মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে পুলিশমন্ত্রী, সেখানে তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য ক্ষোভ উগরে দিলেন পুলিশের বিরুদ্ধেই! —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের পর এ বার পুলিশকে আক্রমণ করলেন রাজ্যেরই মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। পুলিশকে ‘সাবালক’ হওয়ার বার্তা দিয়ে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘অ্যাকশন না নিলে সাধারণ মানুষ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে।’’
রবিবার পূর্ব বর্ধমানে মেমারির ঝিকরার সভা থেকে সিদ্দিকুল্লা বলেন, ‘‘যে বা যাঁরা মন্ত্রিসভার সদস্য, ক্যাবিনেট মন্ত্রীকে গালমন্দ করছেন, অপদস্থ করছেন, আইনের চোখে তাঁরা অপরাধী। পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করবে... আমি বলে রাখছি।’’ পরক্ষণেই মন্ত্রীর কথায়, ‘‘পুলিশ কী করবে তার ব্যাপার। কিন্তু পুলিশকে বুঝতে হবে কারা ‘অফিশিয়াল দল’। আঁশ আর বাঁশ পাতাকে এক করলে হবে না। মাছের আঁশ ফলে দেওয়া হয়। আর বাঁশ পাতা— তার একটা দায়িত্ব আছে। পুলিশ কি ভাবছে উনিও দল, ইনিও দল? পুলিশ কী নাবালক নাকি! পুলিশকে সাবালক হতে হবে। এ সব ভণ্ডামি আমি শুনব না।’’
এখানেই থামেননি সিদ্দিকুল্লা। বলেন, ‘‘আমার চিন্তা পুলিশকে করতে হবে না। আমি পুলিশকে সম্মান করি। ঘুষ দিই না। পয়সা দিই না।’’
উল্লেখ্য, মেমারি ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি মহম্মদ ইসমাইলের সঙ্গে সিদ্দিকুল্লার রেষারেষি সুবিদিত। মন্ত্রীর অভিযোগ, পুলিশ ওই নেতার হয়ে কাজ করছে। তাঁর কথায়, ‘‘বাবু দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছে। কিন্তু পুলিশ দক্ষ প্রশাসকের ভূমিকা পালন করুক। আমি পুলিশের সঙ্গে বসি। কিন্তু ফিসফিস করি না। পুলিশকে তেল লাগাতে যাই না। যাদের পয়সা আছে, তারা পুলিশকে তেল দেবে। আমি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আমি পুলিশকে তেল লাগাতে যাব না। প্রয়োজনে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব কিংবা ডিজিকে বলব।’’
রবিবার সন্ধ্যায় যে ঝিকরা গ্রামে সিদ্দিকুল্লা সভা করেন, সেখানেই মহম্মদ ইসমাইলের বাড়ি। সেখান থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে একের পর এক মন্তব্য করেন সিদ্দিকুল্লা। বলেন, ‘‘আমি এসপিকে তেল লাগাতে যাব না। এসপি আমার গুরুদেব নন। এসপি, ডিএসপি দেখানো হচ্ছে! আজ লাস্ট ওয়ার্নিং দিয়ে গেলাম পুলিশকে। ওরা কাজ না করলে মেমারি থানার বড়বাবুকে ঘেরাও করে রাখব। থানা থেকে বার হতে দেব না।’’
আগেও সিদ্দিকুল্লার বিভিন্ন মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে তাঁর দল। তবে তাঁর রবিবারের অভিযোগ আরও গুরুতর। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং পুলিশমন্ত্রী, সেখানে তাঁর পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মন্ত্রী। কিছু দিন আগে ব্যারাকপুর পুলিশের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে কামারহাটির বিধায়ক মদনকেও।
সিদ্দিকুল্লার এই মন্তব্যের পর তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘‘আমি তো ওঁর বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। আসলে উনি মানসিক অবসাদে ভুগছেন। তাই এ সব বলছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy