আপাতত গোসাবার বন দফতর কার্যালয়ে রাখা হয়েছে বন্দি বাঘটিকে। প্রতীকী চিত্র।
রোজকার মতোই সকালে নদীর চরে গরু-ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন সন্দেশখালির মিঠাখালির বাসিন্দা সোহারাপ কারিগর। হঠাৎই বাঘের গর্জন শুনে চমকে ওঠেন তিনি। লোকালয়ের এত কাছে তো বাঘ আসার কথা নয়। ভাবতে ভাবতে পিছনে ঘুরতেই দেখেন সামনেই দাঁড়িয়ে রয়্যাল বেঙ্গল।
সোহারাপকে দেখেই তেড়ে আসে সে। থাবা বসিয়ে দেয় সোহারাপের হাতে। হাতের কাস্তে নিয়েই কোনওরকমে দক্ষিণরায়কে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন সোহারাপ। সেই সঙ্গে বাঘ বাঘ বলে চিৎকার শুরু করেন। তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। ততক্ষণে অবশ্য পাশের ঝোপে গা ঢাকা দিয়েছে বাঘ। জখম সোহারাপকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত মাস দু’য়েকে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বেশ কয়েকবার লোকালয়ের কাছে বাঘ এসেছে। এবার উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি থানার মণিপুর পঞ্চায়েতের মিঠাখালি এলাকায় বাঘের দেখা মিলল। বিকেলের দিকে বনকর্মীরা
ঘুমপাড়ানি গুলি করে তাকে খাঁচাবন্দি করে।
স্থানীয়দের অনুমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার দিক থেকে চিমটা নদী পেরিয়েই ঢোকে বাঘটি। সকালে সোহারাপ কারিগর নামে বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তিকে জখম করার পর থেকে নদীর কাছে একটি ম্যানগ্রোভের ঝোপেই লুকিয়ে ছিল বাঘটি। স্থানীয়রা লাঠি সোঁটা নিয়ে বাঘ তাড়ানোর চেষ্টা করে। তবে সে নড়েনি।
মাঝে মাঝে হুঙ্কার ছাড়তে শোনা যায়। পরে বন দফতরের লোকজন এসে জায়গাটা জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেন। জোয়ার আসতে নদীতে জল বাড়ে। বাঘটি যেখানে লুকিয়ে ছিল, সেই জায়গাটি ক্রমশ জলের তলায় চলে যায়। বাঘটিও মাথা তুলে ভেসে ওঠে। মাঝে একবার একটি বড় গাছেও উঠে পড়তে দেখা যায় তাকে।
এদিকে এলাকাটি জাল দিয়ে ঘিরে তৈরিই ছিলেন বনকর্মীরা। বাঘটি ভেসে উঠতেই তাকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়তেই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে বাঘটি। জাল গুটিয়ে তাকে ধরে ফেলেন বনকর্মীরা। তারপর খাঁচায় বন্দি করে ফেলা হয়। বন দফতর সূত্রের খবর, আপাতত গোসাবায় বন দফতরের কার্যালয়ে রাতে রাখা হবে তাকে। শারীরিক পরীক্ষার পর তাকে জঙ্গলে ছাড়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy