রবিবারের কেনাকাটা। বনগাঁ বাজারে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
গত কয়েক দিন পুজোর বাজারে কার্যত ভিড় ছিল না। আর জি কর-কাণ্ডের জেরে প্রতিবাদের আবহ এখনও রয়েছে। সেই কারণে পুজোর আড়ম্বর কমেছে অনেক জায়গাতেই। পাশাপাশি, টানা বৃষ্টির ফলেও অনেকেই কেনাকাটা করতে বেরোচ্ছিলেন না। সেই ছবি অনেকটা বদলেছে রবিবার। আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় দুই জেলার বিভিন্ন বাজারে এ দিন ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়েছে। তবে, পুজোর আগে এই সময় যেমন কেনাকাটা হওয়ার কথা, তেমনটা এখনও হয়নি বলে খেদ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীদের অনেকের। তাঁরা তাকিয়ে আছেন সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার অপেক্ষায়।
দক্ষিণে বারুইপুর, ক্যানিং, কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার মহকুমার বিভিন্ন বাজারেই এ দিন ক্রেতাদের ভিড় ছিল। ক্যানিং বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী সুনন্দন সাহা বলেন, “গত কয়েক দিন সে ভাবে ক্রেতার দেখাই মেলেনি। এ দিন তবু কিছু মানুষ কেনাকাটা করেছেন। তবে, অন্যান্য বছরের মতো হচ্ছে না।” বাসন্তীর বস্ত্র ব্যবসায়ী মাধব দেবনাথের খেদ, “আজ বাজার একটু উঠেছে। কিন্তু যে পরিমাণ মালপত্র মজুত করেছি, সে রকম ব্যবসা কই? এ বার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে মনে হচ্ছে।”
বিকেল গড়াতেই কাকদ্বীপ, সাগরের বাজারগুলিতেও ভিড় হয়। বর্তমান পরিস্থিতির পাশাপাশি গ্রামে একশো দিনের কাজ বন্ধ থাকায় এ বছরও পুজোর বাজার জমবে না বলে আশঙ্কা ছিল সাগর, কাকদ্বীপ, নামখানা এলাকার ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এ দিন কেনাকাটায় তার প্রভাব পড়েনি বলেই জানালেন তাঁরা। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, জামাকাপড়ের বিক্রি বেড়েছে। এ বার গতবারের চেয়ে ভাল ইলিশ মিলেছে। ফলে, মৎস্যজীবীদের মধ্যেও কেনাকাটার প্রবণতা বেড়েছে।
ডায়মন্ড হারবারে শপিং মলগুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ছোট দোকানদারদের দাবি, গত কয়েক দিনের থেকে ভিড় বাড়লেও প্রত্যাশিত বিক্রি হয়নি। অভিযোগ, শপিং মলের জেরেই মার খাচ্ছেন তাঁরা। শপিং মলের জেরে ব্যবসা মার খাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বারাসতের ছোট বস্ত্র ব্যবসায়ীরাও।
বারাসতের ডাকবাংলো, চাঁপাডালি, হেলাবটতলা ও হরিতলায় ছোট-বড় মিলিয়ে পোশাক, জুতো, প্রসাধনী সামগ্রীর হাজার খানেক দোকান আছে। শেঠপুকুর এবং রথতলার কাছে আছে বেশ কিছু ছোট-বড় মল। এ দিন সকাল থেকে সব জায়গাতেই কেনাকাটার ভিড় জমে। দেগঙ্গা এবং আমডাঙা ছাড়াও হাবড়া, অশোকনগর, হাড়োয়া এমনকি বসিরহাট থেকেও ক্রেতারা কেনাকাটা করতে বারাসতে আসেন। তবে, মলগুলিতে ভিড় বেশি ছিল। আমডাঙার পোশাক বিক্রেতা সঞ্জয় বিশ্বাস, দত্তপুকুরের ব্যবসায়ী পলাশ দাসরা জানান, এই মরসুমে এ দিনই সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে বনগাঁ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বহু মানুষ জলবন্দি। তবে তার মধ্যেও এখানে পুজোর বাজার ধীরে ধীরে জমে উঠছে। বনগাঁ শহরে যশোর রোডের দু’পাশে ছোট-বড় পোশাকের দোকানগুলিতে এ দিন ভিড় ছিল। ট বাজার এলাকার পোশাক ব্যবসায়ী বাপন সাহা বলেন, “গত বছর এই সময় যা বিক্রি হয়েছিল, এ বার তার থেকে কিছুটা কম বিক্রি হয়েছে। তবে নতুন করে বৃষ্টি না হলে মনে হয় বাকি ক’দিন ব্যবসা ভাল হবে।”
হিঙ্গলগঞ্জ বাজার কমিটির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, “গত কয়েক দিনের বৃষ্টির জেরে বিক্রি হয়নি। এ দিন বিক্রি বেড়েছে।’’ একই সুরে মিনাখাঁর মালঞ্চ বাজারের পোশাক ব্যবসায়ী ইলতুতমিস সর্দার বলেন, “পুজোর কয়েক দিনই বাকি আছে। আশা করি এই ক’দিন ভাল বিক্রি হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy