ফাইল চিত্র।
রবীন্দ্র সরোবরে রোয়িং করতে নেমে ঝড়-বৃষ্টিতে তলিয়ে মৃত্যু হওয়া দুই কিশোরের এক জনের বাবা গাফিলতির অভিযোগ এনে কলকাতা পুলিশের দ্বারস্থ হলেন। যার ভিত্তিতে লেক ক্লাবের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে নতুন করে তদন্ত শুরু করল লালবাজার। ক্লাবের কর্তারা জানিয়েছেন, তদন্তে পুলিশকে সব রকম সাহায্য করবেন তাঁরা। সেই সঙ্গে সরোবরে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তার জন্য কী কী করণীয়, তা জানিয়ে ক্লাবগুলিকে খসড়া প্রস্তাবও পাঠিয়েছে লালবাজার ও কেএমডিএ।
গত ২১ মে রবীন্দ্র সরোবরে আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার জন্য রোয়িং অনুশীলনে নেমে জলে তলিয়ে মৃত্যু হয় পূষন সাধুখাঁ ও সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায় নামে দুই কিশোরের। তদন্তে নেমে একাধিক গাফিলতির বিষয় সামনে আসে। নিরাপত্তার এই ‘ফাঁক’ বন্ধ করতে সরোবরে রোয়িং অনুশীলন করানো সব ক’টি ক্লাব এবং কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে (কেএমডিএ) নিয়ে বৈঠকে বসে লালবাজার। সেখানে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। লালবাজার এবং কেএমডিএ-র তরফে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর (এসওপি) ক্লাবগুলিকে পাঠানো হবে বলেও সে সময়ে জানানো হয়। তত দিন সরোবরে রোয়িং অনুশীলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লালবাজার এবং কেএমডিএ দিন তিনেক আগে ক্লাবগুলিকে একটি খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, রোয়িং অনুশীলনে ক্লাবগুলিকে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রোয়ার, উদ্ধারকারী নৌকা, ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স রাখতে হবে। খসড়া প্রস্তাবে এক জন নিরাপত্তা আধিকারিককে রাখার কথাও বলা হয়েছে। সে দিন আবহাওয়ার পরিস্থিতি জেনেও কেন জলে নামতে দেওয়া হয়েছিল, বিভিন্ন মহলে সেই প্রশ্ন ওঠে। ক্লাবগুলিকে আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কথাও ওই খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে।
খসড়া হাতে পাওয়ার পরে ক্লাবগুলিও তাদের বক্তব্য জানিয়ে লালবাজারকে চিঠি দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রোয়িং অনুশীলন চলাকালীন ক্লাবগুলির কী কী করণীয়, তা বিস্তারিত জানিয়ে দিনকয়েকের মধ্যেই লালবাজারও চিঠি দেবে বলে সূত্রের খবর। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘আগেই কেএমডিএ এবং ক্লাবকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। রোয়িং সংক্রান্ত নিরাপত্তার ফাঁক বন্ধে কেএমডিএ-কে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী ‘এসওপি’ ক্লাবগুলি হাতে পেয়েছে। প্রয়োজনে ক্লাবগুলির প্রস্তাব নিয়ে আবার কেএমডিএ-র সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’
এ দিকে, ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ এনে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন সৌরদীপের বাবা। তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার। সৌরদীপের বাবা সৌভিক চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘কাউকে দোষারোপ না করে যা গাফিলতি হয়েছে, সেই সমস্ত জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছি। কার দোষ, তা খুঁজে বার করার দায়িত্ব পুলিশের। আমার ছেলের মৃত্যুর যথাযথ তদন্ত হোক, এটাই চাইব।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy