পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর প্রথম ধাপ অর্থাৎ এনুমারেশন ফর্ম আপলোডের প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। আগামী মঙ্গলবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। কিন্তু খসড়া তালিকায় নাম রয়েছে কি না, কী ভাবে নিশ্চিত হবেন? এ বার সেই পদ্ধতিই জানাল নির্বাচন কমিশন।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর চলছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিলি ও সংগ্রহ করে তা নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল পোর্টালে আপলোড করছেন বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)-রা। ১৬ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। এনুমারেশন ফর্ম ভরলেও খসড়া তালিকায় নাম থাকবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তায়। তালিকায় কী ভাবে নিজের নাম খুঁজবেন, সেই প্রক্রিয়া নিয়েও ধন্দে অনেকে। সেই আবহে খসড়া তালিকায় নাম রয়েছে কি না, তা সহজে জানার দু’টি পদ্ধতি জানিয়েছে কমিশন। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, খসড়া তালিকায় নাম রয়েছে কি না, তা দু’ভাবে দেখা যাবে। এক, অনলাইন এবং দুই, অফলাইন।
অনলাইন
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট eci.gov.in, সিইও ওয়েস্ট বেঙ্গলের ওয়েবসাইট ceowestbengal.wb.gov.in কিংবা ইসিআই নেট অ্যাপে গিয়ে নিজের নাম এবং এপিক নম্বর দিতে হবে। তাতেই জানা যাবে খসড়া তালিকায় নাম রয়েছে কি না। এ ছাড়া, সংশ্লিষ্ট ভোটারের জেলার তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (ডিইও)-দের ওয়েবসাইটে গিয়েও খসড়া তালিকায় নাম রয়েছে কি না, তা দেখা যাবে।
আরও পড়ুন:
অফলাইন
- রাজ্যের সব বিএলও-কে খসড়া তালিকার হার্ড কপি দেওয়া হবে। ভোটারেরা নিজ নিজ বুথের বিএলও-র কাছে গিয়ে খসড়া তালিকায় নাম রয়েছে কি না, তা যাচাই করতে পারবেন। কমিশন জানিয়েছে, ভোটারদের সুবিধার জন্য খসড়া তালিকা প্রকাশের দিন বিএলও-দের যতটা সম্ভব বুথে গিয়ে বসতে অনুরোধ করা হবে।
- এ ছাড়া, রাজ্যের স্বীকৃত আটটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের হাতেও খসড়া তালিকার সফ্টকপি দেবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর দফতর।
- জেলাস্তর থেকে রাজনৈতিক দলের বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ)-দের হাতে খসড়া ভোটার তালিকার হার্ড কপি দেওয়া হবে। তাঁদের কাছে গিয়েও ভোটারেরা জানতে পারবেন তালিকায় নাম উঠেছে কি না।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, খসড়া তালিকা থেকে কাদের নাম বাদ পড়েছে, তা নিয়েও পৃথক তালিকা প্রকাশ করা হবে। সেই তালিকা সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ এবং দাবি কমিশনে জানানো যাবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। সে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা, বিতর্কের নিষ্পত্তি করা, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে শুনানিতে (হিয়ারিং) ডাকা এবং আলোচনার সাপেক্ষে সন্দেহ দূর করার কাজ ইআরও-রা করবেন ১৬ ডিসেম্বর থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সব শেষে ১৪ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই দেশের সাত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআরের সময়সীমা আবার বৃদ্ধি করেছে নির্বাচন কমিশন। সবচেয়ে বেশি সময় দেওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশকে। তবে সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গকে রাখা হয়নি। অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গে পূর্বের সময়সূচি মেনেই এগোবে এসআইআরের কাজ। কমিশনের যুক্তি, এ রাজ্যে যে ভাবে এসআইআরের কাজ এগিয়েছে, তাতে অতিরিক্ত সময় লাগার কথা নয়। এসআইআরের এর মূল কাজ পশ্চিমবঙ্গে প্রায় শেষ। তা ছাড়া, সামনেই বিধানসভা ভোটও রয়েছে। তাই অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে না। কমিশনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে এ রাজ্যে।