ফাইল চিত্র
বস্তির ঘর থেকে জ্বলন্ত অবস্থায় বেরিয়ে আসছেন বছর তেইশের এক গৃহবধূ। ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছেন। বুধবার রাতে ওই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছিলেন বস্তির অন্য বাসিন্দারা। কোনও রকমে আগুন নিভিয়ে ওই মহিলাকে তাঁরাই হাসপাতালে নিয়ে যান।
ঘটনাটি ঘটেছে বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার পার্ক সার্কাসের দু’নম্বর রেলগেট লাগোয়া বস্তিতে। পুলিশ জানায়, বধূর নাম সাকিনা বিবি। সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁর দেহের ৯০ শতাংশের বেশি পুড়ে গিয়েছে। স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগে সাকিনার স্বামী শেখ সাজ্জাদকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সাকিনার দিদি রোকেয়া সর্দার বলেন, ‘‘টাকাপয়সা চেয়ে বোনকে মাঝেমধ্যেই মারধর করত সাজ্জাদ। বুধবার সকালেও বোন এসে বলে, ওকে মারধর করেছে স্বামী। কিন্তু ওর যে এমন পরিণতি হবে ভাবিনি। তা হলে ওকে বাড়ি ফিরতে দিতাম না।’’
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, দু’বছর আগে সাজ্জাদের সঙ্গে বিয়ে হয় সাকিনার। তাঁরা নিঃসন্তান। সাজ্জাদ পেশায় রিকশাচালক। সাকিনাদের এক প্রতিবেশী মোমিমা খাতুন বলেন, ‘‘ওই দম্পতির মধ্যে প্রায়ই বচসা হত। বুধবার রাতেও ওদের ঘর থেকে ঝগড়ার আওয়াজ পাই। তার কিছু ক্ষণ পরেই দেখি, জ্বলন্ত অবস্থায় বেরিয়ে আসছে সাকিনা। হাসপাতালে সাকিনা আমাদের বলেছে, ওর স্বামীই গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’’
ঘটনার পরেই পালানোর চেষ্টা করে সাজ্জাদ। কিন্তু অন্য বাসিন্দারা তাকে আটকে পুলিশে খবর দেন। শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সাকিনাদের বাড়ি তালাবন্ধ। রোকেয়া বলেন, ‘‘চোখের অসুখের জন্য বাবা কাজ করতে পারেন না। মা পার্ক সার্কাসে ফল বিক্রি করেন। কোনও রকমে সংসার চলে। কষ্ট করে বোনের বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই টাকা চেয়ে ওর উপরে অত্যাচার শুরু হয়। সাজ্জাদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy