পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় কুলটির ডুবুরডিহিতে কড়া নজরদারি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের। মঙ্গলবার নিজস্ব চিত্র
অ্যাম্বুল্যান্সে করে ঝাড়খণ্ড থেকে সুস্থ লোকজনকেও নিয়ে আসা হচ্ছে। এমনই কিছু ছবি নজরে এসেছিল গত কয়েক দিনে। তাই, অ্যাম্বুল্যান্সগুলি বিশেষ ভাবে পরীক্ষা করছে পুলিশ। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সীমানা-সংক্রান্ত নির্দেশের পরে মঙ্গলবার থেকে পশ্চিম বর্ধমানের সীমানাগুলি দিয়ে কার্যত মাছি গলার পরিস্থিতি নেই, দাবি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের।
কেন্দ্রীয় সরকার রবিবার সব রাজ্যকে সীমানা ‘সিল’ করার নির্দেশ দেয়। সোমবার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সীমানা দিয়ে অত্যাবশ্যক পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া, আর কেউ যাতে যাতায়াত করতে না পারে, তা নিয়ে কড়া নির্দেশ দেন।
জেলায় কুলটির বরাকর, ডুবুরডিহি, সালানপুর ব্লকের রূপনারায়ণপুর লাগোয়া বিহার রোড, চিত্তরঞ্জন রেল শহরের এক নম্বর রেলগেট এবং বারাবনি ব্লকের রুনাকুড়া ঘাট—এই পাঁচটি এলাকায় পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানা রয়েছে। বরাকর দিয়ে ঝাড়খণ্ডের চিরকুণ্ডা, কুমারডুবি, মুগমা এবং চিত্তরঞ্জনের এক নম্বর গেট দিয়ে ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, মিহিজামের বাসিন্দারা পশ্চিমবঙ্গে যাতায়াত করেন। তবে পাঁচটি সীমানা এই মুহূর্তে ‘সিল’ করা হয়েছে।
কমিশনারেট জানায়, ‘লকডাউন’ ঘোষণার পর থেকেই এই এলাকাগুলিতে প্রতিনিয়ত টহল দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। চলছে ‘নাকা-চেকিং’। পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে, সীমানাগুলি পুরোপুরি ‘সিল’ করা হয়েছে। কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’
মঙ্গলবার থেকে ওই এলাকাগুলিতে পুলিশি তৎপরতা নজরে পড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। রোগীদের নিয়ে যাতায়াত করা গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স, খাবার-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে যাতায়াত করা ট্রাক আটকানো হচ্ছে না। তবে সেগুলিকেও ভাল ভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানায়। বিশেষত, নজর দেওয়া হচ্ছে ‘অ্যাম্বুল্যান্স’গুলিতে। কেন এমনটা? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশকর্তাদের একাংশ জানান, সাধারণ ভাবে ঝাড়খণ্ডের বেশ কিছু এলাকার মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য এই জেলার উপরে নির্ভর করেন। ফলে, লেগেই থাকে অ্যাম্বুল্যান্সের যাতায়াত। কিন্তু এই ‘সুযোগ’-কে কাজে লাগিয়ে গত কয়েক দিন ধরে ঝাড়খণ্ডের কিছু অ্যাম্বুল্যান্স সুস্থ মানুষকে নিয়েও যাতায়াত করছিল বলে পুলিশের একাংশের দাবি। তবে এ দিন থেকে তেমন আর ঘটেনি বলে দাবি পুলিশকর্তাদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই পাঁচটির মধ্যে ডুবুরডিহি সীমানা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। মঙ্গলবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, সীমানার নজরদারির দায়িত্বে রয়েছেন কমিশনারেটের এসিপি শান্তব্রত চন্দ। ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা প্রতিটি যানবাহন খুঁটিয়ে পরীক্ষা হচ্ছে। আটকানো হচ্ছে ভিন্-রাজ্যের পথচারীদেরও। পাশাপাশি, চিত্তরঞ্জনে পুলিশের সঙ্গে সীমানা পাহারা দিচ্ছে আরপিএফ।
করোনা মোকাবিলায় সীমানায় নজরদারি শুরুর পরে থেকেই রেল-শহরের বাসিন্দাদের একাংশ অভিযোগ করছিলেন, স্থানীয়দের একাংশ রেল-শহরের চতুর্দিকের পাঁচিল ভেঙে বেশ কিছু অস্থায়ী রাস্তা বানিয়েছিলেন। এই রাস্তা ব্যবহার করে তাঁরা নিয়মিত ঝাড়খণ্ডে যাচ্ছেন। তবে ‘চিত্তরঞ্জন লোকোমটিভ ওয়ার্কর্স’ (সিএলডব্লিউ) সূত্রে জানা যায়, পাঁচিল সংস্কার করে যাবতীয় অস্থায়ী রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy