উপড়ে গিয়েছে কয়েকশো বিদ্যুতের খুঁটি। ছিঁড়ে পড়েছে তার। ভেঙেছে গাছ, মাটির বাড়ি। শনিবার রাতে কয়েক মিনিটের কালবৈশাখীর তাণ্ডবে বিপর্যস্ত আরামবাগ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। বিদ্যুৎ দফতর মাঠে নামলেও রবিবার রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি অনেক জায়গাতেই। ঝড়ে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার। জখম তিন জন।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকপিছু ১০-১৫টি মাটির বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক হিসাব মিলেছে। আরামবাগের নবাসনের একটি মাটির পুরনো বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় সেই বাড়িরই বাসিন্দা কমলা ছাতিমের (৬৫)। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন ছেলে অমিত। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এ ছাড়া, আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে একটি বড় গাছ ভেঙে পড়ায় জখম হন দু’জন। তাঁদের ওই হাসপাতালেই ভর্তি করানো হয়। ওই গাছ ভাঙায় একটি গাড়ি চুরমার হয়ে গিয়েছে।
মানুষের ক্ষোভ বেশি বিদ্যুৎ বিপর্যয় নিয়ে। শনিবার রাত সাড়ে ৭টা থেকে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে খানাকুল ২ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত এলাকা। এ ছাড়াও, খানাকুল ১, পুরশুড়া, আরামবাগ ও গোঘাটের দু’টি ব্লকের কিছু অংশেরও একই অবস্থা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ না-থাকায় ভূগর্ভস্থ পানীয় জলের পাম্প চালানো যাচ্ছে না। ফলে, জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আরামবাগের বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ার অনিরুদ্ধ মণ্ডল জানান, ২৫০-র বেশি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে। দু’টি ৩৩ কেভি সাব-স্টেশন রয়েছে আরামবাগের গৌরহাটি এবং খানাকুলে। কিন্তু খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় সাব-স্টেশন দু’টিও সম্পূর্ণ বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)