ফাইল চিত্র।
গত সপ্তাহ জুড়ে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংঘাত ঘটেছে বার বার। শুধু ক্যাম্পাসের ভিতরেই নয়, উত্তেজনা ছড়িয়েছে ক্যাম্পাসের বাইরেও। এমন পরিস্থিতিতে শঙ্কিত সাধারণ পড়ুয়ারা। উদ্বিগ্ন শিক্ষামহল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পড়ুয়া জানাচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাঁরা ভয়ে রয়েছেন।
এমনিতেই প্রেসিডেন্সিতে পড়ুয়ারা হস্টেল বিষয়ক বিভিন্ন দাবিতে দিনের পর দিন আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। এরই মধ্যে মাসখানেক আগে সেখানে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপির ইউনিট তৈরি হয়। তার পর থেকেই বার বার এসএফআই, আইসির সঙ্গে তাদের সংঘাত বাধছে। পোস্টার ছেঁড়া এবং ব্যানার পোড়ানোর পারস্পরিক অভিযোগে সম্প্রতি সেই সংঘাত চরমে পৌঁছয়। গত শুক্রবার টিএমসিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি গেট আটকে দিলে কার্যত এই প্রতিষ্ঠান অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সেই সময়ে ডিরোজ়িও হলের দিকের গেট দিয়ে কিছু ছাত্রছাত্রী কোনও মতে বেরোতে পারেন। পরে রাতের দিকে ছাত্রছাত্রীরা বাড়ি ফেরার সময়ে তাঁদের মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত তাড়া করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, এসএফআই সদস্য দেবনীল পালের বাড়িতে গিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তী চড়াও হয়েছেন, এমন অভিযোগও উঠেছে। যদিও দু’টি অভিযোগই টিএমসিপি অস্বীকার করেছে। এই সব ঘটনার বিরুদ্ধে আজ, সোমবার পড়ুয়াদের তরফে নাগরিক মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্সির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রাক্তনী সংসদও। সংসদের সহ-সভাপতি বিভাস চৌধুরী রবিবার বলেন, ‘‘আমাদের সময়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেওয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকির ঘটনা ঘটত। এখন আবার হুমকির ঘটনা ঘটেছে। এগুলো আবার ঘটুক, তা চাই না।’’ পূর্বতন প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমনিতেই হস্টেল সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলন চলছিল। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক যে সব ঘটনা ঘটছে, তা জেনে সত্যিই মর্মাহত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সিকে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলাম। আজ এই পরিস্থিতি দেখে ব্যথিত।’’
প্রেসিডেন্সির প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক জ়াদ মাহমুদ এ দিন বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সিতে যা চলছে, তাতে সাধারণ পড়ুয়ারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এখন ভর্তির সময়।এমন চলতে থাকলে অভিভাবকেরাও কি প্রেসিডেন্সিতে সন্তানকে ভর্তি করতে চাইবেন?’’
ডিন অব স্টুডেন্টস অরুণ মাইতি অবশ্য জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসের ভিতরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম-নীতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্সি শৃঙ্খলা ও পঠনপাঠনের মানের সঙ্গে কোনও আপস করবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy