প্রতীকী ছবি।
পুরনো সম্পর্কের জেরে ধুন্ধুমার বাধল জগদ্দল থানার শ্যামনগরে। এক তরুণীর প্রাক্তন প্রেমিককে ছুরি দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠল তাঁর দাদাদের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতের ওই ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় শ্যামনগরের ডানবার কটন মিল লাইনে। দেবরাজ সরকার নামে গুরুতর জখম ওই যুবককে নদিয়ার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
ঘটনার সময়ে এক অভিযুক্তকে তাড়া করে ধরে ফেলে জনতা। গণপিটুনি দিয়ে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাকি দু’জন তখন পালিয়ে যান। সোমবার সকালে তরুণীর দুই দাদাকে এলাকায় দেখতে পেয়ে তাঁদের ধরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের উদ্ধার করতে এসে বাধার মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। পুলিশ জনতার উপরে লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। তাঁদের উদ্ধার করে গ্রেফতার করে পুলিশ।
দেবরাজের মা সীতা সরকার জানান, তাঁর ছেলের সঙ্গে পাড়ার এক তরুণীর সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বাড়ির লোকজন সেই সম্পর্ক মেনে নেননি। তার জেরে দুই পরিবারের মধ্যে একাধিক বার অশান্তিও হয়েছে। ২০১৮ সালে দেবরাজ প্রেমিকাকে নিয়ে দিঘায় তাঁর মামার বাড়িতে পালিয়ে যান। অভিযোগ, তরুণীর বাড়ির লোকেরা তাঁদের ক্রমাগত খুনের হুমকি দেওয়ায় তিনি নিজে গিয়ে দেবরাজদের নিয়ে আসেন। তার পরে দেবরাজকে গুজরাতে কাজে পাঠিয়ে দেন।
সীতা বলেন, “লকডাউনের সময়ে ছেলে ফিরে শ্যামনগরেই একটি মুদিখানার দোকানে কাজ নেয়। সে ফেরার পর থেকেই ওই মেয়ের বাড়ির লোকজন আমাদের ফের হুমকি দিতে শুরু করেন। দেবরাজকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিই, দেবরাজের সঙ্গে ওই মেয়ের আর কোনও সম্পর্কই নেই। এমনকি, অন্য মেয়ের সঙ্গে ওর বিয়েও ঠিক করে ফেলেছিলাম। তার পরেও ওঁরা খালি সন্দেহের বশে আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করল।”
দেবরাজের এক বন্ধু জানান, রবিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ দেবরাজ বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে ওই তরুণীর দুই দাদা রাজা ও ধীরাজ এবং জিৎ পণ্ডিত নামে তাঁদের এক বন্ধু দেবরাজের উপরে চড়াও হন। প্রথমে বন্দুকের বাট দিয়ে দেবরাজকে মারধর করা হয়। তিনি ছিটকে পালাতে চাইলে, তাঁর পেটে পর পর তিন বার ছুরি চালান অভিযুক্তেরা। তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন আশপাশের বাসিন্দারা। তাঁরা তাড়া করে জিৎকে ধরে ফেলে মারধর করেন। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছিল, রাজা এবং ধীরাজকে রাতের মধ্যেই গ্রেফতার করা হবে। সোমবার সকালে তাঁদের এলাকায় দেখেই বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়েরা। তাঁরা দু’জনকে ধরে গণপ্রহার দেন। অভিযুক্তদের উদ্ধার করতে আসা পুলিশের সঙ্গে জনতার ধস্তাধস্তি বেধে যায়। পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। পুলিশ যদিও লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy