E-Paper

‘নমামি গঙ্গে’র শ্রমিকদের শৌচকর্ম নদীর পাড় ঘেঁষেই

মাস দেড়েক আগে ত্রিবেণীর কুম্ভমেলায় ভক্ত এবং সাধুদের গঙ্গাপাড়ে শৌচকর্ম সারতে হয় পর্যাপ্ত শৌচাগার না থাকায়। তাতে, দূষণ নিয়ে সরব হন পরিবেশকর্মীরা।

সুদীপ দাস

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৩১
An image of toilets for the labours

গঙ্গার পাশে শ্রমিকদের শৌচাগার। ছবি: তাপস ঘোষ।

ওঁরা গঙ্গা দূষণ রোধে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজের শ্রমিক। শৌচকর্মের জন্য ওঁদের ভরসা গঙ্গার পাড়ই! ফলে, দূষণ ছড়াচ্ছে।

গত এক মাস ধরে হুগলি-চুঁচুড়া শহরে এ ভাবে নদী দূষণে ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষ থেকে পরিবেশকর্মী।

অভিযোগ, মাস দেড়েক আগে ত্রিবেণীর কুম্ভমেলায় ভক্ত এবং সাধুদের গঙ্গাপাড়ে শৌচকর্ম সারতে হয় পর্যাপ্ত শৌচাগার না থাকায়। তাতে, দূষণ নিয়ে সরব হন পরিবেশকর্মীরা। পাশের শহরের সেই ঘটনা থেকে চুঁচুড়া পুরসভা কোনও শিক্ষা নেয়নি বলে অভিযোগ।

পুর পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারীর দাবি, গঙ্গাপাড়ে শ্রমিকদের শৌচকর্মের বিষয়টি তিনি জানেন না। তাঁর বক্তব্য, "ঠিকাদার সংস্থা বা শ্রমিকেরা আমাদের কিছুই জানাননি। তবে, পুরসভাকে না জানিয়েই ১২ নম্বর ওয়ার্ডে গঙ্গার পাড়ে শ্রমিকদের জন্য প্লাস্টিকে ঘেরা শৌচাগার করা হয়েছে। গঙ্গা দূষণের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’

পুরসভাকে না জানিয়ে গঙ্গাপাড়ে প্লাস্টিক ঘেরা শৌচাগার তৈরির কথা মানছে ঠিকাদার সংস্থা। ওই সংস্থার পক্ষে হাবিবুর রহমান বলেন, "অন্য জায়গাতেও এ রকম ব্যবস্থা করি। সকলে যখন নিষেধ করছেন, অন্য ব্যবস্থা করব।"

নিকাশি জল শোধন করে গঙ্গায় ফেলার লক্ষ্যে ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পে হুগলি-চুঁচুড়া পুর এলাকায় মাটি খুঁড়ে তৈরি হচ্ছে চেম্বার। ওই কাজে অন্য জেলা থেকে শ্রমিকেরা এসেছেন। তাঁরা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তামলিপাড়া ঘাটে তাঁবু খাঁটিয়ে থাকছেন। আপাতত ৩৫ জন রয়েছেন। অভিযোগ, প্রথমে শৌচাগার ছিল না। পরে প্লাস্টিকে মোড়া অস্থায়ী শৌচাগার তৈরি করা হয়।

শ্রমিকেরা জানান, একটি শৌচাগারে সকলের হয় না। গঙ্গাপাড়ে যেতেই হয়। মুর্শিদাবাদ থেকে আসা এক শ্রমিকের কথায়, "ভোরের আলো ফোটার আগে গঙ্গাপাড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। খোলা জায়গায় প্রাতঃকৃত্য করা ঠিক নয়, জানি। কিন্তু, কী করব!"

এই শহরে কেন্দ্রের ‘অম্রুত’ প্রকল্পে পানীয় জলের পাইপ লাইন পোঁতার কাজও চলছে। সেই কাজের শ্রমিকেরাও একই রকম সমস্যায় রয়েছেন। এক শ্রমিকের আক্ষেপ, "আমাদর কথা কেউ ভাবে না। খোলা জায়গায় প্রাতঃকৃত্য সারতে হয়।"

কী বলছে প্রশাসন?

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই ধরনের কাজে শ্রমিকদের শৌচাগারের ব্যবস্থা ঠিকাদার সংস্থার দায়িত্ব। সমস্যা হলে স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েতে জানাতে পার সংস্থা। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, দেখব।’’

হুগলি উইমেনস কলেজের জীববিদ্যার বিভাগীয় প্রধান, পরিবেশকর্মী উত্তরণ মজুমদার বলেন, ‘‘এ ভাবে গঙ্গাদূষণ মানা যায় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক পুরসভা।’’ একই বক্তব্য চাঁপাডাঙা রবীন্দ্র মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তথা পরিবেশকর্মী তরুণ মণ্ডলেরও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Namami Gange Programme Toilets Labours

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy