু প্রয়োজন নেই। আমরা আপনার সঙ্গে থাকতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy