Advertisement
E-Paper

সাধু সেজে ঘটে জমা টাকা ‘লুট’ 

মাঝেমধ্যেই বাড়িতে ঘট রাখা শিষ্যদের কাছে রাত কাটাতেন। সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎই এলাকা ছাড়েন তিনি। ফাঁকা ঘট দেখে বোধোদয় হয় ‘শিষ্যদের’ও। পুলিশের দাবি, প্রতারণার মামলা দায়ের হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২০ ০২:৪৮
এই ঘটেই ছিল টাকা। নিজস্ব চিত্র।

এই ঘটেই ছিল টাকা। নিজস্ব চিত্র।

মাস দেড়েক ধরে ফাঁদ পেতেছিলেন তিনি। সাধু সেজে এসে এলাকায় যাগযজ্ঞ করা, শিষ্য তৈরি, জামাকাপড় বিলি করে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করেছিলেন। কয়েকজন শিষ্যের বাড়িতে থাকতেনও। হঠাৎই সংসারের ‘মঙ্গলের’ নামে তাঁদের সঞ্চিত টাকাপয়সা নিয়ে ওই ‘সাধু’ চম্পট দিয়েছেন বলে অভিযোগ।

পূর্বস্থলীর কাষ্ঠশালী এলাকার দাসপাড়ার বাসিন্দা ওই শিষ্যদের দাবি, বাড়ির এক জন, বিশেষত মহিলাদের সংসারের কল্যাণের নামে ঘটে মোটা টাকা জমাতে বলতেন তিনি। সর্প দংশন বা অমঙ্গলের ভয় দেখিয়ে আর কাউকে সে কথা জানাতেও নিষেধ করতেন। মাঝেমধ্যেই বাড়িতে ঘট রাখা শিষ্যদের কাছে রাত কাটাতেন। সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎই এলাকা ছাড়েন তিনি। ফাঁকা ঘট দেখে বোধোদয় হয় ‘শিষ্যদের’ও। পুলিশের দাবি, প্রতারণার মামলা দায়ের হয়েছে। নবদ্বীপের যে মঠের সাধু হিসেবে অভিযুক্ত নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খোঁজ চলছে আসল নাম-ঠিকানারও।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ওই এলাকার বাসিন্দা বিকাশ দাস পূর্বস্থলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, মাস দেড়েক আগে নবদ্বীপের একটি মঠের শম্ভুদাস মহারাজ পরিচয় দিয়ে মাঝবয়সী ওই ব্যক্তি এলাকায় আসেন। প্রথমে জামাকাপড় বিলি করবেন বলে বেশ কিছু পরিবারকে টোকেন দেন তিনি। ধাপে-ধাপে নানা জায়গায় পুজো শুরু করেন। কথাবার্তায় বিশ্বাস করে বেশ কয়েকজন তাঁর শিষ্যত্বও নেন। এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে সংসারের মঙ্গলের উপায় বাতলে দেওয়ার নাম করে থাকতেও শুরু করেন তিনি।

সোমবার বিকাশবাবু বলেন, ‘‘আমি মাদুর বিক্রি করি। লকডাউনে অভাব আরও বেড়েছে। বিনা পয়সায় জামাকাপড় পাব বলে ওঁর কাছ থেকে টোকেন নিয়েছিলাম। কিছু দিন পরে, উনি বাড়িতে আসতে চান। ওঁর পরামর্শে বাড়িতে পুজো করি। আমার স্ত্রী টুকটুকি দাসকে মাটির ঘটে টাকাও রাখতে বলেন উনি।’’ বিকাশবাবুর দাবি, প্রথমে জমা পুঁজি থেকে ১০ হাজার টাকা রেখেছিলেন তাঁরা। পরে ব্যবসার জন্য জমা করা আরও টাকা দেন। অভিযুক্ত তাঁকে না জানিয়ে রোগের ভয় দেখিয়ে টুকটুকিদেবীকে আরও ৪০ হাজার টাকা রাখতে বলেন বলে অভিযোগ। স্বামীকে না জানিয়ে বাপেরবাড়ি থেকে ওই টাকা এনে ঘটে জমা করেন তিনি। তবে ঘট বাড়িতেই আছে দেখে খুব একটা ভাবেননি তাঁরা। অভিযোগ, আচমকা সপ্তাহখানেক আগে থেকে এলাকায় আর ‘সাধু’র দেখা মেলে না। ঘট খুলে তাঁরা দেখেন, টাকাও নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার আর এক বাসিন্দারও অভিযোগ, দু’দফায় বেশ কয়েকহাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন অভিযুক্ত। তিনি বলেন, ‘‘সংসারে মঙ্গল হবে বলে টাকা দিয়েছিলাম। বারবার বলতেন টাকা নেওয়ার কথা পাঁচ কান হলে সর্প দংশনের মুখে পড়তে হবে। ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারিনি। এখন বুঝতে পারছি উনি প্রতারক।’’ পুলিশের অনুমান, এলাকায় একাধিক পরিবার প্রতারণার শিকার হয়েছে। অভিযোগ পেলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে, দাবি পুলিশের।

Purbastholi Saint Fraud
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy