স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) দীর্ঘ দিনের শূন্যপদ অবশেষে পূরণ করল রাজ্য সরকার। নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরুর আগে নতুন সচিব পেল কমিশন। এসএসসির নতুন সচিব পদে নিয়োগ করা হয়েছে অরুণকুমার রায়কে। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে শিক্ষা দফতর।
নবান্ন সূত্রে খবর, এর আগে এসএসসির সচিব ছিলেন অর্ণব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর পদত্যাগের পর থেকেই এই পদটি খালি পড়ে ছিল। দীর্ঘ দিন এসএসসির সচিব পদে কেউ ছিলেন না। দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কমিশনের উপর চাপ বেড়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই এসএসসিকে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলেছে আদালত। তার আগে ৩১ মে-র মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। সেই আবহেই শূন্যপদ পূরণ করে দেওয়া হল।
আরও পড়ুন:
সরকারের এই পদক্ষেপকে অনেকেই ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন। তবে অনেকের মতে, শূন্যপদ পূরণ করে লাভ হবে না। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এর মাঝে নবান্ন থেকে একজন নতুন সচিব স্কুল সার্ভিস কমিশনে পাঠানো হল। কিন্তু সচিব বসিয়ে কি কোনও লাভ হবে? কারণ, সরকারের মজ্জায় দুর্নীতি রয়েছে। এর মাথা ঠিক না হলে সচিব পরিবর্তন করে কিছু লাভ হবে বলে আমার মনে হয় না।’’ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিজন সরকার আবার বলেন, “যে কোনও শূন্যপদ পূরণ করা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। এই মুহূর্তে এসএসসিতে যে পরিমাণ কাজের চাপ, তাতে পূর্ণ সময়ের সচিব দেওয়া দরকার ছিল। এতে কাজ আরও ভাল ভাবে এগোবে। আদালতে মামলার কাজকর্ম এবং নতুন নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কাজের চাপ সামলাতে নতুন সচিবের প্রয়োজন আছে। শূন্যপদে নিয়োগ নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত।’’
উল্লেখ্য, দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তার ফলে চাকরি গিয়েছে ২৫,৭৩৫ জনের। এই শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা চাকরি ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নতুন করে আদালতে একটি আবেদন করেছিল। তাতে যাঁরা ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ বা ‘দাগি’ (টেন্টেড) নন, তাঁদের আপাতত স্কুলে যেতে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। আদালত সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত জানায়, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই চাকরিহারারা স্কুলে যেতে পারবেন। তবে শুধু শিক্ষকদের ক্ষেত্রেই নির্দেশ প্রযোজ্য হবে।