দক্ষিণ দমদম পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে ডেঙ্গির লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী। বিরাম নেই মৃত্যুর ঘটনাতেও। সেই তালিকায় প্রৌঢ় থেকে শুরু করে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, তরুণী বধূ— সকলেই আছেন। মশাবাহিত এই রোগে সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এম টেক-এর এক ছাত্রের। ওই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিলেছে এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা। এ হেন পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার স্কুল-কলেজে নজরদারি ও মশা নিয়ন্ত্রণে জোর বাড়াচ্ছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। পড়ুয়াদের সচেতন করার মাধ্যমে যাতে তাঁদের পরিবারেও সেই বার্তা পৌঁছয়, সেটাই লক্ষ্য পুর প্রশাসনের।
তারই প্রথম ধাপ হিসেবে বুধবার ২৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার দমদম পার্কের একটি স্কুলে অভিযান চলে। উপস্থিত ছিলেন খোদ পুরসভার চেয়ারপার্সন কস্তুরী চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্ত, চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস, স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি বিশ্বজিৎ প্রসাদ প্রমুখ। তাঁরা স্কুল চত্বরে নজরদারির পাশাপাশি ডেঙ্গি প্রতিরোধে কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, সেই বিষয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করেন। পুরসভা জানিয়েছে, এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিয়মিত এমন অভিযান চলবে।
যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেঙ্গি পরিস্থিতি জানাজানি হওয়ার পরে টনক নড়ল পুরসভার? এর আগে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে এক স্কুলপড়ুয়ার। তখন কী করছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ? এ ব্যাপারে পুর প্রশাসনের সাফাই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুরু থেকেই নজর রাখা হচ্ছে। তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পরিস্থিতি যাতে না হয়, সে দিকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে এই পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচশো ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ছ’জনের। এই রোগ নিয়ন্ত্রণে পুর কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে এ দিন পথে নামেন রাজারহাট ও দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেসের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। যশোর রোড থেকে মিছিল করে পুরসভার সামনে হাজির হন কংগ্রেস নেতৃত্ব। পরে তাঁরা চেয়ারপার্সনকে স্মারকলিপি দেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, মশাবাহিত রোগ ছড়াচ্ছে বিদ্যুতের গতিতে। অথচ, পুরপ্রতিনিধিরা তথ্য গোপন করতে ব্যস্ত। তাঁরা জানান, স্মারকলিপিতে নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার, ঝোপ-জঙ্গল নিয়মিত সাফাই, বাড়ি বাড়ি গিয়ে আরও নিবিড় ভাবে তথ্য সংগ্রহের উপরে জোর দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। নেতৃত্বের বক্তব্য, নিজেরা না পারলে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুন পুর কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় গণসংগঠনগুলিকে কাজে লাগানো হোক।
যদিও চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাসের দাবি, কোনও তথ্য গোপন করা হচ্ছে না। বিরোধীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই অভিযোগ আনছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সামাজিক সংগঠনগুলিকে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়া চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy