প্রতীকী ছবি।
উড়ালপুলের অনেক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত বৃষ্টির জল বেরোনোর পাইপলাইন। কোনও কোনও জায়গায় সেগুলির মেরামতির প্রয়োজন, কোথাও আবার সেগুলি বদল করাও দরকার। সেই অনুযায়ী মা উড়ালপুলের বৃষ্টির জল বেরোনোর পাইপলাইন (রেন ওয়াটার পাইপ) সংস্কার করতে চলেছেন কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) কর্তৃপক্ষ।
অবশ্য শুধু বৃষ্টির জল বেরোনোর পাইপলাইনই নয়, আরও একগুচ্ছ ছোটখাটো কাজ সেখানে করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তার মধ্যে উড়ালপুলের দৈনন্দিন সাফাইয়ের কাজ যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে উড়ালপুলের নিরবচ্ছিন্ন আলোর ব্যবস্থা ঠিক রাখার কাজ। ইতিমধ্যে সেই অনুযায়ী সম্ভাব্য আর্থিক বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রায় ১.৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘তবে সব থেকে বেশি অর্থ বরাদ্দ হয়েছে বৃষ্টির জল বেরোনোর পাইপলাইন সংস্কার, দু’বছরের মেয়াদে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ প্রায় এক কোটি টাকা।’’
উড়ালপুলের বৃষ্টির জল বেরোনোর পাইপের উপরে গুরুত্ব দেওয়ার বিশেষ কারণ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট পাইপ থেকে দ্রুত জল বেরিয়ে যাওয়াটা উড়ালপুলের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, জমা জল উড়ালপুলের উপরের অংশের (যা কংক্রিট বা বিটুমিন দিয়ে তৈরি) ক্ষতি করে। কংক্রিট, বিটুমিন— উভয়েরই সঙ্গে জলের সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ। তার উপরে এমনিতেই গাড়ি চলাচলের জন্য রাস্তার মতো উড়ালপুলের উপরিভাগেও ছোটখাটো ফাটল তৈরি হতে শুরু করে। যেখান দিয়ে ভিতরে চুঁইয়ে চুঁইয়ে জল প্রবেশ করে উড়ালপুলের কাঠামোর
স্টিল বা ইস্পাতে মরচে ধরায়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক গোকুল মণ্ডল জানাচ্ছেন, যে কোনও উড়ালপুলেরই দু’টি অংশ থাকে— ডেক স্ল্যাব (উপরের অংশ) এবং পায়ার (যে পিলারের উপরে উপরিভাগ দাঁড়িয়ে থাকে)। জল জমার ফলে মূলত ‘ডেক স্ল্যাব’ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকলেও পায়ারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এখন বৃষ্টির জল
বেরোনোর পাইপকে ‘ডাউন-কামার’ও বলা হয়। অর্থাৎ, যার মাধ্যমে জল নীচে নেমে আসে। গোকুলবাবুর কথায়, ‘‘উড়ালপুলের ক্ষেত্রে এই পাইপগুলির অসম্ভব গুরুত্ব রয়েছে। কারণ জল পাইপ দিয়ে ঠিক
মতো নেমে না গেলে তা উপরিভাগের ফাটল দিয়ে প্রবেশ করে ইস্পাতের কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ফলে উড়ালপুলের সার্বিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy