Advertisement
E-Paper

নাম? সন্দীপ সাধুখাঁ! বাবার নাম? অমল সাধুখাঁ! শুনেই স্বস্তির হাসিতে ভরে উঠল ইডি আধিকারিকদের মুখ

পঞ্চায়েতকর্মী সন্দীপ সাধুখাঁকে খুঁজতে গিয়ে ব্যবসায়ী সন্দীপ সাধুখাঁর বাড়ি গিয়েছিল ইডি। নানা প্রশ্ন করার পর তাদের ভুল ভাঙে বাবার নাম জিজ্ঞাসা করে। অভিযানে কী পেলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা?

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:১৯
ED raid

‘আসল’ সন্দীপ সাধুখাঁ। —নিজস্ব চিত্র।

১০০ দিনের কাজে ‘দুর্নীতি’র তদন্তে নেমে সন্দীপ সাধুখাঁর নাম পেয়েছে ইডি। তাঁর নাম-ধাম সবই ছিল। কিন্তু হুগলির সন্দীপকে খুঁজতে গিয়েই সকাল সকাল ঠোক্কর খেয়েছে ইডি। চন্দননগরের বদলে ময়নাডাঙার সন্দীপের বাড়িতে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সেই ভুল শুধরে আসল সন্দীপের বাড়ি যেতে যেতে বেলা হয়েছে। এ বার ঠিক জায়গায় তো? নিশ্চিত হতে প্রথমেই সন্দীপের বাবার নাম জানতে চেয়েছে ইডি। কী ভাবে খোঁজ মিলল ‘আসল’ সন্দীপ সাধুখাঁর?

পঞ্চায়েতকর্মী সন্দীপ সাধুখাঁকে খুঁজতে গিয়ে ব্যবসায়ী সন্দীপ সাধুখাঁর বাড়ি পৌঁছেছিল ইডি। নানা প্রশ্ন করার পর তাদের ভুল ভাঙে বাবার নাম জিজ্ঞাসা করে। তাই চন্দননগরের সন্দীপের বাড়িতে পা দিয়ে ইডির প্রথম প্রশ্নই ছিল, ‘‘বাবার নাম কী?’’

ময়নাডাঙার সন্দীপের বাবার নাম শচীন সাধুখাঁ। আর যাঁর বাড়িতে ১০০ দিনের কাজে ‘দুর্নীতি’র তদন্ত করতে ইডি বেরিয়েছে, সেই সন্দীপের বাবার নাম অমল সাধুখাঁ। তাঁরা চন্দননগরের বাসিন্দা। হরিদ্রা পঞ্চায়েতের ওই কর্মীর বাড়িতে পৌঁছে ইডি আধিকারিক প্রথমেই জিজ্ঞাসা করেন সন্দীপ সাধুখাঁর বাবার নাম কী? বাড়িতে সন্দীপ ছিলেন না। ছিলেন তাঁর স্ত্রী মৌসুমী সাধুখাঁ। তিনি শ্বশুরমশাইয়ের নাম বলতেই ইডির দুই আধিকারিকের মুখে হাসি খেলে যায়। ‘অমল সাধুখাঁ’ শোনার পর তাঁরা বুঝতে পারেন এ বার আর ভুল হয়নি। সেই বাড়িতে ঢোকে ইডি।

ইডি যখন বাড়িতে, সন্দীপ তখন ছিলেন তাঁর কর্মস্থল খানাকুলের জগতপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে। ইডি আসার খবর পেয়ে সাইকেল নিয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। তার আগে সন্দীপের স্ত্রী এবং মাকে একপ্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ করে নিয়েছে ইডি। তত ক্ষণে নথির খোঁজে তল্লাশিও শুরু হয়ে গিয়েছে।

২০১৮ সালের পর থেকে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ রাজ্যের বিভিন্ন থানায় তার মধ্যে ধনিয়াখালি থানাতেও একটি অভিযোগ হয়েছে। সেই এফআইআর এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফরমেশন রিপোর্ট বা ইসিআইআর করে তদন্তে নেমেছে ইডি। জেলায় জেলায় পঞ্চায়েতের কর্মী এবং ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সেই অভিযানের অংশ হিসাবে ইডি গিয়েছিল মোট ছয় জায়গায়।

সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল ১০০ দিনের কাজ খতিয়ে দেখতে একাধিক বার বিভিন্ন জেলায় ঘুরে যাওয়ার পর হুগলিতে প্রায় দু’কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ সামনে আসে। কোথাও কাজ না করে টাকা তুলে নেওয়া, ভুয়ো জব কার্ড দেখিয়ে টাকা তোলা, কোথাও ভুয়ো বিল তৈরি করে টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বাঁধ এবং রাস্তা নির্মাণ হয়েছে খাতায়-কলমে অথচ, বাস্তবে তার অস্তিত্ব মেলেনি, এমন অভিযোগও ওঠে। যে হেতু ১০০ দিনের কাজের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন নির্মাণ সহায়করা তাঁরা পঞ্চায়েতের কর্মীও বটে। তাই এই দুর্নীতির তদন্তে তাঁরাই ইডির মুখোমুখি হচ্ছেন। ধনেখালির বেলমুড়ি পঞ্চায়েতে ওই দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসার পর সে জন্য সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি।

সন্দীপের বাবা অমল মারা গিয়েছেন ২০০৮ সালে। তিনি পূর্ব রেলের কর্মী ছিলেন। অবসরের পর বাড়িতে একটি তেলের মিল খুলেছিলেন। যদিও সন্দীপ চাকরি পাওয়ার পর সেই মিল বন্ধ হয়ে যায়। সন্দীপের প্রতিবেশীদের বক্তব্য, পাড়ার সকলের সঙ্গে যুবকের সদ্ভাব রয়েছে। তাঁর বাড়িতে ইডি হানা দেওয়ায় অবাক সেই প্রতিবেশীরা। সন্দীপের কাকা বিমান সাধুখাঁ বলেন, ‘‘ভাইপো এমন কিছু কাজ (দুর্নীতি) করতে পারে বলে আমার মনে হয় না। ইডি ওর বাড়িতে এসেছে বলে আমি এলাম। বাড়িতে ওর স্ত্রী এবং মা রয়েছেন। ইডি আধিকারিকেরা আমার সামনেই ওদের বাড়িতে তল্লাশি করেন। যদিও কিছুই পাননি।’’ অন্য দিকে, সন্দীপ আর কিছুই বলতে চাননি।

ED Raids ED 100 Days Works Hooghly Panchayat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy