Advertisement
E-Paper

আরজি করের দুর্নীতি মামলায় নতুন মোড়! সন্দীপের বিরুদ্ধে আঙুল তোলা সেই আখতারের নামও জুড়ল সিবিআই চার্জশিটে

সোমবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে চার্জশিট জমা পড়ে। সূত্রের খবর, আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতারের বিরুদ্ধে সেই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তিনি ছাড়াও চার্জশিটে নাম রয়েছে শশীকান্ত চন্দক নামে জনৈকের।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:২৭
CBI files chargesheet against former RG Kar Deputy Superintendent Akhtar Ali

(বাঁ দিকে) সন্দীপ ঘোষ এবং আখতার আলি (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আরজি কর কলেজ এবং হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তিনিই প্রথম দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই আখতার আলির নাম জড়াল এ বার আর্থিক দুর্নীতিতেই। সূত্রের খবর, সোমবার আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই চার্জশিটে নাম রয়েছে আখতারের! শুধু তাঁর একার নয়, আরও এক জনের নাম রয়েছে সিবিআইয়ের চার্জশিটে। তবে চার্জশিট জমা পড়লেও আদালতে এখনও তা গৃহীত হয়নি। সেই প্রক্রিয়া চলছে। সূত্রের খবর, চার্জশিটে নাম থাকা সকলের বিরুদ্ধে ৪৭১ ধারা যুক্ত করার আবেদনও করেছে সিবিআই। সকলের বিরুদ্ধে নথি জাল করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও কোন কোন ধারায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে? সূত্রের খবর, আইপিসি ১২০বি, ৪২০, ৪০৯, ৪৬৭, ৪৬৮ ধারার উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, আর্থিক দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৭ এবং ১৩ ধারাও যুক্ত করা হয়েছে চার্জশিটে। বছর দশেক আগে থেকেই আরজি করে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ আছে সূত্রের খবর।

সোমবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে চার্জশিট জমা পড়ে। সূত্রের খবর, আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতারের বিরুদ্ধে সেই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তিনি ছাড়াও চার্জশিটে নাম রয়েছে শশীকান্ত চন্দক নামে জনৈকের। আগে এই মামলায় সন্দীপ, বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা, আফসার আলি খান, আশিস পাণ্ডের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল সিবিআই। তাঁদের প্রত্যেককেই দুর্নীতির তদন্তে গ্রেফতার করা হয়। তবে চার্জশিটে আখতারের নাম থাকলেও এখনও পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি।

এ ব্যাপারে আখতারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘চার্জশিটের কপি এখনও দেখিনি। গোটা বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়া। এ ব্যাপারে যা দেখার এবং বলার তা আমার আইনজীবীরা দেখবেন এবং করবেন। আমার বিরুদ্ধে কোন কোন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে তা দেখতে হবে। তার পরে আদালতে যাওয়ার কথা চিন্তা করব। আমাকে ভাবতে দিন।’’

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে রাজ্য ভিজিল্যান্স কমিশনকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই হাসপাতালেরই তৎকালীন ডেপুটি সুপার আখতার। ২০২৩ সালে সেই অভিযোগ করা হয়েছিল। পরে আরজি কর থেকে তাঁকে বদলি করে পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে ডেপুটি সুপার (নন-মেডিক্যাল) পদে কিছু দিন কাজ করেন আখতার। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তাঁকে আবার বদলি করে পাঠানো হয় উত্তর দিনাজপুরে। সেখানকার কালিয়াগঞ্জ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। জানা গিয়েছিল সম্প্রতি তিনি নাকি সেই পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দেন। তবে তাঁর সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হয়নি। পরিবর্তে দিন কয়েক আগেই তাঁকে সাসপেন্ড করে স্বাস্থ্য দফতর।

কেন আখতারকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। জানানো হয়, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। সেই তদন্তে পরবর্তী সময়ে আখতারের ভূমিকা উঠে এসেছে। আরজি করের তৎকালীন সহকারী সুপার হিসাবে আখতার হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনাবেচার তদারক করতেন। পরে ডেপুটি সুপার হিসাবে এই সব ব্যাপারে নিজের প্রভাব খাটাতেন। এমনই তথ্য পেয়েছে সিবিআই, দাবি করে স্বাস্থ্য দফতর।

স্বাস্থ্য দফতর আরও জানায়, হাসপাতালের বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনাবেচার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এক সংস্থাকে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে লক্ষাধিক টাকা দাবি করেন আখতার। শুধু তা-ই নয়, ২০২০-২২ সালের মধ্যে আখতারের অ্যাকাউন্টে দু’লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা ঢুকেছে। এ ছাড়া, তাঁর স্ত্রীর অ্যাকাউন্টেও ৫০ হাজার টাকা ঢুকেছিল সেই সময়। পাশাপাশি, নিজের এবং পরিবারের বিমানযাত্রার ক্ষেত্রেও সুবিধা নিয়েছেন আরজি করের তৎকালীন ডেপুটি সুপার। এই সব বিষয় খতিয়ে দেখার পরই তাঁকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্য দফতর। এ বার সেই আখতারের বিরুদ্ধেই আর্থিক দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট দিল সিবিআই।

RG Kar Financial Irregularity chargesheet CBI akhtar ali
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy